আজ ফুলবাড়ী ট্রাজেডি দিবস

fulbariউইমেন চ্যাপ্টার: আজ ফুলবাড়ী ট্রাজেডি দিবস। ২০০৬ সালের এই দিনে দিনাজপুরের ফুলবাড়ী উপজেলার কয়লা খনি প্রকল্প বাতিল ও বিদেশি কোম্পানি এশিয়া এনার্জির দেশ ত্যাগের দাবিতে আন্দোলনরত জনতার ওপর গুলি চালায় পুলিশ ও তৎকালীন বিডিআর।

বর্বরোচিত এই হামলায় তিনজনের মৃত্যু হয়। প্রায় অর্ধশতাধিক গুলিবিদ্ধ হয়। তিন শতাধিক মানুষ আহত হন। আহতদের মধ্যে অনেকেই এখন পঙ্গু।

তেল, গ্যাস, খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎ বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটি এ দিনটিকে ‘জাতীয় সম্পদ রক্ষা দিবস’ এবং সম্মিলিত পেশাজীবী সংগঠন ও ফুলবাড়ীবাসী ‘ফুলবাড়ী শোক দিবস” হিসেবে পালন করে আসছে।

দিনটিকে ঘিরে ব্যাপক কর্মসূচী ঘোষণা করেছে এই দুই সংগঠন ছাড়াও আরও অনেক সংগঠন।কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে কালো ব্যাচ ধারণ, কালো পতাকা উত্তোলন, সকালে শোক র‌্যালি ও স্মৃতি স্তম্ভে নিহতদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন।

২০০৬ সালের ২৬ আগস্ট বিকেল ৩টায় কয়লা খনি প্রকল্প বাতিল ও বিদেশি কোম্পানি এশিয়া এনার্জির দেশ ত্যাগের দাবিতে উপজেলার ঢাকা মোড়ে এক প্রতিবাদ সভা শেষে
ফুলবাড়ী শহরে সাধারণ জনতা বিশাল বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে এশিয়া এনার্জি কোম্পানির অফিসের দিকে এগিয়ে যেতে থাকে।

পথে ছোট যমুনা ব্রিজের উপর তৎকালীন বিডিআর ও পুলিশ মিছিলকারীদের ওপর লাঠিচার্জ ও টিয়ার শেল নিক্ষেপ করে। একপর্যায়ে সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়লে পুলিশ বিক্ষুব্ধ জনতার ওপর নির্বিচারে গুলিবর্ষণ করে। এতে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র তরিকুল ইসলাম (২২), বারকোনা গ্রামের শিশু আমিন (১০) ও নবাবগঞ্জ উপজেলার ঝড়ারপাড় গ্রামের সালেকিনের (১৫) মৃত্যু হয়। গুলিবিদ্ধ হন অন্তত অর্ধশতাধিক আন্দোলনকারী।

এ ঘটনার পরের দিন ফুলবাড়ীর সর্বস্তরের জনতা প্রতিরোধ গড়ে তুললে অচল হয়ে পড়ে ফুলবাড়ী। শহরে ১৪৪ ধারা জারি করা হয়। পরদিন সকালে বিক্ষুব্ধ জনতা ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করে জনতার বিশাল মিছিল বের করে।

প্রচন্ড প্রতিরোধের মুখে ২৮ আগস্ট সকালে বিডিআর প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়। বিক্ষুব্ধ জনতা এশিয়া এনার্জির অফিসে ব্যাপক ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করে।

পরে ৩০ আগস্ট জাতীয় কমিটির সাথে সরকারের এশিয়া এনার্জিকে প্রত্যাহার, হতাহতদের ক্ষতিপুরণ দেয়া সহ ছয় দফা সমঝোতা চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়।

তবে ওই ছয় দফা আজও বাস্তবায়ন হয়নি বলে দাবি করেছেন ফুলবাড়ী আন্দোলনের অন্যতম নেতা ও ফুলবাড়ী পৌরসভার মেয়র মুরতুজা সরকার মানিক।

শেয়ার করুন:
Copy Protected by Chetan's WP-Copyprotect.