একটি নিরেট ভালবাসার গল্প

Love story 1উইমেন চ্যাপ্টার: হেরল্ড এবং রুথ নাপকে একসাথে কাটিয়েছেন জীবনের ৬৫টি বছর। মৃত্যুতেও তারা ছিলেন অবিচ্ছিন্ন। মাত্র ১১ ঘন্টার ব্যবধানে দুজনেই চলে গেছেন।

এই ঘটনাকে মোটেও ‘কাকতালীয়’ মানতে নারাজ দম্পতির সন্তানেরা। ক্যারল রুমি বলছিলেন, ‘মা যখন অসুস্থ হয়ে পড়লো, আমরা বাবাকে বোঝাতে চাইলাম যে, মা আর সেরে উঠবে না। কিছু সময় বাবাকে উত্তেজিত দেখলাম, এরপরে তিনি শান্ত হয়ে গেলেন। আমাদের ধারণা, তখনই বাবা সিদ্ধান্ত নিয়েছেন যে, না, সে কখনই আমাকে ছাড়া যেতে পারে না’।

হেরল্ড নাপকে ৯১ বছর বয়সে মারা যান গত ১১ আগস্ট সকাল সাড়ে সাতটায়, আর ৮৯ বছর বয়সী রুথ নাপকে সেদিনই সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টায়। তারা দুজনই মারা যান একটি নার্সিং হোমে, যেখানে গত দুমাস তারা একসাথেই কাটিয়েছেন। জায়গাটি রাশিয়ার কাছে ওহাইওতে।

রুমি জানান, মা বলতেন, এখানে তিনি বাবাকে ছাড়া থাকতে চান না। দুজন হরিহরি আত্মা ছিলেন একে-অপরের। এই দম্পতির ছয়টি সন্তান। হেরল্ড ফর্ট রিকভারিতে কাজ করতে শিক্ষক, প্রিন্সিপাল এবং স্থানীয় একটি স্কুলে কোচ হিসেবে, আর রুথ ছিলেন স্কুল সেক্রেটারি। বাকি সময়টুকু তিনি ছিলেন ফুলটাইম মা।

দুজনের দেখা হয়েছিল দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়। প্রথমে চিঠি চালাচালি, পরে প্রেম। একসময় আবিষ্কার করলেন, দুজনই পড়শী শহরের বাসিন্দা।

বেঁচে থাকলে ২০ আগস্ট তারা বিয়ের ৬৬তম বার্ষিকী উদযাপন করতেন।

Love Story 2রুমির মতে, এটা এমন একটি প্রেমের গল্প, যা আপনি সিনেমায় পাবেন না। তারা সত্যি সত্যিই ভালবাসতেন একে-অপরকে, জৌলুস ছিল না, দুজনে এটা টিকিয়ে রাখতে চেষ্টা করে গেছেন আজীবন, তারা সফলকামও হয়েছেন।

দম্পতির মৃত্যুর পর তাদের ছয় সন্তান, ১৪জন নাতি-নাতনি, আটজন দৌহিত্র ফর্ট রিকভারিতে তাদের সমাহিত করেন। শোকযাত্রাটি কিছুসময় সেই বাড়িটিতে গিয়ে থেমেছিল যেখানে হের।ড ও রুথ তাদের সন্তানদের বড় করেছেন। এরপর থেকে ওই বাড়িটির সামনে পতাকা অর্ধনমিত রাখা হয়েছে মা-বাবার প্রতি সম্মান জানাতেই।  সন্তানরা জানান, মা-বাবা সবসময়ই রাশিয়ায় ফিরতে চাইতেন, যেখানে কাটিয়ে এসেছে অনেক কয়টা বছর।

রুমি স্মৃতিচারণ করে বলেন, ‘বাবা ঠাট্টা করে বলতেন, তোমার মা খুব ভাল নাচতে পারেন। এতোটাই ভাল যে, তার সাথে নাচলে যেকোনো পুরুষই ভাল নাচতে বাধ্য’।

শেয়ার করুন:
Copy Protected by Chetan's WP-Copyprotect.