আফগানিস্তানের প্রথম নারী এনিমেটর, সারা বারাকযায়ের জন্ম তালেবান শাসনামলে। চার বছর বয়স থেকেই চিত্রাংকনের প্রতি আগ্রহ প্রকাশ পায় সারার।
সারার শৈশব কেটেছে যুদ্ধ কবলিত আফগানিস্তানে। শৈশবে শ্রবণশক্তি হারিয়ে বাবার সাহায্যে না শুনে কথা বলতে শিখেছিলেন সারা- প্রথম হেয়ারিং এইড পেয়েছিলেন যখন তার বয়স আট। এরপর থেকে সারার জীবন বদলে যায়- বোনের সাথে স্কুলে যেতে শুরু করেন, আর শুধু টেলিভিশন দেখে দেখে শিখে ফেলেন তুর্কি, জার্মান, আরবী এবং ইংরেজি ভাষা।
পনেরো বছর বয়সে স্কুল শেষ করে বৃত্তি পেয়ে সারা চলে যান তুরস্কে, এনিমেশনের উপর ডিগ্রি নিতে। বৃত্তিসহ উচ্চশিক্ষার সুযোগ পাওয়ায় তার পরিবার তার দেশ ছাড়ার সিদ্ধান্ত এক পর্যায়ে মেনে নেয়। বর্তমানে দেশে ফিরে সারা নিজের কার্টুন সিরিজের উপর কাজ শুরু করেছেন। পাশাপাশি তিনি শিশুদের বইয়ে ইলাস্ট্রেশনের কাজ, পোশাক ডিজাইন এবং শিক্ষকতা করছেন।

তার চিত্রে ফুটে উঠে তার বালিকাকালের জীবনযুদ্ধের নানা প্রতিচ্ছবি- শান্তি, যুদ্ধ এবং নারী অধিকার। তিনি তার এনিমেশন এবং কার্টুনের মাধ্যমে বিশ্বের কাছে আফগান নারীদের দুঃখ এবং দুর্দশাগুলো তুলে ধরতে চান। পাশিপাশি বিশ্বের কাছে আফগানিস্তানের ভাবমুর্তি বদলে দিতে চান। তিনি চান বিশ্ববাসী জানুক, আফগানিস্তানের সংস্কৃতি এবং ঐ সব মানুষের গল্প যারা মানবতার খাতিরে নিজেদের বিলিয়ে দিয়েছেন।
সারার এখন একটাই স্বপ্ন – নিজের একটি স্কুল, যেখানে শিশু ও নারীরা এনিমেশনের কাজ শিখতে পারবে এবং এনিমেশন নিয়ে পড়াশুনা করতে পারবে। যুদ্ধবিধ্বস্ত রক্ষণশীল আফগান সমাজে সারার এই যাত্রাটি বন্ধুর নিঃসন্দেহে। তবুও প্রতিনিয়ত হুমকির শিকার হয়ে হাল ছাড়তে নারাজ সারা। প্রতিনিয়ত যে দেশটিতে বিভিন্ন পেশার নারীরা হত্যার শিকার হচ্ছেন, সেখানে সারার এই দৃঢ়তা আমাদের যেমন সাহসী করে, তেমনি আতংকিতও করে।
তথ্যসূত্রঃ The Guardian
লেখাটির অনুবাদ করেছেন সাবরিনা স. সেঁজুতি। তিনি অস্ট্রেলিয়ার নিউক্যাসল ইউনিভার্সিটিতে পিএইচডি করছেন।