
উইমেন চ্যাপ্টার: রাজধানীতে পুলিশ কর্মকর্তা ও তার স্ত্রী হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার তাদের একমাত্র মেয়ে ঐশী রহমানকে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে কিশোরী উন্নয়ন কেন্দ্র থেকে কারাগারে পাঠাতে উকিল নোটিস পাঠিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের একজন আইনজীবী।
আবেদনকারী ইউনুস আলী আকন্দের দাবি, জন্মনিবন্ধন অনুযায়ী ঐশীর বয়স ১৯ বছর। নতুন শিশু অধিকার আইনও তার ক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয়। কারণ তা বাস্তবায়ন হয়েছে গত ২১ আগস্ট, ঐশীর বিরুদ্ধে মামলা হওয়ার পর।
সুতরাং আগের আইন অনুযায়ী ১৬ বছরের বেশি বয়স হওয়ায় তাকে কারাগারে পাঠানোর দাবি জানিয়েছেন এই আইনজীবী।
তার ওই নোটিস মঙ্গলবার কুরিয়ারের মাধ্যমে স্বরাষ্ট্র সচিব, পুলিশের মহাপরিদর্শক, ঢাকা মহানগর পুলিশ কমিশনার, গোয়েন্দা পুলিশের ডেপুটি কমিশনার, ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম, পল্টন থানার ওসি, মামলার তদন্ত কর্মকর্তা, টঙ্গীর জাতীয় কিশোর সংশোধন কেন্দ্রে পাঠানো হয়।
নোটিসে বলা হয়, ঐশীকে কিশোরী উন্নয়ন কেন্দ্রে পাঠানোর আদেশ প্রত্যাহার করে তাকে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে কারাগারে পাঠাতে হবে। তা না হলে ইউনুস আলী হাইকোর্টে রিট আবেদন করবেন।
গত ১৬ আগস্ট সন্ধ্যায় ঢাকার চামেলীবাগের ফ্ল্যাট থেকে এসবির পরিদর্শক মাহফুজুর রহমান ও তার স্ত্রী স্বপ্না রহমানের ক্ষতবিক্ষত লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। মেয়ে ঐশী, ছেলে ঐহী ও গৃহকর্মী সুমিকে নিয়ে ওই ফ্ল্যাটে থাকতেন তারা।
অক্সফোর্ড ইন্টারন্যাশনাল স্কুলের ও লেভেলের ছাত্রী ঐশী ও তাদের বাসার গৃহকর্মী সুমি ১৭ আগস্ট নিজে থেকেই পুলিশের কাছে ধরা দেয়। পরে পাঁচদিনের রিমান্ডে নেয় পুলিশ।
রিমান্ড চলাকালে পুলিশ জানায়, ‘মাদকাসক্ত’ ঐশীর ‘উচ্ছৃঙ্খলতায়’ বাধা দেওয়ায় বাবা-মায়ের প্রতি তার ক্ষোভ ছিল। হত্যাকাণ্ডের পর খোয়া যাওয়া কিছু গয়নাও ঐশীর কাছে পাওয়া গেছে বলে পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়।
ঐশীকে রিমান্ডে পাঠানো নিয়ে প্রশ্ন ওঠায় তার বয়স প্রমাণের জন্য আদালতের অনুমতি নিয়ে ডাক্তারি পরীক্ষা করে পুলিশ। ওই প্রতিবেদন এখনো পাওয়া যায়নি।
ঐশীর স্কুলের রেকর্ড অনুযায়ী তার বয়স ১৮ বছরের কম। এই বয়সের কাউকে গ্রেপ্তার ও রিমান্ড শিশু অধিকারের লঙ্ঘন বলে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান মিজানুর রহমানসহ বিভিন্ন মহল থেকে সমালোচনা হয়। ঐশীর পাশাপাশি শিশু গৃহকর্মীকে সুমিকে রিমান্ডে নেওয়া নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে।
পাঁচ দিনের রিমান্ড শেষে গত শনিবার আদালতে ‘স্বীকারোক্তিমূলক’ জবানবন্দি দেয়ার পর ঐশী ও সুমিকে কারাগারে পাঠায় আদালত। ওই দিন রাতেই তাদের গাজীপুর কিশোরী উন্নয়ন কেন্দ্রে পাঠানো হয়।