উইমেন চ্যাপ্টার ডেস্ক: মুসলিম ব্রাদারহুডের সমর্থকদের সরাতে গিয়ে দেশটির সেনাবাহিনীর সাথে ব্যাপক সংঘর্ষে দুশরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছে মিশরের কায়রোতে। এ ঘটনায় মাসব্যাপী জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছেন কর্তৃপক্ষ।
দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বরাত দিয়ে বিবিসি বলছে, মিশরে এখন পর্যন্ত ২৩৫ জন নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে ৪৩ জন পুলিশ সদস্যও রয়েছেন।
এদিকে দেশটির ক্ষমতাচ্যুত প্রেসিডেন্ট মোহাম্মেদ মুরসির নেতৃত্বাধীন দল মুসলিম ব্রাদারহুড দাবি করছে, নিরাপত্তা বাহিনীর অভিযানে দু’হাজারেও বেশি মানুষ প্রাণ হারিয়েছে। এক রিপোর্টে জানা যাচ্ছে, সহিংসতায় চারজন সাংবাদিক নিহত হয়েছেন। এরা হলেন, স্কাই নিউজ এর ক্যামেরাম্যান মিক ডিয়ানে, দুবাই-ভিত্তিক এক্সপ্রেস সাংবাদিক হাবিবা আবদেলাজিজ, আল আখবর নিউজপেপারের আহমেদ আবদেল গাওয়াদ এবং নিউজ ওয়েবসাইট আরএনএন এর ফটো সাংবাদিক মোসাব এল শামি।
এক টেলিভিশন বার্তায় প্রধানমন্ত্রী হাজেম এল বেবলাওয়ি এই হতাহতের জন্য দু:খ প্রকাশ করে বলেছেন, দেশে শান্তি ফিরিয়ে আনতে জরুরি অবস্থার মতো পদক্ষেপ গ্রহণ জরুরি হয়ে পড়েছিল। যত শিগগির সম্ভব জরুরি অবস্থা প্রত্যাহার করা হবে।
ওদিকে এই অভিযান শুরু হওয়ার পর মুসলিম ব্রাদারহুড সমর্থকদের আবারও রাস্তায় নেমে আসার আহ্বান জানিয়েছে এবং পুলিশ এ ধরনের একটি গ্রুপকে হঠিয়ে দিয়েছে বলে জানা গেছে।
তবে কায়রোর পশ্চিমে একটি মসজিদের বাইরে হাজার হাজার লোক জড়ো হয়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে। এখানে পুলিশের একটি গাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয়া হয়।
কায়রোর দক্ষিণে ফাইয়ুম নামক স্থানে দুটি গির্জায় হামলা হয়েছে। মুসলিম ব্রাদারহুডের বিক্ষোভ কায়রোর সীমানা ছাড়িয়ে দেশের বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে পড়েছে বলে খবর পাওয়া যাচ্ছে। গিজা, আসিউত এবং মিনিয়া শহর থেকেও নিরাপত্তা বাহিনীর এবং ব্রাদারহুড সমর্থকদের সংঘর্ষের খবর পাওয়া যাচ্ছে।
মিশরের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর আলেকজান্দ্রিয়ায় মোরসি-সমর্থকরা সড়ক অবরোধ করেছেন। বেশ কিছু সড়ক বন্ধ হয়েছে।
বুধবারের এই সহিংসতার ঘটনায় আন্তর্জাতিকভাবে নিন্দা জানানো অব্যাহত রয়েছে। তুরস্ক এটিকে হত্যাযজ্ঞ হিসেবে অভিহিত করে বলেছে, বিক্ষোভকারীদের বিরুদ্ধে শক্তি প্রয়োগ সম্পূর্ণ অগ্রহণযোগ্য। আর ইরান এই বলে সতর্ক করে দিয়েছে যে, মিশরে গৃহযুদ্ধ শুরুর ক্রমবর্ধমান আশংকা দেখা দিয়েছে। কাতার মুসলিম ব্রাদারহুড সমর্থকদের ওপর নিরাপত্তা বাহিনীর হামলার নিন্দা করেছে। ইউরোপীয় ইউনিয়ন মিশর কর্তৃপক্ষের প্রতি সর্বোচ্চ সংযম প্রদর্শনের আহ্বান জানিয়েছে।