চুপ থাকলেই সম্পর্কে ব্যালেন্স আসে না

দিনা ফেরদৌস:

প্রায়ই শোনা যায় যে পুরুষদের জীবন ত্যানা ত্যানা হয়ে হয়ে যায় সংসারে মা আর বউকে ব্যালেন্স করে চলতে গিয়ে। বিয়ের পর শুরু হয় পুরুষদের অগ্নিপরীক্ষা। একদিকে বউয়ের অধিকার, অন্যদিকে মায়ের অধিকার। এটা একজন পুরুষের জন্যে সত্যিই কঠিন অবস্থা। কিন্তু তার চেয়েও কঠিন অবস্থা সেই মানুষটার, যে এই পরিবারের রক্তের সম্পর্কের কেউ না, একটা কাগজের উপর ভিত্তি করে হুট করে কিছু নতুন মানুষদের সাথে সম্পর্ক তৈরি করে নিতে হচ্ছে যাকে। যেই পরিবারের লোকজন সম্পর্কে তার কোন ধারণাই নেই, আত্মীয়য়স্বজন সকলেই নতুন, নতুন ঘর, নতুন পারিবারিক নিয়ম। সেখানে অনেকে ধরেই নেন মানিয়ে নেয়ার দায়িত্ব ওই নতুন মানুষটার একার। সারা গোষ্ঠী একজোট হয়ে একসাথে নিজের ঘরে থেকেও একজন মানুষের সাথে মানিয়ে নেবার দায়িত্ব নিতে যেখানে হিমশিম খান, সেখানে একটা নতুন মানুষের উপর এই কঠিন দায়িত্ব চাপিয়ে দিয়ে কী প্রমাণ করতে চান, তা আমার বোধগম্য হয় না।

সেদিনও কেউ একজনের স্ট্যাটাসে দেখলাম “মেয়েরা কেন যে শাশুড়িকে নিজের মায়ের মত ভাবতে পারে না। এখনকার মেয়েগুলো বড়ই বদ, একা খেতে চায়, একা থাকতে চায়, পরিবার নিয়ে থাকতে জানে না”।

একা, দোকা খাওয়ার কথায় পরে আসছি। একটু চিন্তা করে দেখেন, শাশুড়ি কি ১০মাস পেটে রেখে ছেলের বউকে জন্ম দিয়েছেন? তিলে তিলে বড় করে তুলেছেন? ভুল বা দোষ ত্রুটি দেখলে কি কখনও লুকিয়ে রাখার চেষ্টা করেছেন? এইখানে যদি কোন মেয়ের মায়ের ছেলে সন্তান নাও থাকে, তারপরও চান মেয়ে তার বরের সাথে সুখে সংসার করুক। দেখার কেউ না থাকলেও নিজের মতো করে একা থাকেন বহু মেয়ের মা-বাবাই (নায়ক রিয়াজের শ্বশুরের উদাহরণ ছাড়াও আরও বহু উদাহরণ আছে এই সমাজে)। অথচ প্রতিটা সন্তানের উচিত তার মা-বাবার সেবা করা। কয়জন মেয়ে সন্তান করতে পারছে বিয়ের পর নিজের মা-বাবার সেবাযত্ন?

একটু ভেবে দেখুন এক তরফা দায়িত্বের বোঝা চাপিয়ে না দিয়ে। আর একদিকে শাশুড়ি পেলেন ২০/২৫ বছর বয়সে রেডিমেড একটা মেয়ে। এনেই মনে করেন ঘরের সব দায়িত্ব দিয়ে কাজের মানুষ হিসেবে গড়ে তুলবেন। এইদিকে মানুষ বিছানায় শুয়ে বসে ছবি, ভিডিও দিয়ে বলে বাপের বাড়ি আসলাম, আরাম করি। তার মানে আরামের জায়গা হচ্ছে নিজের মায়ের কাছে যা শ্বশুর বাড়িতে সম্ভব না।

বেশ কিছুকাল আগে একটা নিউজ ভাইরাল হয়েছিল, তিন ভাই তাদের তিন বউকে ডিভোর্স দিয়ে দিয়েছেন, শুধুমাত্র শাশুড়ির সেবা করে না বলে। মানে সেই তিন ভাই নিজের মায়ের সেবা করার জন্যে আয়া নিয়ে এসেছিলেন, বউ না। যেই মায়ের সেবার জন্যে তিনজন মানুষ লাগে প্রতিদিন, তিন ছেলের মধ্যে একজনও কি সেই দায়িত্ব নিতে পারলেন না? অথবা তিনভাই মিলে একজন আয়া রাখার কথাও চিন্তা করলেন না কিছু পয়সা খরচ করে? মায়ের থেকে টাকা বেশি দামি হয়ে গেলো? অন্যদিকে বিনা খরচে বউদের দিয়ে চেয়েছিলেন আয়ার কাজটা করিয়ে নিতে!

সহজ সমাধান পেলেন তিন ভাই, বউদের ডিভোর্স দিয়ে টাকাও খরচ হলো না, অন্যদিকে পুরুষতান্ত্রিক সমাজ থেকে বাহবাও পেলেন। সেই শাশুড়ি যদি কখনও তিন বউকে নিজের মেয়ের জায়গায় দেখতেন, তো মেয়ের ডিভোর্স নিশ্চয়ই কোন মা চাওয়ার কথা নয়…। আশা করি আগামীতে শাশুড়িকে কেন ছেলে বউয়েরা নিজের মায়ের জায়গায় দেখে না এই রকম উদ্ভট প্রশ্ন করতে মানুষ আরেকবার ভাববে।

সহজ কথা একটা হচ্ছে কাগজের সম্পর্ক, অন্যটি হচ্ছে নাড়ীর সম্পর্ক। স্বামীর সাথে বিচ্ছেদের সাথে সাথেই ওই সম্পর্ক ওখানেই খতম। সেই জায়গায় মায়ের সাথে শাশুড়িদের তুলনাই বা হয় কীভাবে? শ্বশুর- শাশুড়ি বরের মা-বাবা, তারা বয়োজ্যেষ্ঠ ব্যক্তি, তাদেরকে সম্মান করা উচিত। আর ভালোবাসা পেলে ভালোবাসা দেয় না এমন মানুষ খুবই কম আছে এই পৃথিবীতে।

শ্বশুরবাড়ি নিয়ে একসময় ধারণা ছিল যে, পয়সাওয়ালা ঘরের মেয়েরাই শ্বশুর বাড়িতে সবচেয়ে আরামে থাকে দামী দামী উপহার নিয়ে যায় বলে। কিছুদিন আগে সেই ধারণা ভেঙে গিয়েছে। আজ থেকে আট বছর আগে আমার এক বড়লোক বান্ধবীর বিয়ে হয় মহা ধুমধামে। বিয়ের পর তার সাথে আর যোগাযোগ হয়নি। পরিচিত একজনের কাছে শুনলাম সে অনেক পাল্টে গিয়েছে, আগের মতো সেই নরম স্বভাবের মেয়ে আর নেই, এখন সম্পূর্ণ বিপরীত সে। এরমধ্যে সেই বান্ধবীর সাথে আমার যোগাযোগ হয় তার বাবা মারা যাওয়ায়। সে তার বাবার কথা বলতে বলতে কান্নায় ভেঙে পড়লো। বললো, বিয়ের পর থেকেই তার উপর এতো নির্যাতন শুরু হয়েছিল, তাকে ঘরের মধ্যে সব সময় শাড়ি পরে থাকতে হতো, সালোয়ার কামিজ পরা ওই বাসায় হারাম কাজের মতো। স্বামীর সাথে বসে জীবনে এক টেবিলে ভাত খাওয়ার অধিকার তার ছিল না। এমনকি যৌথ পরিবারে দরজা লাগিয়ে রাখার নিয়মও ছিল না তার। রাত্রে সবাই যার যার রুমে গেলেই যখন সে রান্নার ঘরের কাজ শেষ করে ক্লান্ত, তখন বর এসে রুমে ঢুকতেন।

ঘরের বউয়েরা কী খাবে, কতটুকু খাবে তা ঠিক করতেন শাশুড়ি আর তার ননাস (বরের বড় বোন) যিনি নিজের শ্বাশুড়ির সেবা করা থেকে বাঁচার জন্যে বাচ্চা-কাচ্চা নিয়ে বাপের বাড়ি থাকেন। আর ভাইয়ের বউদের উপর ছড়ি ঘুরান। সেই ননাস তাকে তার বাবার সাথে শেষ ঈদ করতে দেননি। বাবার খুব ইচ্ছে ছিল একটা ঈদ মেয়েকে নিয়ে করবেন। তার বরের কাছে সে কখনও কোন আবদার রাখতে পারেনি। বরের এককথা পরিবারের বড়দের সিদ্ধান্তই তার সিদ্ধান্ত। সে তার বাবা-মাকে কান্নাকাটি করে এইসব জানিয়েছিল। কিন্তু তারা যেহেতু অতি সম্ভ্রান্ত বংশের মানুষ, তাই চাননি শ্বশুরবাড়ির লোকজনকে নিয়ে বিচারসালিশ হোক। তাকে প্রত্যেকবার বলেছেন, সব সংসারেই এইসব হয় টুকিটাকি, মানিয়ে নিতে হয়।

মানিয়ে নিতে নিতে শেষে যখন দেখলো কোন সমাধান নেই, হঠাৎ করে নিজেকেই পাল্টে দিল তার বাবা মারা যাবার পর। স্বামীকে জানিয়ে দিয়েছে, আমার ব্যক্তিগত জীবনে কেউ যেন মাথা ঢুকাবার চেষ্টা না করেন, ফল বিপরীত হবে। খেয়াল করলো সে কঠিন হওয়ার সাথে সাথে তার বরও পাল্টে গেছেন, তার কথার গুরুত্ব দিচ্ছেন। আগে যেখানে বলতেন, তোমার ইচ্ছা অনিচ্ছা কী, পরিবারের নিয়ম সকলে মানতে বাধ্য। এখন বলেন, তোমার ভালো না লাগলে করবে না।

এর থেকে কী বুঝলাম আমরা? সংসারে নরম হয়ে চললে সবকিছু চাপিয়ে দেয় তার ওপর। সুতরাং যা ভালো লাগে না তা প্রথমেই বুঝিয়ে দেয়া উচিত সুন্দরভাবে। অনেকে মনে করে সময় গেলে সব ঠিক হবে। সময় গেলে ঠিক তো হয় না কিছুই, উল্টো স্বামী স্ত্রী দুজনের সম্পর্কে তিক্ততা ঢুকে দূরত্ব সৃষ্টি হয়। যার কারণে সব সময়ই বিশ্বাস করি, কোন নতুন সংসারে এসেই কোন বউ হুট করে খারাপ হয়ে যায় না। এমনও শুনেছি শ্বশুর বাড়ির লোকজন বিয়ের আগে মুখে বলেছেন, মেয়ের সাথে কিছুই দেয়া লাগবে না। শেষে উঠতে বসতে খোঁটা দেন, বিছানার সাথে বিছানার জিনিসপত্র, আলমারি, ড্রেসিং টেবিল দিয়ে মেয়ের রুমটা অন্তত সাজিয়ে দিলেই পারতো, শুনলে মনে হবে এই ছেলে বিয়ের আগে মাটিতে ঘুমাতো। কোন বাড়ির বউ ফ্রিজ, টিভি সহ সারা ঘরের ফার্নিচার নিয়ে এসেছে, সেই গল্প শুনিয়ে শুনিয়ে এক বছর পার করে দেয় কিছু পরিবার।

পরিচিত এক মেয়ের করোনার সময়ে বিয়ে হয়েছিল, কিন্তু শ্বশুরবাড়ির লোকজন ওই সময়েও বিভিন্ন উপলক্ষ দেখিয়ে ৭/৮ বার দাওয়াত খেয়েছে। এমনকি খাবারের মেন্যুতে কী কী হলে ভালো হতো তা নিয়ে ঘটককে ১০ কথা শুনিয়েও দিয়েছে। আগে আকদ হয়ে যাওয়ায় মেয়েটির পরিবার নিজেদের দুর্বল ভাবতে থাকেন। ওরা যাই বলেছে তাই মেনে নিয়েছিলেন।

এই যে আমাদের মেয়ের পক্ষ দেখা যায় বিয়ের সময়ে লম্বা কাবিনের টাকা নিয়ে এতো দরকষা কষি করেন, তা না করে বিয়ের পর মেয়ে কীভাবে থাকবে নতুন পরিবেশে গিয়ে, পড়াশোনায় থাকলে তা শেষ করে সংসারের দায়িত্ব নেবে, চাকরিতে থাকলে তা কন্টিনিউ করে যাবে, শারীরিক ও মানসিকভাবে প্রস্তুতি যখন হবে তখন বাচ্চা নেবে, যৌথ সংসারে থাকবে নাকি একক সংসারে থাকবে এইসব নিশ্চিত করা দরকার সবকিছুর আগে। যারা সম্মত হবে তারা বিয়েতে আগাবে, যারা হবে না তারা আগাবে না। চুক্তি, চুক্তিমতোই হওয়া উচিত। তা না করে বেশিরভাগ মেয়ের পক্ষ প্রথমে অতি খাতির দেখান, এমনভাবে নত হন ওই মাথা মেয়ে লাশ হয়ে না বেরুলে আর কোনদিনও উঠে না।

গরীব মা-বাবা চুপ থাকেন মেয়েকে এনে কোথায় রাখবেন ভেবে, আর পয়সাওয়ালা মা-বাবারা চুপ থাকেন সমাজে তাদের সম্মান নষ্ট হয়ে যাবার কথা ভেবে। বহু শ্বশুর- শাশুড়ি আছেন, ছেলের বিয়ের আগে সবই করেন, নিজেরাই নিজেদের চা-টা বানিয়ে খান, এমনকি নিজ  ঘরে বড় মেয়ে থাকলেও তাকে দিয়ে কুটোটি নাড়েন না। কিন্তু ছেলে বউ ঘরে আসতেই অচল হয়ে যান, সব ছেলেবউ করবে। বিকেলের চা পেতে একটু দেরি হলে পাড়াপড়শি, আত্মীয়স্বজন কারও জানতে বাকি থাকে না ছেলের বউ খারাপ, শ্বশুর – শ্বাশুড়ির যত্ন নেয় না। কিন্তু নিজের মেয়েকে দিয়ে একগ্লাস পানি ঢেলে খাওয়ার কথাও বলেন না। সেইসব ছেলে বউয়েরা আর কোন দিনই ভালো হতে পারে না। নিজের বদনাম শুনতে শুনতে তারাও বেহায়া হয়ে যায়, যে আমি তো খারাপই। পল্টিটা মারে তখন, যখন শাশুড়ি সংসারে ক্ষমতা হারান, বউয়ের বাচ্চাকাচ্চা বড় হয়ে যায়, সংসারের সবকিছুতে দখল চলে আসে। তখন আর বউ যেমন নতুন থাকে না, তেমনি মুখ বন্ধ করে সারাজীবন শোনার ধৈর্য্যও থাকে না, চারপাশে তারও দল ভারি হয়, বরেরও ততদিনে বউয়ের উপর নির্ভরশীলতা বাড়ে। অন্যের কথায় আর বউয়ের উপর চড়াও হওয়ার দিন থাকে না। ঠিক ওই সময়ে এসে বিগত দিনে বউয়ের উপর যা করেছেন তা যে ভুল ছিল বুঝতে পারেন। কারণ একটা সময় শেষে কারোই মা,বাপ, ভাই, বোন, বোন কেউই পাশে থাকে না বা থাকলেও কিছু করার থাকে না জীবনের গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্তে। জীবনের একটা সময়ে এসে স্বামীর কাছে স্ত্রী ও স্ত্রীর কাছে স্বামীই সবচেয়ে আপন হয়ে যান।

আরো সহজে বলতে গেলে যেই স্বামী আগে বউয়ের উপর চড়াও হতেন মা-বোনের পক্ষ নিয়ে, এখন সে বউয়ের কথায় চলে। এই সহজ বিষয়টিকে আমি কখনোই সহজ করে দেখি না। এটাই একজন পুরুষের সবচেয়ে বড় ভুল যে, একজনের কথায় অন্যজনের উপর চড়াও হওয়া বা বউ ও মায়ের সাথে সম্পর্ক ব্যালেন্স করে চলতে গিয়ে সংসারে চুপ থাকা। ওইসব মেয়েলি ব্যাপার, মেয়েরাই মেয়েদের বড় শত্রু, নারী জাতিই হিংসুটে, ঝগড়াটে বলে পালিয়ে থাকা। অনেকে ভাবেন চুপ করে থাকাটাই মুখ্য সমাধান, পরে তা আপনাতেই ঠিক হয়ে যাবে। দিনেরবেলা মায়ের আঁচলের নিচে গিয়ে দেখান তুমিই সব মা, বউ পরের মেয়ে। আর রাতের বেলা বউয়ের শাড়ি খুলে স্বামীর দায়িত্ব পালন করে বউকে বুঝিয়ে দেয়া যত যাই হোক আমরা স্বামী- স্ত্রী। রোমান্টিক দুই কথা বললেই যেখানে সমাধান হয় সেখানে কী দরকার আছে ন্যায় অন্যায় বোঝার।

এই লেখার মাধ্যমে পুরুষ ভাইদের বলবো, বিশ্বাস করুন আপনাদের বউয়েরা কখনো ভুলে না, তাদের সাথে আপনারদের উপস্থিতিতে কী ঘটেছে। ভুল বউ করুক বা পরিবারের অন্য কেউ, প্লিজ আলাদাভাবে কথা বলুন। একপক্ষের সামনে অন্য পক্ষকে কখনো অপদস্থ করবেন না, কিন্তু এড়িয়ে গেলেই শেষ হবে এমনটি ভাবা বোকামো। আপনাদের নীরবতাই একজন দোষী সাহস পায় অন্যায় করতে, যার থেকে অপরাধের জন্ম নেয়। বিয়ের আগেই আপনার কন্ডিশন দিন, আপনার পরিবার সম্পর্কে ধারণা দিন হবু বউয়ের পরিবারকে। আপনার মা সারা বছর অসুস্থ থাকলে উনার সেবাযত্নে যাতে ত্রুটি না হয় সেজন্যে একজন সেবিকা রাখুন।

মনে রাখবেন, আপনার স্ত্রীরও মা-বাবা আছেন। নিশ্চয়ই আপনারা স্বপ্নেও ভাবতে পারেন না, নিজের বউয়ের মা-বাবার সেবা বা দেখভাল করার দায়িত্ব আপনাদেরও আছে। যদি ভাবতে না পারেন দোষের কিছু নয়, কিন্তু ওই মা-বাবার প্রত্যাশা তাদের সন্তানের উপর মানে আপনার স্ত্রীর উপর থাকতেই পারে। হয় আপনার স্ত্রীকে তার মা-বাবার যত্ন নেয়ার সুযোগ করে দিন, না হলে তাদের জন্যেও সেবিকা রাখার ব্যাপারে পরামর্শ বা সহযোগিতা করুন। অহেতুক কোন দায়িত্ব নিজেও ইচ্ছের বিরুদ্ধে নিবেন না, আপনাদের স্ত্রীদের উপরও চাপিয়ে দেয়া থেকে বিরত থাকুন। এতে করে সম্পর্কে তিক্ততার সৃষ্টি হবে না। ভালোবাসা, সেবা যত্ন জোর করে বা বাধ্য করে করিয়ে নেবার বিষয় নয়। সংসারে সব কিছুই গিভ এন্ড টেক।

কামনা করি প্রতিটি পরিবারের সম্পর্ক সুন্দর হোক সকলের সহযোগিতায়। পরিবারের বিষয়গুলো যেন পরিবারেই মিটমাট হয়, পরিবারের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকে। সম্পর্ক ব্যালান্স করতে গিয়ে পক্ষপাতিত্ব যেন না হয়। কোন মা-বাবাই (স্বামী- স্ত্রী দুজনের মা-বাবা) যেন নিজের সন্তানের সেবাযত্ন থেকে বঞ্চিত না হন। এতে করে সকলের প্রতি সকলের শ্রদ্ধা অটুক থাকে। সম্পর্কের বন্ধন দৃঢ় হয়।

শেয়ার করুন:
Copy Protected by Chetan's WP-Copyprotect.