মালদ্বীপে রহিত করা হলো ১০০ বেত্রাঘাতের রায়

shariaউইমেন চ্যাপ্টার ডেস্ক: মালদ্বীপে বিবাহপূর্ব যৌন সম্পর্কের অপরাধে ১৫ বছরের কিশোরীকে ১০০ বেত্রাঘাতের আদেশ রহিত করেছে দেশটির সর্বোচ্চ আদালত। বুধবার দেশটির হাইকোর্ট এ সংক্রান্ত এক রায়ে বলেছে, কিশোর অপরাধ আদালতে মেয়েটিকে ১০০ বেত্রাঘাত করার রায়টি ভুল ছিলো। এদিকে মেয়েটিকে ধর্ষণের অভিযোগে তারই সৎ বাবার বিচার চলছে।

মেয়েটির সৎ বাবার বিরুদ্ধে মেয়েটিকে জোরপূর্বক ধর্ষণ ও গর্ভধারণ করার পর সন্তান হত্যা করার অভিযোগ আনা হয়েছে। মূলত পুলিশ মেয়েটির ধর্ষণের তদন্ত করতে নামলে মেয়েটির বিরুদ্ধে বিবাহপূর্ব এই ‘সম্মতিসূচক’ যৌন সম্পর্কের বিষয়টি উঠে আসে। দেশটিতে বিবাহপূর্ব যৌন সম্পর্ককে ভয়ানক অপরাধ হিসেবে দেখা হয়ে থাকে।

বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়, এই রায়ে নাখোশ হয়েছে বেত্রাঘাতের পক্ষের প্রতিক্রিয়াশীলরা। মেয়েটির উপর থেকে এমন আমানবিক শাস্তিটি রহিত করায় স্বস্তি প্রকাশ করছেন মানবাধিকার সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের এশিয়া প্যাসিফিক অঞ্চলের ডেপুটি ডিরেক্টর পলি ট্রাসকট।

তিনি বলেন, ‘বিবাহপূর্ব দৈহিক সম্পর্কের জন্য কেউই অভিযুক্ত হতে পারেনা।’ মিসেসে ট্রাসকট আরও বলেন, চাবুক দিয়ে মারা বা বেত্রাঘাত একটি অতি নিম্ন মাত্রার অমানবিক শাস্তি। এ ধরণের সমস্ত রায়কে বাতিল করতে তিনি মালদ্বীপের সরকারের কাছে আবেদনও করেছেন।

উচ্চ আদালতের রায়ে বলা হয়েছে, নিম্ন আদালত নির্যাতিতা মেয়েটির একটি স্বীকারোক্তির উপর ভিত্তি করে এমন রায় দিয়েছে। যদিও সেসময় মেয়েটি খুবই আতংগ্রস্ত ছিলো। বিভিন্ন আন্তর্জাতিক চাপের মুখে মেয়েটির পক্ষে রাষ্ট্রপক্ষ নিম্ন আদালতের রায়টির বিপক্ষে আপিল করে। ১০০ বেত্রাঘাতের রায় মেয়েটির ১৮ বছর পূর্ণ হওয়ার পরে কার্যকর করার জন্যেও বলা হয় আপিলে।

এদিকে দেশটির প্রেসিডেন্টের মুখপাত্র মাসুদ ইমাদের বরাত দিয়ে এএফপির এক বার্তায় বলা হয়, এই রায়ে উচ্ছাস প্রকাশ করেছে দেশটির প্রেসিডেন্ট মোহাম্মাদ ওয়াহীদ। ইমাদ বলেন, যেকোন ক্ষতিগ্রস্তকে সহায়তা করাই সরকারের কাজ। কিন্তু আমাদের সেটি আইনের আওতায় থেকে করতে হয়।

দেশটির উত্তরাঞ্চলে ‘সাভিয়ানি আতল’ এর ফেইধু দ্বীপে মৃত সন্তানটির কবর খুঁজতে ইতিমধ্যেই পুলিশকে তদন্তের দায়িত্ব দিয়েছে আদালত। প্রায় চার লাখ লোকের বাসস্থান মালদ্বীপে সাধারণ আইনের পাশাপাশি কঠোর ইসলামী শরীয়া আইনও প্রচলিত রয়েছে।

শেয়ার করুন:
Copy Protected by Chetan's WP-Copyprotect.