আপনার হাঁটার ‘পথ’টা সঠিক কিনা ভেবে দেখুন

ফাহমিদা খানম:

আমি আমার চারপাশে এমন কিছু মানুষ দেখেছি যারা পুরুষ হয়েই বেমালুম খুশী – মানুষ কিংবা মানবিক হতে বিন্দুমাত্র আগ্রহ তাদের হয় না। আসলে পুরুষতন্ত্র শেখায় – তুমি বলিষ্ঠ হও, মেধাবী হও, ডাক্তার হও, ইঞ্জিনিয়ার হও, বিসিএস ক্যাডার হও – তারাও সে পথেই হাঁটে নিজেদেরকে যোগ্যতর করতে – কয়টা পরিবার মানবিক গুণাবলি শেখায়?

ঘর যে সবচেয়ে বড়ো শিক্ষালয় আর একজন শিশু শৈশবে যা দেখে, শিখে – আজীবন সেটাই তার ভিতরে থাকে – শিক্ষা, সার্টিফিকেট সাময়িক পরিবর্তন ঘটালেও একটা পর্যায়ে এসে সবাই নিজের পিতা –মাতাকেই অনুসরণ করে, খুব কম মানুষই পারেন সেটা ত্যাগ করতে। এটা যে অন্যায় সেটা কিন্তু আমি বলছি না, কিন্তু খারাপ স্বভাব গর্বভরে বহন করা শুধু খারাপই না — লজ্জার বিষয়ও। কিন্তু এই বোধ, বিবেক অনেকেরই থাকে না।

অনেক উচ্চশিক্ষিত মানুষ দেখেছি আমি যারা নিজ স্ত্রী, সন্তানদের কাছের মানুষ হওয়ার চেয়ে চাপিয়ে দিয়েই খুশী – কারণ সে সংসারের প্রধান – সে যা বলবে সেটাই মেনে নিতে হবে, এটা কতোটা সুস্থতা? স্ত্রীর সুখ-দুঃখের সাথী হবার কথা চিন্তাই করতে পারে না — সন্তানের মা আর বিনা পয়সার রাঁধুনি বানিয়েই এসব মানুষ মনে করে দায়িত্ব শেষ।

বিয়ে একটি সামাজিক প্রথা — এখানে মেয়েদের পরিবার সবার আগে দেখে নিরাপত্তা, তাই প্রতিষ্ঠিত পাত্রই খুঁজেন। বাইরে থেকে দেখে একজন মানুষকে বোঝাও সহজ না। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে বিয়ের পরেই অনেকেরই মোহমুক্তি ঘটে বাস্তবতায় এসে। একজন স্ত্রী ভুল করলে তাকে ঠিক করার দায়িত্ব শ্বশুরকুল খুব আগ্রহ সহকারে নিলেও একজন পুরুষের বেলায় সেটা আর হয় না, কারণ পুরুষতন্ত্র নিজেদের স্বার্থেই আগেই বানিয়েছে – ভুল হলেও এটা ব্যাপার না, ছেলেরা একটু আধটু রগচটা, ঘাউড়া, ত্যাড়া হয়ই!

আর মেধাবী হলে তো সোনায়–সোহাগা। এদের কে শোধরাবে? এদের সংগী বা সন্তানদের কথা ভাবুন – এরাও এক সময় বড়ো হবে, বিয়ে করবে স্বামী হবে, বাবা হবে – নিজের বাবাই আদর্শ হবে, আর প্রজন্ম থেকে প্রজন্ম এভাবেই শিকড় বাড়িয়ে যাবে খুব অল্প কয়জন আছে যারা নিজেদের শোধরাবে — তাদের কথা আমি কিন্তু লিখছি না।

লেখক: ফাহমিদা খানম

উচ্চশিক্ষিত হলেই সে ভালো হবে এমন ভাবার কোনো অবকাশ নাই। সালেহাকে তার ডাক্তার স্বামীই মেরেছিল — সনদ তাকে বদলাতে কিন্তু পারেনি, শহরে বড় হওয়া মেয়েগুলোকে মা- বাবা প্রতিষ্ঠিত পাত্র পেলেই আগপিছ না ভেবেই বিয়ে দেন। এই মেয়েগুলো না পারে নিজেদের সেখানে মানিয়ে নিতে, না পারে স্বামীদের ম্যানার্স শেখাতে, শেখার ইচ্ছেই থাকে না অনেক পুরুষের – সে ভাবে আমি মেধাবী বলেই মেয়ের পরিবার আমাকে বেছে নিয়েছে।

খুব কাছ থেকে দেখা কিছু জিনিস শেয়ার করবো আজ —

# একজনকে দেখেছি তার স্ত্রী খুব একটা মানুষের সাথে মিশতো না। একবার ভদ্রলোক বাড়ি থেকে ফোন পেয়ে হুট করেই চলে যাবার পরদিন বাচ্চা ভয়ানক অসুস্থ হয়ে গেলো, প্রতিবেশী বলে সাহায্য চাইতে আসার পর আমি ক্লিনিকে নিয়ে যেতে চাইলাম, তখন সরকারি হাসপাতালে তেমন চিকিৎসা হতো না – কিছুক্ষণ পর রেডি হয়ে গিয়ে দেখি উনি মূর্তির মতো বসে আছেন। আমাকে বললেন – আপা টাকা-পয়সা কখনও আমাকে দেয় না, যাবার আগে এই ৫০০ টাকা দিয়ে গেছে। আপনি সরকারি হাসপাতালেই নিয়ে চলুন।
স্তম্ভিত হলাম কারণ উনার স্বামী বেশ উঁচু পদেই চাকুরি করেন কিনা!

# আরেক ভদ্রলোককে দেখতাম সব জায়গায় স্ত্রীকে নিয়ে যেতেন – ভালোই লাগতো। তবে বউটা সবসময় চুপ থাকতো আর কারো বাসায় যেতো না। একদিন কথায় কথায় জানালেন, সংসারের কোনো বিষয়ে উনার মতামতের দুই আনাও দাম নেই। বউ কোথায় কী শাড়ি পরবে, গহনা পরবে, বাসায় কী রান্না হবে, কোনো দাওয়াতে কী নেয়া হবে- সবই স্বামী ঠিক করেন। উনার নাকি নিজেকে শো-পিসের পুতুল মনে হয়, তাই ইচ্ছে করেই সবার থেকে দূরে থাকেন। এই স্বামীও সরকারি আমলা! ব্যাটা লোকদেখানো ভালবাসার অভিনয় ক্যান করিস?

# পরিচিতা একজন নেট ব্যবহার করতে জানেন না বলে স্বামী তাকে ‘খ্যাত’ বলতো, আর বলতো – গেরামের মেয়েরাও তোমার চেয়ে স্মার্ট। বেচারি শিখে নিলেন, কারণ এটা তেমন শক্ত কাজ তো আর না। বিপত্তি শুরু হলো তারপরেই, উনি যাই শেয়ার করেন স্বামী আর শ্বশুরবাড়ির মনে হয় তাদেরকে উদ্দেশ্য করেই এটা করেছে। এখন উনার প্রতি নতুন আইন জারি হয়েছে যা শেয়ার করবেন আগে স্বামীকে দেখাতে হবে।
হায়রে পুরুষ! কই যাবে মেয়েরা? উনার স্বামীও বেশ ভালো পদেই চাকুরি করেন।

# আরেকজনকে চিনি – খুবই ফুর্তিবাজ টাইপের মেয়ে। জন্ম বড়ো হওয়া, লেখাপড়া সবই শহরে, একটু আড্ডাপ্রিয় – যেখানেই যায় ছবি তুলে এফবিতে দেয়। শ্বশুরবাড়ির ধারণা বউ ছেলের টাকাপয়সা সব এভাবেই নষ্ট করে, তাই ফোনে ছেলের কাছে ঘ্যান ঘ্যান করে। আর স্বামীও বলে, কী দরকার? ফলাফল – সে মেয়ে এখন আগের মতো বের হয় না, ছবি দেয় না– কী দরকার অশান্তি বাড়ানোর! আমার ওকে দেখলে মনে হয় একটা প্রজাপতিকে কেউ খাঁচায় পুরেছে। উনার স্বামী প্রকৌশলী।

# একজন স্বামীর মনে হলো তার স্ত্রী নেটেই একজনের সাথে জড়িয়েছে, বউ পাসওয়ার্ড দিতে অস্বীকার করার পরে কীভাবে জানি উনি স্ত্রীর মোবাইলে ঢুকে কিছু লিখা পেলেন – তারপর স্ত্রীর বুক বরাবর লাথি দিলেন – হাসপাতালে নেবার পর জানা গেলো বুকের হাড় ভেঙ্গে গেছে। ভুল করলে কি সেটা শোধরানো যেতো না! মাঝবয়সী একজনকে শুধু লেখার সূত্র ধরে এভাবে মারার অধিকার কে দিয়েছে? একই কাজ পুরুষ করলে বউরা কি লাথি মেরে হাড় ভেঙ্গে দেয়? বিচার হয়নি, কারণ উনি একজন মেজর – কোথাও কেসই নেয়নি।

# ছুটির দিনে এক বন্ধুর বাসায় আরেক বন্ধু সস্ত্রীক বেড়াতে গিয়ে দেখে সেই বন্ধু ফ্যান পরিস্কার করছে, স্ত্রীরা আড়াল হতেই বেড়াতে আসা বন্ধু বললো—
“ তুই এসব কাজ করিস? বিয়ের পর থেকে বউ অনেক বলছে, কিন্তু আমি এই ফাঁদে পা দেইনি,ঘরের কাজ শুধুমাত্র নারীদের”
ভাগ্যক্রমে দুই স্ত্রীই কথাটা শুনে ফেলে। প্রশ্ন হলো – সংসার দুজনের হলে এই কথা কীভাবে বলে? বাচ্চাদের দেখা, স্কুলে নেওয়া, কোচিংয়ে নেওয়া, বাসায় মুরুব্বী থাকলে তাকে দেখা – সবই করে নারী। একজন পুরুষ বাইরে যাই করুক না কেনো বাসায় সে স্বামী, বাবা — যে পুরুষ ভাবে এসব নারীদের কাজ, তার বিয়ের আগেই কাউন্সেলিং দরকার ছিলো।

সপ্তাহে ২/১ দিন তবুও পুরুষদের ছুটি থাকে, ৩৬৫ দিনের মধ্যে নারীর ছুটি কয়দিন? দায়িত্ব আর কর্তব্যের ভিড়ে নিজেকে হারিয়েই ফেলে নারী।
দুজনেই সরকারি চাকুরি করে, কিন্তু মানসিকতার পার্থক্য দেখেন!

# বিয়ের কয়েক বছর পরেই এক মেয়ের ডিপ্রেশন ধরা পড়ে, ততদিনে সন্তানের মা — শরীর খারাপ দেখলেই বউকে বাপের বাড়ি দিয়ে আসে। মা-বাবা, ভাইয়েরা প্রতিষ্ঠিত পাত্র দেখেই বিয়ে দিয়েছিল, এখন ভুক্তভোগী। জামাই কথায় কথায় উল্টো ফোঁড়ন কাটে, না জানিয়ে অসুস্থ মেয়েকে শ্বশুরবাড়ি গছিয়ে দিয়েছে, ডাক্তারের কাছে গেলে কথা শুনতে হতে পারে তাই যায় না – এমনই সেয়ানা পাবলিক!
উনি আইটি ইঞ্জিনিয়ার।

# আরেকজনকে দেখতাম নিজের যোগ্যতায় ভালো পদে আছেন বলে বেশ অহংকার করতেন। কিন্তু স্ত্রী বা সন্তানদের সাথে গ্যাপ রেখে চলতেন, যাই হোক বাচ্চারা শখ করে একটা বিড়াল এনেছিল – অবোধ প্রাণী একদিন না বুঝেই উনার খাবারের সময় পায়ের কাছে ঘুরঘুর করছিল – উনি সজোরে লাথি মেরে নিজের পৌরুষত্ব দেখালেন। মেয়েটা আমাকে বলেছিল, সে যদি বিদেশে পড়ার সুযোগ পায়, আর কখনো ফিরবে না – বাবার আচরণে তারা তিন ভাইবোন চরম বিরক্ত। সন্তানদের কাছে কিছু আশা করার আগে নিজের ভুল দেখবেন কি এই বাবা? মনে হয় না।

# আত্মীয়া এক মেয়ে প্রাইভেট ব্যাংকে জব করতো, বিয়ের পর বিভিন্ন ঝামেলা দেখে নিজেই চাকুরি ছেড়ে দিলো। স্বামী অসম্ভব মা অন্ত:প্রাণ, উনার কথা ছাড়া কিছুই করে না – বেতন এনে পুরোটা মাকে দেন, সবাই উনার কাছ থেকেই নেয়। চিন্তা করুন একটা চাকুরি করা মেয়েকেও এখন হাত পাততে হয়! জমজ দুই বাচ্চা হয়েছে বলে মেয়েটা এখন একদম চুপই হয়ে গেছে। যে স্বামী বউয়ের হাতে টাকা দিতে পারে না, সে স্বামী হবার উপযুক্ত কি? ছেলে ভাবছে মায়ের সেবা করে আমি দায়িত্ব করছি, সে কি জানে স্ত্রীর প্রতি দায়িত্ব কী?
ওই ব্যাটা একজন সিএ।

এর বিপরীত চিত্র কি নেই? আছে, সেটাও আছে, দুই একটার বর্ণনা দেই —

# একজন ভদ্রলোকের স্ত্রীর বাচ্চা হবার পরে বেশ সিক ছিলেন, উনি ভোরে উঠে বাচ্চার কাঁথা কাপড় ধুয়ে, টেবিলে নাস্তা রেখে অফিসে চলে যেতেন – উনার স্ত্রীর কাছেই শুনেছিলাম উনার শ্বশুর নাকি
শাশুড়ি অসুস্থ হলে বাচ্চাদের নিয়ে যা যা করতেন সেটাই শিখেছে সন্তানেরা।

# আরেকজনকে দেখেছি অফিসের বাইরে উনার অন্য জগত ছিলো না। স্ত্রী দ্বিতীয় বাচ্চা হবার পর থেকেই বিছানায় – বাজার, রান্না, বাচ্চাদের দেখাশোনা একাই করতেন। একদিন জিজ্ঞেস করেছিলাম – আপনার ক্লান্ত লাগে না ভাই? উনি উত্তর দিয়েছিলেন, আমার সন্তানের মা হতে গিয়েই ওর এই অবস্থা, আমি তো দায়িত্ব এড়াতে পারি না।

# আরেক স্বামী স্ত্রীর কাছ থেকে সবই গোপন রাখেন – উনার ধারণা আমি চাকুরি করি, আমার টাকা আমি যা ইচ্ছা করবো, স্ত্রীর সাথে শেয়ার করবো কেনো? স্ত্রী কিছু বললেই খোঁটা দেয় – আমি খাওয়াই, পরাই, তোর বাপ, ভাইয়েরা খাওয়ায় না — চিন্তা করুন কত অসভ্য মানুষ এরা? উনিও সরকারি আমলা, কিন্তু তার পরিবার তাকে স্ত্রীকে সম্মান করা শেখায়নি, তিনিও শেখেননি। বরং মাঝে মধ্যে বাবার বীরত্ব নিয়ে গল্প করে – কীভাবে বাবা নুন থেকে চুন খসলে মাকে নির্যাতন করতো সেই গল্প।

# একজন অনেক কাঠখড় পুড়িয়ে প্রকৌশলী হলেন – খুবই ইচ্ছা উচ্চবিত্ত পরিবারে বিয়ে করবেন। যেহেতু একদম গ্রাম থেকে উঠে এসেছেন তাই খুঁটি দরকার। বিত্তবান একজন বাবা কিনে নিলেন তাকে। এরপর বউ যা বলেন, সেটাই করতে বাধ্য উনি। কারণ মেয়ে খুবই বাবার আহ্লাদী, বাসায় উনার কথার কোনও দাম নেই – ফলাফল নারীরা সামান্য অধিকার নিয়ে কোথাও কিছু লিখলে উনার মাথা গরম হয়ে যায়, সবাইকে নারীবাদী লাগে, যেহেতু বাসায় কিছু বলতেই পারেন না তাই যেখানে সুযোগ পান তুলোধুনো করেই ছাড়েন। কথা হলো নিজেকে বিক্রি করার আগে ভাবেননি কেনো?

প্রেম করে বিয়ে করলেই যে মেয়েরা সুখী হবে সেই গ্যারান্টি কিন্তু নাই — ব্যাপারটা হলো একজন নারীকে সম্মান করা যেটা এদেশের পরিবার থেকে ছেলেদের শেখানো হয় না, একেই ছেলে তারপরে আবার পাত্রপক্ষ কিনা! সেদিন এক বিয়েতে দেখি সবাই উপস্থিত শুধুমাত্র পাত্র আর তার কাছের দুইএকজন ছাড়া – দ্বিতীয় ব্যাচের খাওয়া শেষ হবার পর তাহাদের আগমন হইলো – কেউ একজন জিজ্ঞেস করার পর উত্তর শুনলাম – আমরা পাত্রপক্ষ হুম, পাত্রের দাম বুঝাতে কি এটা বললো ? পাত্রী কি বানের জলে ভেসে আসা কিছু ? পাত্রপক্ষ হইয়া আপনারা কি দুনিয়া উল্টাইয়া ফেলছেন ? বোধ ,বিবেক না থাকলে আপনার সনদ পুড়িয়ে ফেলেন কারণ মুখস্ত করে পরীক্ষায় খাতায় উগরে আপনি সার্টিফিকেট নিয়েছেন মাত্র – মানুষ হতে পারেননি ।

শুধুমাত্র অশিক্ষিত মানুষেরাই বউকে অত্যাচার করে না –সার্টিফিকেটধারীরাও কম যায় না, কয়জন জানেন সেই হিসাব? বিয়ে মানে সুখ-দুঃখে একে অপরের হাত ধরে রাখা – স্বামী বা স্ত্রী একে অপরের পরিপূরক হওয়া, স্ত্রীকে সম্মান, মূল্যায়ন না করলে অজান্তে আপনার সন্তান তাই শিখবে, সবসময় ভাবতে হবে আমার দেখানো পথেই হাঁটবে সন্তানেরা – এই বোধটুকু থাকা খুবই জরুরি। আপনার মা- বাবার দেখানো পথ ভুল হতেও পারে, নিজেকে আয়নায় দেখুন। ক্যাডারভুক্ত হইলেই যে সে মানুষ হবে এমন ভাবার অবকাশ নাই, সার্টিফিকেট একটা সনদ মাত্র, সেটা আপনার ভেতরবাড়ি বদলাতে পারবে না।

# এটা পড়েই অনেকে তেলেবেগুনে জ্বলে উঠবেন – আপনারা অন্ধ, কালা, বোবা হয়েই থাকুন – এসব পত্রিকা কিংবা সংবাদে আসবে না, কারণ মধ্যবিত্তরা চক্ষুলজ্জায় চুপ করে থাকে, যে ঘটনাগুলো লিখেছি সব আমি নিজেই দেখেছি, মাঝেমধ্যে তীব্র আক্রোশে ফেটে পড়তে ইচ্ছে করে যখন দেখি উচ্চশিক্ষিতা মেয়েরাও বলির পাঁঠা হয়ে দিন কাটায়!

নিজেদের সুপারম্যান ভাবা এরা যদি মানবিকতার পোশাক গায়ে দিতো সমাজ, সংসার সত্যিই পালটে যেতো। পুরুষদের বলতে ইচ্ছে হয় আগে মানুষ হও, মানবিক হও — তারপর দায়িত্ব নিতে শিখো, স্বামী বা বাবা হওয়া এতো সহজ নাহ – অবশ্য জনক আর বাবার মাঝে অনেক পার্থক্য এটাই বুঝে কয়জন? এদেশে জনক হয়েই বেশিরভাগ পুরুষ খুশি, বাবা হতে চায় কই? স্বামী হয়ে স্ত্রীর কষ্ট না বুঝতে চাইলে বিয়ের কী দরকার? জৈবিক চাহিদার জন্যে বিয়ে?

পরিবার আসল শিক্ষালয় – অর্থ উপার্জন করেই সংসারের প্রধান হলে হবে না, মানবীয় গুণাবলী নিজের মধ্যে ধারণ করতে হবে, যে রাস্তায় আজ আপনি হাঁটছেন সে রাস্তায় একদিন সন্তানেরা হাঁটবে — তাই ভাবুন, ভাবুন এবং ভাবুন আপনি আদৌ এর উপযুক্ত কিনা?

১২/১১/১৯

শেয়ার করুন: