উইমেন চ্যাপ্টার: আজ একুশে আগস্ট। ভয়াল দিনটি বাংলাদেশের ইতিহাসের অন্যতম কালো দিন। ২০০৪ সালে এই দিনে ১৩ টি আর্জেস গ্রেনেড পারতো বাংলাদেশের ইতিহাসকে আরও পরিবর্তন করে দিতে। কিন্তু গণমানুষের তৈরি মানবঢাল সেদিন পারেনি চক্রান্তকারীদের মূল উদ্দেশ্য সফল করতে।
কিন্তু কেড়ে নিয়েছিলো ২৪টি প্রাণ। বিভীষিকাময় সেদিনের ছবিগুলো কেন যেন আজও একাত্তরকেই মনে করিয়ে দেয়। মনে করিয়ে দেয় ১৫ আগস্টকে। এভাবেই প্রতিক্রিয়াশীলরা বার বার এই বাংলার প্রগতিশীলতাকে ধ্বংস করতে হিংস্র হয়েছে। তাই বর্তমান রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ তাঁর বাণীতে বলেছেন, দেশের স্বাধীনতা ও গণতন্ত্রকে বিপন্ন করার জন্য প্রতিক্রিয়াশীল চক্র এখনও সক্রিয়। তাদের বিরুদ্ধে সম্মিলিত প্রতিরোধ ও ঐক্য গড়ে তুলতে হবে। মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে সকল গণতন্ত্রকামী দেশপ্রেমিক জনতা একটি আত্মমর্যাদাশীল ও সুখী সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়তে এগিয়ে আসবেন। আর তা করতে পারলেই শহীদদের আত্মত্যাগ সার্থক হবে।
২০০৪ সালের ২১ আগস্ট বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে আওয়ামী লীগ দলীয় কার্যালয়ের সামনে তখনকার সময়ে বিভিন্ন সময়ের বোমা হামলার প্রতিবাদে একটি সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সমাবেশ শেষে বিকাল সাড়ে ৫ টার দিকে বিক্ষোভ মিছিলের প্রস্তুতি চলছিলো। শেখ হাসিনা তাঁর বক্তব্য শেষ করে ট্রাকের উপর তৈরি মঞ্চ থেকে নামছিলেন। হঠাৎ গগনবিদারী শব্দ করে একে একে ১১ টি আর্জেস গ্রেনেড বিষ্ফোরিত হয়। মৃত্যুপুরিতে রুপান্তরিত হয় বঙ্গবন্ধু এভিনিউ। ১২ জন সেখানেই নিহত হয়। আইভি রহমান সহ আরও ১২ জন হাসপাতালে প্রাণ হারান। আহত হয়েছেন বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সহ আরও প্রায় ৩০০ জন।
এমন নৃশংস হামলার বিচার আজও শেষ হয়নি। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে শুরু হয় বিচারকাজ। সে সময় তৎকালীন চারদলীয় জোট সরকারের সাবেক উপমন্ত্রী ও বিএনপি নেতা আব্দুস সালাম পিন্টু, হরকাতুল জিহাদ প্রধান মুফতি হান্নান ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবরসহ ২২ জনকে আসামি করা হয়। পরে বৃহত্তর তদন্তে জিয়া পুত্র তারেক রহমান সহ আরও ৩০ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেয়া হয়। পাঁচ বছর আগে শুরু হওয়া এই বিচারকার্যে এপর্যন্ত ৭১ জনের সাক্ষ্য নেয়া হয়েছে।
বিচার প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলার মূল লক্ষ্য ছিল স্বাধীনতা, গণতন্ত্র শান্তি ও উন্নয়নের ধারাকে স্তব্ধ করে দেয়া। হত্যা, ষড়যন্ত্র, জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাস, দুর্নীতি ও দুঃশাসনকে চিরস্থায়ী করা। মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে ধূলিস্যাৎ করা। এ ধরনের নারকীয় হত্যাকান্ডের সঙ্গে জড়িতদের গ্রেফতার ও বিচার করা সরকারের নৈতিক দায়িত্ব।