‘ফিরিয়ে আনুন তসলিমা নাসরিনকে’

Taslima
নির্বাসিত লেখক তসলিমা নাসরিন

উইমেন চ্যাপ্টার: নারীবাদী লেখক তসলিমা নাসরিন বলেছেন, ‘আমি সবসময়ই দেশে ফিরতে চেয়েছি। এটা আজ নতুন না, গত ২০ বছর ধরেই আমি দেশে ফিরতে চাই। বড় দুটি রাজনৈতিক দল সবসময় রেষারেষিতে ব্যস্ত থাকলেও আমার প্রশ্নে সবাই এক হয়ে যায়। আমি কেন ফিরতে পারবো না, সেটাই বুঝে উঠতে পারি না’।

জন্মদিন উপলক্ষে অনলাইন নিউজপোর্টাল উইমেন চ্যাপ্টারের সাথে এক টেলিফোন আলাপে এভাবেই ক্ষোভ প্রকাশ করেন তিনি।

এদিকে দীর্ঘ ২০ বছর ধরে নির্বাসিত এই লেখকের মানবাধিকার ও নাগরিক অধিকার লঙ্ঘনের প্রতিবাদে এবং তার অধিকার সমুন্নত রেখে তাকে দেশে ফিরিয়ে আনার দাবিতে আজ রোববার ঢাকায় আয়োজিত হচ্ছে এক মানববন্ধন কর্মসূচি। ২৫ আগস্ট লেখকের জন্মদিন উপলক্ষে বিকেল চারটায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে আয়োজন করেছে তসলিমা পক্ষ নামের একটি সংগঠন।

১৯৯৪ সালে বিভিন্ন লেখার কারণে দেশের উগ্রপন্থী ও সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠীর রোষানলে পড়ে দেশত্যাগে বাধ্য হন ভারতীয় উপমহাদেশের অন্যতম আপোসহীন নারীবাদী এই লেখক। সেই থেকে তিনি ভারতের পশ্চিমবঙ্গসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে থাকতে বাধ্য জন। বর্তমানে তিনি দিল্লিতে অবস্থান করছেন।

উইমেন চ্যাপ্টারের পক্ষ থেকে জনপ্রিয় এই লেখককে ফোনে জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানানো হলে তিনি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। কিভাবে কাটাবেন দিনটি, জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, কলকাতা থেকে আসা বন্ধুদের সাথেই কাটবে আজ সারাটা দিন, যেভাবে কেটেছে এর আগের বছরগুলোও।

তসলিমা নাসরিন লেখালেখির জন্য অসম্ভব জনপ্রিয়তা অর্জন করেছেন. আবার বিতর্কিতও হয়েছেন। নারীর অধিকারের কথা বলতে গিয়ে তিনি শুধু ধর্মীয় মৌলবাদীদের আক্রমণের শিকার হননি, গোটা রাষ্ট্রব্যবস্থা এবং পুরুষতান্ত্রিক সমাজ তাঁর বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করে। এর পরিণামে তিনি তাঁর প্রিয় স্বদেশ থেকে বিতাড়িত। মানবতার পক্ষে লেখা তসলিমার পাঁচটি বই বাংলাদেশ সরকার নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে। তসলিমা প্রচুর পুরস্কার এবং সম্মান অর্জন করেছেন। সাহিত্যের জন্য দু’বার পেয়েছেন আনন্দ পুরষ্কার। অন্যান্য উল্লেখযাগ্য পুরস্কারের মধ্যে রয়েছে ইউরোপিয়ান পার্লামেন্ট থেকে মুক্তচিন্তার জন্য শাখারভ পুরস্কার, সহিষ্ণুতা ও শান্তি প্রচারের জন্য ইউনেস্কো পুরস্কার, ফরাসি সরকারের মানবাধিকার পুরস্কার, সিমোন দ্য বোভোয়া পুরস্কার, বেলজিয়াম এবং ফরাসি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে চারবার সাম্মানিক ডক্টরেট।

শেয়ার করুন: