মেল ইগো: আত্মাভিমান নয়, হীনম্মন্যতা

জান্নাতুল নাঈম পিয়াল:

যখন ক্লাস ওয়ান কিংবা টুতে পড়ি, এক মেয়ের সাথে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হতো। কোনো পরীক্ষায় ও ফার্স্ট হতো, আবার কোনো পরীক্ষায় আমি। ওই বয়সে যেমনটা হয়ে থাকে, আমার চেয়ে আমার রেজাল্টের ব্যাপারে বেশি উৎসাহী ছিল আমার মা। মূলত আমার সাথে ওই মেয়েটার যতটা না প্রতিদ্বন্দ্বিতা, তারচেয়ে আমার মায়ের সাথে ওই মেয়েটার মায়ের প্রতিদ্বন্দ্বিতা ছিল বেশি।

আমি কোনো পরীক্ষায় ওই মেয়েটার কাছে পরাজিত হলে, তাতে আমি ব্যথিত না হলেও ব্যথিত হতো আমার মা। ওই মেয়ের মায়ের কাছে আর সে মুখ দেখাতে পারবে না, এমন ছিল অবস্থা। তখন নিজের হতাশা দূর করার উপায় হিসেবে, মা আমাকে মারত না বা বকত না, শুধু একটা কথা বলত, “শেষ পর্যন্ত একটা মেয়ের কাছে হেরে গেলে!”

শুনতে হয়তো তার এই কথাটাকে খুব সামান্য লাগছে। কারণ কত ছেলেমেয়ে তো ছোটবেলায় পরীক্ষার রেজাল্ট নিয়ে বাবা-মায়ের কাছে প্রচুর কিল-চড় খেয়েছে, গালমন্দ শুনেছে। সে তুলনায় আমার মা আমাকে যেটা বলত, সেটাকে একেবারেই নির্বিষ মনে হতে পারে। কিন্তু এই নিতান্ত নির্বিষ কথাটাই আমার উপর যে প্রভাব ফেলত, তা হয়তো মারধর বা গালমন্দের কারণেও পড়ত না।

কেননা মা তো সরাসরি বলেই দিত, আমি একটা মেয়ের কাছে হেরে গেছি। এ কথা শোনার পর সেই ছয়-সাত বছরের আমি লজ্জায় মাটির সাথে মিশে যেতাম। তখন থেকেই যে আমি জানতাম, ছেলেদের অবস্থান সবসময় মেয়েদের উপরে। পড়াশোনাই হোক কিংবা জীবনের অন্য যেকোনো ক্ষেত্র, ছেলেরা মেয়েদের চেয়ে এগিয়ে থাকবে, এটাই স্বাভাবিক, এটাই হওয়ার কথা। কখনো যদি উল্টোটা হয়, তাহলে সেটা ওই হেরে যাওয়া ছেলেটার জন্য প্রচণ্ড রকমের লজ্জার একটা বিষয়। তাই আমি লজ্জা পেতাম, মনে মনে শপথ করতাম, পরের পরীক্ষায় আমাকে ফার্স্ট হতেই হবে।

কীভাবে মাত্র ছয়-সাত বছর বয়সেই আমি জীবনের এই মহাগুরুত্বপূর্ণ দর্শনটা জেনে ফেলেছিলাম যে ছেলেদের অবস্থান সবসময় মেয়েদের উপর, তা আজ আমার কাছে একটা রহস্য। কিছুতেই মনে করতে পারছি না, কবে কীভাবে এই ধারণার বীজ আমার মস্তিষ্কে রোপিত হয়েছে। তবে অনুমান করতে পারি, আরো অল্প বয়সে কোনোদিন হয়তো পড়ে গিয়ে ব্যথা পেয়েছি, কাঁদতে শুরু করেছি, তখন বড় কেউ আমার কান্না থামাবার জন্য বলেছে, “আরে বোকা ছেলে, মেয়েদের মতো কাঁদছ কেন! ব্যথা পেয়ে এমন ভ্যা ভ্যা করে কাঁদে তো মেয়েরা।”

সম্ভবত তখনই আমি প্রথম উপলব্ধি করতে পেরেছিলাম, ছেলেরা খুব শক্তিশালী, আর মেয়েরা অপেক্ষাকৃত দুর্বল। হতে পারে ছেলেদের শক্তিমত্তা আর মেয়েদের দুর্বলতার কারণ তাদের শরীর। সে কারণে ছেলেরা পড়ে গেলেও খুব বেশি আঘাত পায় না, কিন্তু মেয়েরা পায়। আবার এমনও হতে পারে, আসল শক্তি ও দুর্বলতার কেন্দ্রস্থল হলো মন। ছেলেদের মনের জোর বেশি, তাই শরীরে আঘাত পেলেও তারা কান্না চেপে রাখতে পারে, কিন্তু মেয়েরা ঠোঁট ফুলিয়ে কেঁদে দেয়।

তো সে যা-ই হোক, মূল বিষয় হলো, মায়ের মুখে একটা মেয়ের কাছে হেরে যাওয়ার কথা শুনে আমি লজ্জা পেতাম। তখন জানতাম না এই লজ্জাকে কী বলে। অনেক পরে, কোনো একদিন জানতে পেরেছি, এই লজ্জার কারণ হলো মেল ইগো। ছেলেদের ছেলে হয়ে জন্মাবার বদৌলতে এক ধরনের প্রবল আত্মাভিমান থাকে, যার নাম মেল ইগো। কোনো মেয়ের কাছে হেরে গেলে বা অপদস্থ হলে সেই মেল ইগো হার্ট হয়।

আবার শুধু হেরে যাওয়া বা অপদস্থ হওয়াই না, যেকোনো কারণে একটা মেয়ে যদি একটা ছেলের সামর্থ্য বা যোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তোলে, তাহলেও ছেলেটার মেল ইগো হার্ট হতে পারে। এখানে ছেলে শব্দটি দিয়ে পুরুষ আর মেয়ে শব্দটি দিয়ে নারীও বুঝে নিতে পারেন।

এই তো কদিন আগের কথা। শুনলাম, আমার বান্ধবীর সাথে ওর বাবার রাগারাগি হয়েছে, দুজনের কথা বলা বন্ধ। এটা একটা বিরল ঘটনাই বটে। কেননা অন্য অধিকাংশ বাবা-মেয়ের মতো, তাদের মাঝেও সম্পর্ক অতি মধুর। সেই তাদের মধ্যে কী এমন হলো, যে কারণে কথা বলাই বন্ধ? জানতে পারলাম, একে তো বান্ধবীর বাবার অফিসে ঝামেলা চলছে, এদিকে ডাক্তার দেখাতে গিয়েছিলেন সেখানেও ডাক্তার একগাদা টেস্ট করতে দিয়েছে। বাড়ি ফিরে তিনি স্ত্রী-কন্যার সাথে এসব নিয়ে উত্তেজিত হয়ে কথা বলার এক পর্যায়ে আমার বান্ধবীর ধৈর্যচ্যুতি হয়। সে তার বাবাকে বলে বসে, “বাইরে থেকে এসে এখন আমাদের উপর রাগ দেখাচ্ছ কেন? পারো তো শুধু আমাদের সাথে।”

এই “পারো তো শুধু আমাদের সাথে” কথাটাই ছিল বান্ধবীর বাবার জন্য ট্রিগার ওয়ার্ড। এই কথাটাতেই তার মেল ইগো এত বেশি হার্ট হয়েছে যে মেয়ের সাথে তিনি কথা বলা বন্ধ করে দিয়েছেন। শুধু ওই বান্ধবীর বাবাই নন, ছাপোষা মধ্যবিত্ত বাঙালি পুরুষদের মধ্যে অধিকাংশের জন্যই এটা একটা ট্রিগার ওয়ার্ড। কর্মস্থল থেকে শুরু করে হাটে-বাজারে সবখানে প্রতিনিয়ত তাদের লড়াই করে যেতে হয়, নানাভাবে অপমানিত-অপদস্থ হতে হয়, মাথা হেঁট করতে হয়। সেগুলোও তারা মুখ বুজে, দাঁতে দাঁত চেপে সহ্য করে। কিন্তু দিনশেষে বাড়ি ফিরে যখন তারা স্ত্রী-সন্তানদের মুখেও নিজেদের ব্যর্থতার কথা স্পষ্ট বাক্যে শোনে, তখন আর তাদের মাথার ঠিক থাকে না। তাদের মেল ইগো খুব বেশিমাত্রায় ক্ষতবিক্ষত হয়। সেখান থেকে অবিরাম রক্ত ঝরতে থাকে।

আবার এমন অনেক পুরুষকেও দেখা যায়, যারা তাদের স্ত্রীর অর্থনৈতিক বা সামাজিক সাফল্যে মনে মনে জ্বলতে-পুড়তে থাকে। স্ত্রীর মাসিক আয় যদি তাদের চেয়ে বেশি হয়, তারা প্রবল হীনম্মন্যতায় ভোগে, মানসিক যন্ত্রণায় ছটফট করে। ভাবে, গোটা পৃথিবী যেন তাদের দিকে তাকিয়ে অট্টহাসি হাসছে, আর বলছে, “ছি ছি! লোকটা বউয়ের টাকায় খায় পরে!” আবার কোনো কারণে যদি দেখা যায় সমাজে স্বামীর চেয়ে স্ত্রীর নাম-ডাক বেশি, তখনো ওই স্বামীকে অনেক ছোট হয়ে যেতে হয়। স্ত্রীর জনপ্রিয়তা তারা সইতেও পারে না, আবার এর বিরুদ্ধে কিছু করার মতো অবস্থাও তাদের থাকে না।

নিজেই এমন একজোড়া প্রেমিক-প্রেমিকাকে দেখেছি, যাদের মধ্যে একসময় প্রচুর ভাব-ভালোবাসা ছিল। প্রেমিকটি ছিল খুবই উদারমনা। প্রেমিকাকে অনেক ‘স্বাধীনতা’ দিয়ে রেখেছিল সে। যা-খুশি তা-ই প্রেমিকার করার সুযোগ ছিল। এমনকি প্রেমিকা যাতে তার অভীষ্ট লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারে, সেজন্য প্রেমিক নিয়মিত তাকে উৎসাহ-অনুপ্রেরণাও জোগাত। কিন্তু তাদের মধ্যে সমস্যার সূচনা হলো তখন, যখন প্রেমিকা প্রেমিকের চেয়ে বেশি সফল হয়ে গেল। যে প্রেমিক এতদিন দারুণ উদারমনা ছিল, তার পক্ষেও নিজের চেয়ে প্রেমিকার অধিক সাফল্যকে মেনে নেয়া সম্ভব হলো না। ঈর্ষা কিংবা নিরাপত্তাহীনতার ফাঁদে পড়ে, প্রেমিকার থেকে ক্রমশ দূরে সরে যেতে লাগল সে, এবং এক পর্যায়ে তাদের কাটাকাটিও হয়ে গেল। বলাই বাহুল্য, প্রেমিকটির ঈর্ষা বা নিরাপত্তাহীনতার নেপথ্যেও ছিল তার মেল ইগো হার্ট হওয়া।

সুতরাং মেল ইগো জিনিসটা আসলে কী, তা নিশ্চয়ই এতক্ষণে কারো বুঝতে বাকি নেই। কিন্তু কোথা থেকে এই মেল ইগোর উৎপত্তি? উত্তরটা খুবই সহজ। ছোটবেলায় যে কারণে আমি মায়ের কথায় লজ্জিত হতাম, ঠিক সেটাই। নারীর অবস্থান পুরুষের চেয়ে উপরে উঠে যাওয়াকে পুরুষের জন্য অপমান বলে মনে করা। আমাদের সমাজটা এত বেশি পুরুষতান্ত্রিক যে, যেকোনো ক্ষেত্রে পুরুষের চেয়ে নারী এগিয়ে থাকবে, এ যেন মানাই যায় না! প্রত্যেক সফল পুরুষের পেছনে একজন নারী আছে কথাটা খুব সহজে মেনে নেয়া যায়। কিন্তু একজন পুরুষের সামনে একজন সফল নারী আছে, এ কথা যেন কিছুতেই মেনে নেয়া যায় না। কোনো পুরুষ যদি খুব করে চায়ও মেনে নিতে, আশেপাশের মানুষজন তাকে প্ররোচিত করে, তাতিয়ে দেয়, তার ভেতরের ‘পৌরুষ’ জাগিয়ে তোলে। এসবের বিরুদ্ধে লড়াই করেও নিজের অবস্থান ধরে রাখার মতো মনের জোর থাকে খুব কম পুরুষেরই।

অথচ চিন্তা করে দেখুন, কত ভালোই না হতো যদি আমাদের সমাজের মানসিকতা এতটা বিকৃত না হতো! যদি পুরুষের নারীর চেয়ে এগিয়ে থাকা যতটা স্বাভাবিক, নারীর পুরুষের চেয়ে এগিয়ে থাকাও ততটাই স্বাভাবিক হতো! কিন্তু তা বাস্তবে হয় না। পুরুষতান্ত্রিক মানসিকতায় শুধু পুরুষরাই না, নারীরাও সমানভাবে আচ্ছন্ন। তাই তো আমার মায়ের মতো আরো অনেক মা-ও ছোটবেলা থেকে ছেলে সন্তানকে শিখিয়ে আসে, “তোমাকে মেয়েদের চেয়ে এগিয়ে থাকতে হবে।” আর সরাসরি এ শিক্ষা তাদের দেয়া যদি না-ও হয়, শিশুরা বড় হতে হতে পারিপার্শ্বিক সমাজবাস্তবতা চাক্ষুষ করে নিজেরাই এটা শিখে যায়।

মজার ব্যাপার হলো, নারীরাও অনেক সময়ই পুরুষদের মেল ইগোকে নিজেদের স্বার্থ কায়েম কিংবা আত্মসন্তুষ্টি লাভের লক্ষ্যে ব্যবহার করে। এবং এটা তারা সবসময় সচেতনভাবেই করে না, অনেক সময় নিজেদের অজান্তেও করে ফেলে। এর পেছনেও মূলত ওই পুরুষতান্ত্রিক মানসিকতাটাই দায়ী। যেসব নারী তাদের পুরুষ সঙ্গীর মেল ইগোকে হার্ট করে, তারাও প্রকারান্তরে মেনেই নেয় যে নারীর চেয়ে পুরুষের এগিয়ে থাকাই স্বাভাবিক, এর ব্যতিক্রম কিছু ঘটলে তা অস্বাভাবিক। তাই অনেক নারীই আছে, যারা পুরুষের চেয়ে এগিয়ে যাওয়ার পর, বারবার পুরুষদেরকে সেটা স্মরণ করিয়ে দিতে পছন্দ করে। তাছাড়া, তারা সেই ছোটবেলা থেকেই শুনে এসেছে যে তারা পুরুষদের থেকে পিছিয়ে। ফলে পুরুষদের চেয়ে এগিয়ে যাওয়ার পর তারা যে সেটি নিয়ে আত্মতৃপ্তিতে ভুগতে চাইবে, বারবার সেই আত্মতৃপ্তির বহিঃপ্রকাশও ঘটাবে, এতে আশ্চর্যের কী আছে!

সব মিলিয়ে বিষয়টা এখন এমন দাঁড়িয়েছে যে, পুরুষদের পক্ষে এই মেল ইগো বিসর্জন দেয়া যতটা কঠিন, নারীদের পক্ষে পুরুষদের মেল ইগোকে আঘাত করার প্রবণতা থেকে বেরিয়ে আসাও ঠিক ততটাই কঠিন।

পুরুষরা অন্য আর যেকোনো ক্ষেত্রে যতটাই অনুভূতিশূন্য হোক না কেন, নারীদের চেয়ে পিছিয়ে পড়লে তারা স্পর্শকাতর হবেই। এমনকি কোনো নারী স্রেফ মজা করেও যদি বলে, “তুমি পারবে না”, সেখানেও তারা সহজেই ট্রিগার্ড হয়ে যায়। অনেক মনোবিজ্ঞানী তো এ-ও মনে করেন যে, নারীদের মুখে না পারার কথা শুনে পুরুষদের ট্রিগার্ড হয়ে যাওয়ার পেছনে তাদের সেক্সুয়াল পারফরম্যান্স এংজাইটিও একটা বড় ভূমিকা পালন করে। যদি নারীরা বলে, “তুমি এই বোতলের মুখটা খুলতে পারবে না”, পুরুষরা সেটারও ব্যাখ্যা দাঁড় করায় যে নারীরা বলছে, “তুমি আমাকে সেক্সুয়াল স্যাটিসফেকশন দিতে পারবে না!”

এদিকে আজীবন যে নারীরা পুরুষদের আগ্রাসনের কারণে পিছনে পড়ে থাকে, তারা কোনো একটা জায়গায় পুরুষদেরকে খাটো করার সুযোগ পেলে, সহজে সে সুযোগ হাতছাড়া করতে চায় না। বিশেষ করে যৌন জীবনের সফলতা নিয়ে পুরুষরা একটু বেশিই মানসিক উদ্বেগে ভোগে বলে, সত্যি সত্যিই এই জায়গাটাকে লক্ষ্য করে তাদের মেল ইগোকে ধসিয়ে দেয়ার মোক্ষম উপায় বলে মনে করে অনেক নারী। ফলে পুরুষদের সেক্সুয়াল পারফরম্যান্স এংজাইটি কখনো কখনো ইরেকটাইল ডিসফাংশনেও রূপ নেয়। তবে সেটা ভিন্ন প্রসঙ্গ, অন্য কোনোদিন আলাপ করা যাবে।

শেষ করার আগে আরেকটা মজার বিষয় উল্লেখ করা যাক। না পারার কথায় পুরুষদের মেল ইগো হার্ট হয় বটে, তবে কিছু কিছু ক্ষেত্রে এই না পারাকেই নিজেদের পৌরুষের পরিচায়ক বলেও কিন্তু মনে করে অনেকে। বিশেষত যেসব কাজকে পুরুষতান্ত্রিক সমাজ ‘জেন্ডার রোল’ হিসেবে শুধু নারীদের জন্য আলাদা করে রেখেছে। যেমন: রান্না করা, কাপড় কাচা, ঘর গোছানো, সন্তানের দেখভাল করা ইত্যাদি। যে পুরুষের নারীর মুখে অন্য যেকোনো না পারার কথা শুনলেই মেল ইগো হার্ট হয়, সে-ও কিনা এই বিশেষ কাজগুলো করতে না পারাকে গৌরবের বিষয় বলে মনে করে। বলে, “আরে, এগুলো আমি কেন করব! এগুলো তো মেয়েদের কাজ!”

হ্যাঁ, এভাবেই যুগ যুগ ধরে নারী-পুরুষের কাজের মাঝে সদম্ভে দাঁড়িয়ে আছে পুরুষতন্ত্রের খুঁটি। যতদিন এই পুরুষতন্ত্রকে হটানো না যাবে, ততদিন মায়েরা তাদের ছেলে সন্তানকে মেয়েদের কাছে হারা নিয়ে খোঁটা দেবে, সমাজ ‘ব্যর্থ’ স্বামীর উপর হাসবে স্ত্রীর চেয়ে আয় কম হওয়ায়, সারাজীবন নিষ্পেষিত-নিপীড়িত নারী সুযোগ পেয়ে পুরুষের উপর নিজের শ্রেষ্ঠত্বের কথা ঢাকঢোল পিটিয়ে প্রচার করবে, এদিকে নির্দিষ্ট কিছু কাজকে জেন্ডার রোল আখ্যা দিয়ে নিজের অক্ষমতা ঢাকার চেষ্টা করবে অলস, অকর্মণ্য পুরুষ।

লেখক: শিক্ষার্থী
গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগ
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।

শেয়ার করুন:
Copy Protected by Chetan's WP-Copyprotect.