পারিবারিক নির্যাতনের লক্ষণসমূহ শনাক্তকরণ

যে কেউ যেকোনো সময় পারিবারিক নির্যাতনের শিকার হতে পারেন। এমনকি নির্যাতকও হয়ে উঠতে পারেন। এ সমস্যা সমাধানে কাজ করছে এমনই একটি দাতব্য সংস্থা – উইমেন্স এইড। সংস্থাটির টেরেসা পারকার বলছিলেন, পারিবারিক নির্যাতন খুবই সাধারণ একটি ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে। যেকেউ, যেকোনো সময় এর মুখোমুখি হতে পারেন, এক্ষেত্রে বর্ণ বা শ্রেণীগত, গোষ্ঠীগত, ধর্মীয়, শারীরিক বা মানসিক পঙ্গুত্ব অথবা জীবনাচরণের কোনো সম্পর্ক নেই।

আবার পারিবারিক নির্যাতনের যেসব ঘটনা ঘটে, তার এক তৃতীয়াংশই ঘটে মেয়েদের গর্ভাবস্থায়। গর্ভধারণের আগে যদি এই নির্যাতনের শুরু হয়, তবে পরবর্তী নয় মাসে এর ব্যাপকতাই কেবল বাড়ে।
আমি যে এ ধরনের নির্যাতনের শিকার হচ্ছি, কি করে জানতে পারবো?
নিচের প্রশ্নগুলোর একটি বা ততোধিকের উত্তর যদি আপনার ক্ষেত্রে ‘হ্যাঁ’ হয়, তবে বুঝতে হবে যে, আপনি নির্যাতনমূলক সম্পর্কের ভিতর আছেন :
  • আপনার সঙ্গী কি কখনও আপনার বন্ধু বা পরিবারের সাথে দেখা করার ক্ষেত্রে বাধা দিয়েছে?
  • আপনার সঙ্গী কি কখনও আপনাকে পড়ালেখা অব্যাহত রাখতে বা কাজ করতে যেতে বাধা দিয়েছে?
  • আপনার সঙ্গী কি সবসময় আপনার ওপর খবরদারি করে বা অনুসরণ করে?
  • আপনার সঙ্গী কি আপনার বিরুদ্ধে ফ্লার্ট করার বা কারও সঙ্গে সম্পর্ক আছে বলে অভিযোগ এনেছে?
  • আপনার সঙ্গী কি সবসময় আপনাকে খাটো করে কথা বলে? অথবা নিয়মিতভাবে অন্যের সামনে অপমান করে, সমালোচনা করে?
  • আপনি কি কখনও আপনার সঙ্গীর ব্যাপারে আতঙ্কে ভূগেছেন?
  • আপনার সঙ্গী এমন কিছু করতে পারে বা বলতে পারে এই ভয়ে আপনি কি কখনও আপনার আচরণ পরিবর্তন করেছেন?
  • আপনার সঙ্গী কি ইচ্ছাকৃতভাবে আপনার কোন সম্পদ বা প্রিয় কোন জিনিস ধ্বংস বা নষ্ট করে দিয়েছেন?
  • আপনার সঙ্গী কি কখনও আপনাকে বা আপনার শিশুকে হুমকি দিয়েছে বা আঘাত করেছে?
  • আপনার সঙ্গী কি আপনাকে কখনও কম পরিমাণে টাকা দিয়েছে? যাতে করে আপনি খাবার বা অন্যান্য প্রয়োজনীয় কোনকিছু আপনার নিজের বা শিশুর জন্য কিনতে না পারেন?
  • আপনার সঙ্গী কি আপনাকে কখনও এমন কোন কাজ করতে বাধ্য করেছে, যা আপনি কখনও করতে চাননি? এমনকি আপনার মতের বিরুদ্ধে গিয়ে যৌনকাজ করেছে?

এসব প্রশ্নের উত্তর সবগুলো না হোক, কিছু যদিও আপনার জীবনের সাথে মিলে যায়, তাহলে আপনি ধরে নিতে পারেন যে, আপনাদের সম্পর্কটা স্বাভাবিক নেই। এটা একটা নির্যাতনমূলক সম্পর্ক। তবে আপনি নিশ্চিত থাকতে পারেন এই ভেবে যে, অনেকেই আছেন যিনি আপনার এই সময়ে পাশে দাঁড়াবেন, সহায়তা করবেন। আইন ও সালিশ কেন্দ্র, বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ, বাংলাদেশ জাতীয় মহিলা আইনজীবী সমিতিসহ আরও অনেক সংস্থাই কাজ করছে পারিবারিক নির্যাতন বন্ধে। সেখানে যোগাযোগও করা যায় সহজেই।

শেয়ার করুন: