উইমেন চ্যাপ্টার: সেদিনই তার ১৬ বছর পূর্ণ হয়েছে। আর সেদিনই তাকে দেওয়া হয়েছে মন্ত্রিত্বের মতোন গুরুত্বপূর্ণ একটা দায়িত্ব। হোক না মাত্র একদিনের জন্য, আর এর মধ্য দিয়েই তিনি পেয়ে গেছেন বিশ্বের কনিষ্ঠতম মন্ত্রীর উপাধিও।
ফিলিস্তিনি এই কিশোরীর নাম বাশায়ের ওথমান। পশ্চিম তীরে স্থানীয় প্রশাসন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রী এহাব বেসাইসো তার গ্রামে গেলে কিশোরী বাশায়ের একদিনের জন্য সেই দায়িত্ব পালন করেন। তবে দায়িত্ব পালন এটাই প্রথম নয় বাশায়েরের জন্য। ২০১২ সালে তিনি দুমাসের জন্য মেয়রের দায়িত্বও পালন করেছিলেন। তখন তার ছবি প্রকাশ পেলে বেশ হৈ চৈও পড়ে যায়।
স্প্যানিশ পত্রিকা এবিসি পত্রিকা জানায়, এটা বাশায়েরেরই আইডিয়া ছিল। একদিন মন্ত্রী বেসাইসো তার শহরে গেলে তিনি নিজে থেকেই এরকম ইচ্ছার কথা জানিয়েছিলেন, আর বেসাইসো জানতেন বাশায়েরের মেয়র হওয়ার কথা। তিনিই বেসাইসোকে বলেছিলেন যে, তরুণরা জানে, বিশ্বের অসম্ভব বলে কিছু নেই। তাছাড়া আন্তর্জাতিক যুব দিবস উদযাপন উপলক্ষে ফিলিস্তিনি অঞ্চলে রাজনৈতিক এজেন্ডায় তরুণদের সম্পৃক্ত করা খুবই ভাল একটা আইডিয়া।
কিশোরী বাশায়ের একদিনের জন্য হলেও ফিলিস্তিন এবং পশ্চিম তীরের জনগণের জন্য সিদ্ধান্ত নেওয়া এবং সেইসাথে তরুণদের কথা বলার একটা জায়গা করে দেওয়ার প্রক্রিয়ায় অংশ নিতে চেয়েছিলেন।
মাত্র একদিনের দায়িত্ব নিয়েই তিনি তরুণদের জন্য একটি কাউন্সিল গঠনের প্রক্রিয়া শুরু করেন, যারা নীতি প্রণয়নে প্রভাব ফেলবে।
বাশায়ের স্বপ্ন দেখেন, উন্নত শিক্ষার লক্ষ্যে তার এই প্রস্তাবের একটা মূল্য অবশ্যই আছে রাজনীতিতে। তিনি আরও বলেন, একদিনের জন্য ক্ষমতা পাওয়ার স্বপ্নটা তার আজকের উদ্দেশ্য, তবে ভবিষ্যতের নয়।
বাশায়ের জানান, তার আরও একটা লক্ষ্য ছিল এর পিছনে। তা হলো, আল বিরা শহরে ল্যান্ডফিলটা খুলে দেওয়ার ব্যাপারে জাতিসংঘ যেন হস্তক্ষেপ করে। এটা ইসরায়েল বন্ধ করে দেওয়ায় স্থানীয়রা তাদের ময়লা-আবর্জনা বাড়ির সামনেই পোড়াতে বাধ্য হয়, এটা অসহ্য এবং পরিবেশের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর। ইসরায়েল যেন ল্যান্ডফিল খুলে দেয়, সেজন্য জাতিসংঘের সাহায্য চান বাশায়ের।
জানা গেছে, এর আগে দুমাস মেয়রের দায়িত্ব পালনের সময় বাশায়ের তরুণদের ক্ষমতায়নের লক্ষ্যে একটি গ্রীষ্মকালীন প্রোগ্রামে অংশ নিয়েছিলেন। এতে তিনি আর্থিক বিষয়টি ছাড়া মোটামুটি সব বিষয়েই বেশ ভালভাবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন, এর মধ্যে চাকরির নিয়োগপত্রে সই করা যেমন ছিল, তেমনি অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্রেও তিনি সই করেন। তিনি তখন নির্বাচিত মেয়র সুফিয়ান শাদিদের তত্ত্বাবধানে কাজ করেছিলেন। এ ব্যাপারে সুফিয়ানের মন্তব্য ছিল, বাশায়েরের এই নতুন দায়িত্ব সব নারীকেই রাজনীতিতে সক্রিয় অংশ নিতে উৎসাহিত করবে বলেই তার ধারণা।