চলচ্চিত্রের নবাবের বিদায়

anowar hossainউইমেন চ্যাপ্টার: পঞ্চাশ বছরের বেশি সময় ধরে বাংলা চলচ্চিত্রের প্রিয়মুখ, পর্দার নবাব আনোয়ার হোসেন আজ আমাদের ছেড়ে আজনায় পাড়ি দিয়েছেন।

বৃহস্পতিবার রাত আড়াইটার সময় স্কয়ার হাসপাতালে তিনি মৃত্যুবরণ করেন।

হাসপাতালে তিনি গত ১৮ আগস্ট থেকে চিকিৎসাধীন ছিলেন। তখন এক সপ্তাহের মধ্যে সুস্থ্ও হয়ে উঠেছিলেন তিনি।

পরে বিভিন্ন পরীক্ষায় তাঁর পিত্তথলিতে পাথর ধরা পড়ে। কিন্তু বিরূপ শারীরিক অবস্থার কারণে অস্ত্রোপচার সম্ভব নয় বলে জানিয়ে দেন চিকিৎসকরা।

বৃহস্পতিবার বিকেলে তাঁকে দেখতে হাসপাতালে যান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ সময় তিনি তাঁর চিকিৎসা সহায়তা হিসেবে ১০ লাখ টাকাও দেন তাঁর পরিবারকে।

স্কুলে পড়ার সময় ১৯৫৮ সালে, ‘তোমার আমার’ চলচ্চিত্রের মধ্য দিয়ে অভিনয়ের হাতেখড়ি হয় আনোয়ার হোসেনের।

এরপর ষাটের দশকে ‘নবাব সিরাজউদ্দৌলা’ ছবির মুখ্য চরিত্রে অভিনয় করার মাধ্যমে তিনি হয়ে উঠেন ‘বাংলার চলচ্চিত্রের নবাব’।

জীবদ্দশায় প্রায় পঞ্চাশ বছরেরও বেশি সময় ধরে অভিনয় করেছেন বহু চলচ্চিত্রে বিভিন্ন চরিত্রে। কিন্তু চলচ্চিত্রের নবাব আখ্যাটা থেকেই যায়।

জহির রায়হানের ‘জীবন থেকে নেয়া’ ছবিতে অভিনয় করেছেন স্বাধীনতাকামী এক সংগ্রামীর ভূমিকায়।

প্রচণ্ড মিশুক স্বভাবের ছিলেন তিনি। তাঁর পরবর্তি প্রজন্মের সাথে সহজেই মিশে যেতে পারতেন। অভিনয় করেছেন বর্তমান সময়ের অভিনেতা শাকিবদের সাথেও।

অভিনয়কে নিজের সবচাইতে আপন করে নিয়েছিলেন তিনি। তাইতো কিছুদিন আগে গত জুন মাসে হুইল চেয়ারে বসে পুরো এফডিসি তিনি ঘুরে আসেন। ওই সময় তিনি অর্ধশতকের নানা স্মৃতিতে আবেগাক্রান্ত হয়ে পড়েন।

তাঁর অভিনয়ই যেন তাঁর মনের কথা বলে। কাঁচের দেয়াল (১৯৬৩), বন্ধন (১৯৬৪), জীবন থেকে নেয়া (১৯৭০), রংবাজ (১৯৭৩), ধীরে বহে মেঘনা (১৯৭৩), রুপালী সৈকতে (১৯৭৭), নয়নমণি (১৯৭৭), নাগর দোলা (১৯৭৮), গোলাপী এখন ট্রেনে (১৯৭৮), সূর্য সংগ্রামের (১৯৭৯) চলচ্চিত্রগুলোর মাঝে প্রজন্মের পর প্রজন্ম তাঁকে দেখবে এক মুকুটিহীন নবাব হিসেবে।

২০১০ সালে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারে আজীবন সম্মাননা পান আনোয়ার হোসেন। এছাড়া বহু পুরস্কার ও সম্মাননায় তিনি ভূষিত হয়েছেন আজীবন।

শেয়ার করুন: