
উইমেন চ্যাপ্টার: বাবা-মা হত্যার সাথে জড়িত অভিযোগে গ্রেপ্তার ঐশী রহমানের বয়স জটিলতা যেন কাটছেই না। বয়স ১৭, নাকি ১৮, সেই টানাপড়েনে পড়ে শেষপর্যন্ত তার ঠাঁই হচ্ছে কারাগারেই। পুলিশ তার জন্মশহর খুলনা থেকে সনদ নিয়ে এসে প্রমাণ করেছে যে, ঐশীর বয়স আঠারোর বেশি। যদিও স্কুলের নথি বলছে অন্যকথা।
খুলনার সেই সনদ দাখিল করে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা আবু আল খায়ের ও সমাজসেবা অধিদপ্তরের প্রবেশন কর্মকর্তা ছিদ্দিকুর রহমান বৃহস্পতিবার ঐশীকে কারাগারে পাঠানোর আবেদন জানান।
বৃহস্পতিবার ঢাকা মহানগর হাকিম আনোয়ার ছাদাত ওই আবেদন যাচাই করে গাজীপুরের কিশোরী উন্নয়ন কেন্দ্রে থাকা ঐশীকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। এই বিচারকই গত শনিবার পাঁচদিনের রিমান্ড শেষে ঐশীকে আদালতে পাঠানো হলে কিশোরী সংশোধন কেন্দ্রে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছিলেন।
ঐশী গ্রফতারের পর তার বয়স নিয়ে বিতর্ক শুরু হলে তার চাচা মসিউর রহমান রুবেল বলেছিলেন, ‘ঐশীর জন্ম খুলনায়। আমার যতদূর মনে পড়ে ১৯৯৫ সালে তার জন্ম হয়েছিল’। অন্যদিকে ঐশীর বিদ্যালয় অক্সফোর্ড ইন্টারন্যাশনাল স্কুল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, তাদের ভর্তি ফর্মে জন্ম তারিখ লেখা হয়েছে ১৭ আগস্ট ১৯৯৬।
গত ১৬ আগস্ট বাবা-মায়ের ক্ষতবিক্ষত মরদেহ চামেলীবাগের বাসা থেকে উদ্ধারের পরদিন ঐশী আদালতে আত্মসমর্পণ করে। এর পরদিন তাকে পাঁচ দিনের রিমান্ডে নেয়া হয়।
স্কুলের নথি অনুযায়ী ঐশীর বয়স ১৮ না হওয়ায় তাকে রিমান্ডে নেওয়া নিয়ে তখন বেশ সমালোচনা শুরু হয়। এই বয়সের কাউকে গ্রেপ্তার ও রিমান্ড শিশু অধিকারের লঙ্ঘন বলে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান জানান।
এর পরিপ্রেক্ষিতে ঐশীর বয়স প্রমাণের জন্য আদালতের অনুমতি নিয়ে ডাক্তারি পরীক্ষাও করে পুলিশ। তবে ওই প্রতিবেদন বৃহস্পতিবার পর্যন্ত পাওয়া যায়নি বলে পুলিশ সূত্রে জানা গেছে।
এদিকে এই হত্যা মামলায় সাক্ষী হিসেবে বৃহস্পতিবার মহানগর হাকিম আসাদুজ্জামান নূরে আদালতে জবানবন্দি দেন অটোরিকশা চালক ইমান আলী ও কুলসুম বেগম। পুলিশের বক্তব্য অনুযায়ী, বাবা-মা হত্যাকাণ্ডের পর গত ১৫ আগস্ট ঐশী ইমান আলীর গাড়িতেই বেরিয়েছিলেন এবং থেকেছিলেন কুলসুমের বাড়িতে।