জমি দখলের উদ্দেশ্যে গৃহবধুর উপর নির্যাতন

rapeউইমেন চ্যাপ্টার ডেস্ক: জমিজমা দখলের উদ্দেশ্যে বাড়ির নারীদের উপর শারীরিক নির্যাতন বাংলাদেশে গ্রামাঞ্চলে নতুন কিছু নয়। কিন্তু ভোলা জেলার দৌলতখান উপজেলার চরপাতা ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান হারেস মোল্লার ছেলে জসিম মোল্লা এক্ষেত্রে যেন একধাপ এগিয়ে।

জমি দখলের লক্ষ্যে ওই ইউনিয়নের একটি গ্রামের গৃহবধুকে দেড় বছর ধরে নির্যাতন করে আসছে জসিম মোল্লা। নানা ছুতোয় ঘরে ঢুকে শরীরে হাত দেওয়াসহ মারধরও করে সে। একবার পিটিয়ে মাথা ফাটিয়ে দিলে মামলা করে ওই গৃহবধুর পরিবার। পরে ভিটেমাটি থেকে উচ্ছেদের হুমকি দিয়ে তাদের চুপ করিয়ে দেওয়া হয়। সেই থেকে ওই গৃহবধুর স্বামীসহ পরিবারের কেউই কোন প্রকারের প্রতিবাদ করার সাহস পাচ্ছে না।

প্রতিবেশিদের দাবি, সম্পত্তি দখলের উদ্দেশ্যেই এমন নির্যাতন করা হচ্ছে। অন্য শরিকের সম্পত্তি কিনে ওই গৃহবধুর ঘরের সামনেই একতালা পাকা বাড়ি করে জসিম। এখন তার লক্ষ্য তাদের এই সম্পত্তিও যেকোন ভাবে দখল করা।

দরিদ্র ওই পরিবারের স্বামী পানের বরজে দিনমজুরের কাজ করে কোনমতে সংসার চালায়। আর এই গ্ররহবধু হোগলার চাটাই তৈরি করে বিক্রি করে সেটিতে সহায়তা করেন।

কান্নাজড়িত কন্ঠে সেদিনের নির্যাতনের কথা বর্ণনা করে তিনি বলেন, ১৩ সেপ্টেম্বর তাঁর স্বামী খুব সকালে কাজে চলে যান। ছেলে ও মেয়ে প্রতিবেশীর বাড়িতে খেলতে চলে যায়। সকাল আটটার দিকে জসিমকে ঘরের পাশে ঘুরঘুর করতে দেখলে দরজা লাগিয়ে দেন তিনি। পরে ছুরি দিয়ে জানালা খুলে ঘরে ঢুকে জসিম তার উপর শারীরিক নির্যাতনের চেষ্টা করলে তিনি চিৎকার করেন। প্রতিবেশিরা এগিয়ে এলে তাকে চড়, কিল, ঘুষি, লাথি মারতে থাকেন জসিম।

ওই ঘটনায় ১৬ সেপ্টেম্বর দৌলতখান থানায় ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগে জসিম ও তাঁর দুই ভাইয়ের বিরুদ্ধে মামলা করেন এই নারী।

মামলার দিন রাতেই দরজায় লাথি মেরে জসিম তাঁকে দেশছাড়া করার হুমকি দেন।

প্রতিবেশীরা জানিয়েছেন, জসিমদের এই কায়দায় জমি দখলের ইতিহাস নতুন নয়। ২০০১ সালের সাধারণ নির্বাচনের নির্যাতনের ফলে তাদের শরিকেরা জমিজমা বিক্রয় করে অন্যত্র চলে যায়।

তারা আশংকা করে বলেন, এভাবে নির্যাতন করলে এই পরিবারটি হয়তো জমি বিক্রি না করেই চলে যেতে বাধ্য হবে।

এদিকে নির্যাতনকারী জসিম পুরো ঘটনাকে অস্বীকার করেছে। তিনি জানান, ওই নারীর সাথে তার ঝগড়া হয়েছে।

পুলিশ আসামীদের ধরার চেষ্টা করছে বলে জানিয়েছে পুলিশ সূত্র।

শেয়ার করুন: