হত্যা তালিকায় মন্ত্রীসহ ১২ জনের নাম!

Ansarullah Jongiউইমেন চ্যাপ্টার: ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) জানিয়েছে, তারা রাজধানীর বছিলায় উগ্রপন্থী সংগঠন ‘আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের’ প্রধান মুফতি জসীম উদ্দিন রাহমানীর কার্যালয় থেকে ১২ জনের ছবিসহ একটি তালিকা উদ্ধার করেছে। এদের হত্যার পরিকল্পনা করা হয়েছিল বলে ধারণা করা হচ্ছে।

প্রায় দেড় ঘণ্টা ধরে চলা এই তল্লাশিতে কম্পিউটার, ল্যাপটপ, বেশকিছু বই এবং অর্ধ শতাধিক সিডি জব্দ করা হয়। একটি অনলাইন পত্রিকা এ খবর জানায়।

এর আগে সোমবার দুপুরে বরগুনার দক্ষিণ খাজুরতলা এলাকায় গোপন বৈঠক করার সময় আনসারুল্লাহর প্রধান মুফতি জসীমসহ ৩১ জনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

মহানগর পুলিশের যুগ্ম কমিশনার মনিরুল ইসলাম সাংবাদিকদের জানান, জসীমের অফিসে তারা ১২ জনের ছবিসহ একটি তালিকা পেয়েছেন, যাতে গত ফেব্রুয়ারিতে নিহত ব্লগার আহমেদ রাজীব হায়দার এবং হত্যা চেষ্টার শিকার ব্লগার আসিফ মহিউদ্দিনও রয়েছেন।

ওই তালিকায় দুজন মন্ত্রীসহ কয়েকজন বিশিষ্ট ব্যক্তির নাম আছে বলেও জানান মনিরুল। তবে তাদেরও হত্যার পরিকল্পনা ছিল কিনা তা জিজ্ঞাসাবাদ করে দেখা হচ্ছে।

ব্লগার রাজীব হত্যার ঘটনায় গ্রেপ্তার আসামিরা আদালতে ১৬৪ ধারায় দেয়া স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে এই জসীমের নাম বলেছিল বলেও যুগ্ম কমিশনার জানান।

তবে তদন্তের স্বার্থে তালিকায় থাকা বাকি ১০ জনের নাম প্রকাশ করা হয়নি।

গণজাগরণ মঞ্চের কর্মী ও স্থপতি আহমেদ রাজীব হায়দরাকে গত ১৫ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর মিরপুরে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। ওই ঘটনায় গ্রেপ্তার নর্থসাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঁচ শিক্ষার্থী গত মার্চে আদালতে নিজেদের দোষ স্বীকার করে জবানবন্দি দেন। তাদের জবানবন্দিতেও হত্যার প্ররোচনাদাতা হিসাবে মুফতি জসীমের নাম উল্লেখ করেন তারা।

এর আগে গত ১৪ জানুয়ারি রাতে উত্তরায় হামলারি শিকার হন আরেক ব্লগার আসিফ মহীউদ্দিন।

পুলিশের ভাষ্যমতে, মুফতি জসীম উদ্দিন রাহমানী একজন উগ্রপন্থী নেতা। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তার কাছ থেকে অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া গেছে। তার বিরুদ্ধে ঢাকার পল্লবী ও উত্তরা থানায় দুটি মামলা রয়েছে। এর মধ্যে পল্লবী থানার মামলায় তিনি ব্লগার রাজীব হত্যা মামলার সন্দেহভাজন আসামি।

মঙ্গলবার দুপুরে মুফতি জসীমকে আদালতে হাজির করে ১০ দিনের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রিমান্ডে চায় পুলিশ। আদালত ২১ আগস্ট শুনানির দিন ধার্য করে তাকে জেল হাজতে পাঠায়।

গ্রেপ্তারকৃত বাকি ৩০ জন মুফতি জসীমের অনুসারী। তাদের সবার বিরুদ্ধে বরগুনা থানায় তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইনে মামলা করা হয়েছে।

তবে মঙ্গলবার ঢাকার বছিলায় মারকাজুল উলুম আল ইসলামিয়া মাদ্রাসার পাশে জসীমের টিনশেডে অফিসে তল্লাশির সময় সেখানে কাউকে পায়নি পুলিশ।

প্রথমে ধানমন্ডির হাতেমবাগ মসজিদের খতিব ছিলেন জসীম। এরপর তিনি মোহাম্মদপুরের বছিলায় মারকাজুল উলুম আল ইসলামিয়া মাদ্রাসা ও  মসজিদ প্রতিষ্ঠা করেন। মারকাজুল উলুম আল ইসলামিয়া নামে একটি প্রতিষ্ঠানও চালান তিনি।

অভিযোগ রয়েছে, ওই মাদ্রাসা ও মসজিদ থেকে দীর্ঘদিন ধরেই উগ্র মতবাদ প্রচার করে তরুণদের জিহাদে উদ্বুদ্ধ করে আসছেন জসীম। তার বিরুদ্ধে জঙ্গি সংশ্লিষ্টতার অভিযোগও গোয়েন্দারা তদন্ত করে দেখছেন।

শেয়ার করুন:
Copy Protected by Chetan's WP-Copyprotect.