উইমেন চ্যাপ্টার: বরিশালের মুলাদী উপজেলায় জামায়াত নেতার বাড়ি থেকে আটক ইসলামী ছাত্রী সংস্থার ২২ জন কর্মীকে জেলহাজতে পাঠিয়েছে আদালত। বৃহস্পতিবার দুপুরে সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট শাহিনুর আক্তার তাদের জামিন না মঞ্জুর করে জেলহাজতে পাঠানোর আদেশ দেন। তাদের ৫৪ ধারায় গ্রেফতার দেখিয়েছে পুলিশ।
বরিশালের পুলিশ সুপার একেএম এহসানউল্লাহ উইমেন চ্যাপ্টারকে একথা জানিয়ে বলেন, তাদের কাছে পাওয়া বই এবং সিডিগুলো পরীক্ষা করে দেখা হচ্ছে। তথ্য ও প্রযুক্তি আইনে বা রাষ্ট্রদ্রোহিতার মামলা হয় কিনা তাও খতিয়ে দেখছে পুলিশ।
তিনি জানান, গ্রেপ্তার হওয়া এই কর্মীরা ঈদ পুনর্মিলনীর জন্য জামায়াতে নেতার বাড়িতে এসেছিলেন বলে পুলিশকে জানায়। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে বুধবার বেলা ১টায় গাছুয়া ইউনিয়ন জামায়াতের সেক্রেটারি আতাহার উদ্দিনের হোসনাবাদ গ্রামের বাড়ি থেকে এই কর্মীদের গ্রেফতার করা হয়। এসময় তাদের কাছ থেকে জামায়াতে ইসলামীর মতাদর্শের ৩৬টি বিভিন্ন পুস্তিকা এবং ‘রক্তাক্ত ২৮ অক্টোবর, পাশবিক নির্যাতনের প্রামাণ্য চিত্র’ শীর্ষক দুটি সিডি উদ্ধার করা হয়েছে।
পুলিশ সুপার আরও জানান, গ্রেফতার হওয়া ছাত্রী সংস্থার ওই কর্মীরা মাঠ পর্যায়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে ইসলামের নামে সরকারবিরোধী প্রচারণার জন্য সংগঠিত হচ্ছিল বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। তাদের কাছে পাওয়া বইগুলো বেশ পুরনো, সিডি দুটিতে আওয়ামী লীগের সরকারের আমলের বেশকিছু কর্মকাণ্ডের প্রামাণ্যচিত্র রয়েছে। এছাড়া ১৯৭১ থেকে ১৯৭৫ সালের ঘটনাবলীও আছে ওইসব প্রামাণ্যচিত্রে। সিডি দুটির নির্মাণকাজে দক্ষতার পরিচয় আছে বলেও জানান পুলিশ সুপার।
গ্রেফতারকৃতরা হচ্ছেন ছাত্রী সংস্থার কর্মী মারজানা, রেণু, স্বর্ণালী, রাফসানা, রোকেয়া, রাজিয়া, আফরোজা, সুমি, করুণা, রুনা, আফসানা, নিরু, আফিয়া, নূপুর, জাহানারা, সিমু, এলিজা, কানিজ, তানিয়া, তাহমিনা, সুবর্ণা ও আয়শা। গ্রেফতারকৃতদের বেশিরভাগেরই বাড়ি মুলাদী উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে। এদের মধ্যে স্বর্ণালী নেত্রীগোছের।
মুলাদী থানার ওসি মো. শাহ আলম জানিয়েছেন, নৈরাজ্যমূলক কর্মসূচি গ্রহণের জন্য ছাত্রী সংস্থার এই কর্মীরা জামায়াত নেতার বাড়িতে মিলিত হয়েছিল বলে তারা ধারণা করছেন। ইউনিয়ন জামায়াতের সেক্রেটারি আতাহার উদ্দিন ও তার পরিবারের সদস্যরা পুলিশি অভিযানের আগেই পালিয়ে যায়।
পুলিশ জানিয়েছে, গ্রেফতারকৃতদের মধ্যে স্বর্ণালী হামিদার বাড়ি উজিরপুর উপজেলার বড়াকোঠা গ্রামে। সে বিএম কলেজের ছাত্রী। স্বর্ণালীর নেতৃত্বে ওই সভা অনুষ্ঠিত হচ্ছিল বলে পুলিশ জানিয়েছে। তবে স্বর্ণালী দাবি করেছে, মুলাদী উপজেলার গাছুয়া গ্রামে খালার বাড়িতে সে বেড়াতে গিয়েছিল। জামায়াতের সঙ্গে তার কোন সংশ্লিষ্টতা নেই। তবে স্বর্ণালী কেন ওই জামায়াত নেতার বাড়িতে গিয়েছিল তার কোন সদুত্তর দিতে পারেনি।