প্রথম আলো থেকে নেয়া: যশোরের মনিরামপুর উপজেলার বিজয়নগর গ্রামে বর্বর নির্যাতনের শিকার হয়েছেন এক গৃহবধূ। ঘুমন্ত অবস্থায় তাঁর যৌনাঙ্গে ধারালো অস্ত্র ঢুকিয়ে দেওয়ার ঘটনার পরও থানায় মামলা হয়নি। পুলিশ কোনো তদন্তও করেনি।
অর্থের অভাবে চিকিৎসা করাতে পারছেন না দুই সন্তানের জননী ওই গৃহবধূ। যশোর জেনারেল হাসপাতালে গুরুতর অবস্থায় ১৫ দিন ধরে তিনি কাতরাচ্ছেন।
গৃহবধূর বাবা জানান, ৫ আগস্ট রাতে তিনি স্ত্রী, মেয়ে ও জামাতাকে নিয়ে বাড়ির বারান্দায় ঘুমিয়েছিলেন। রাত সাড়ে তিনটার দিকে কোনো ব্যক্তি তাঁর মেয়ের যৌনাঙ্গে ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করে পালিয়ে যায়। গুরুতর অবস্থায় প্রথমে মনিরামপুর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। অবস্থার অবনতি হলে যশোর জেনারেল হাসপাতালে তাঁকে ভর্তি করা হয়।
কে বা কারা এ হামলা করতে পারে, জানতে চাইলে ওই গৃহবধূ বলেন, তাঁর সঙ্গে কারও বিরোধ নেই। কাউকে তিনি সন্দেহও করতে পারছেন না। তিনি এখন শারীরিক যন্ত্রণা থেকে মুক্তি চান। আর এ জন্য তাঁর আর্থিক সহায়তার প্রয়োজন।
গৃহবধূর মা জানান, ভিটেমাটি ছাড়া কিছুই নেই। গরু বিক্রি করে ১০ হাজার এবং সুদে আরও হাজার দশেক টাকা এনে চিকিত্সার খরচ জোগাতে হচ্ছে। দুটো অস্ত্রোপচার করা হয়েছে। প্রতিদিন তিন-চার হাজার টাকা খরচ হচ্ছে।
এ ব্যাপারে নির্যাতিতা ওই নারীর চিকিৎসক যশোর জেনারেল হাসপাতালের সার্জারি বিভাগের জ্যেষ্ঠ কনসালটেন্ট এন কে আলম বলেন, তাঁর ক্ষত স্থানে দুটি অস্ত্রোপচার করা হয়েছে। তবে আরও চিকিৎসার প্রয়োজন।
মামলা নেয়নি পুলিশ
গৃহবধূ নির্যাতনের ঘটনায় থানায় মামলা নেয়নি পুলিশ। ঘটনার বর্ণনা দিয়ে গৃহবধূর বাবা ৯ আগস্ট মনিরামপুর থানায় একটি অভিযোগ দাখিল করেন। অভিযোগটি মামলা হিসেবে না নিয়ে সাধারণ ডায়েরি (জিডি) হিসেবে নথিভুক্ত করেন থানার দায়িত্ব কর্মকর্তা সহকারী উপপরিদর্শক প্রসেনজিত্। এর কারণ জানতে চাইলে মনিরামপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোশাররফ হোসেন প্রথম আলো ডটকমকে বলেন, বিষয়টি তাঁর জানা নেই।
তিনি জিডির তদন্ত কর্মকর্তা উপপরিদর্শক গোলাম হোসেনের মুঠোফোন নম্বর দিয়ে যোগাযোগের জন্যে পরামর্শ দেন।
যোগাযোগ করা হলে উপপরিদর্শক গোলাম হোসেন ‘আমি তো তদন্ত কর্মকর্তা নই। আপনি স্যারের সঙ্গে কথা বলেন’ এ কথা বলেই মনিরামপুর থানায় অবস্থান করা যশোরের সহকারী পুলিশ (খ-অঞ্চল) মোস্তফা কামালের কাছে মুঠোফোন ধরিয়ে দেন। এ ব্যাপারে মোস্তফা কামাল বলেন, ‘আমারও বিষয়টি জানা নেই। খোঁজ-খবর নিয়ে দেখতে হবে।’