ইমতিয়াজ মাহমুদ:
বুড়ারা বিচার চাইবে। নুসরাতের বাবা, নুসরাতের মা বিচার চাইবেন। তরুণরা আপনারা এইসব বিচার ফিচার কেন চাইবেন? তনু মরেছে, পাহাড়ে ছোট্ট ফুটফুটে শিশু কৃত্তিকাকে ওরা কীভাবে মেরেছে আপনাদের মনে নাই? মনে করিয়ে দিই- কয়েকজনে মিলে ওকে ধর্ষণ করেছে, তারপর একটা গাছের গুঁড়ি ঢুকিয়েছে ওর ওখানে, আর এইভাবে বাচ্চাটাকে হত্যা করে কোনও রকমে মাটি চাপা দিয়ে পালিয়েছে। বিচার হয়নি। বিচার হয়নি, বিচার হয়নি।
বুড়ারা বিচার চাইছে, চাক। ওরা সমাজে শান্তি শৃঙ্খলা চায়, এই সমাজ ভেঙে যাক সেটা ওরা চায় না। বুদ্ধিজীবীরা মিহি গলায় মূল্যবোধ আর অনুশাসন এইসবের কথা বলবে। বলুক। ওদেরকে আসসালামু আলাইকুম বলেন। স্যাররা, ম্যাডামরা, আপনাদেরকে সালাম। আপনারা জ্ঞানীগুণী মানুষ, আপনারা সমাজের তন্তু বজায় রাখুন, you give your best effort to maintain the f****ng fabric of your society, বেস্ট অব লাক।
তরুণরা কেন এইসব বিচার ফিচার চাইবেন? আপনারা আগুন জ্বালবেন। নুসরাত পুড়েছে না? নুসরাতের আগুনটা জ্বালিয়ে রাখুন। আগুন জ্বালুন। পৃথিবী দেখুক আমাদের বহ্নিশিখা। আগুন জ্বালুন, সে আগুনের শিখা আকাশ স্পর্শ করুক। আমরা সেই আগুনের চারপাশ ঘিরে নাচবো, গাইবো। জাগো নারী জাগো বহ্নিশিখা। নুসরাতের আগুনটা জ্বালিয়ে রাখুন। এই যে আগুনটা জ্বালাবেন, এই আগুনে পুড়ে যাক ঐ পচা সমাজের এন্টিক ফেব্রিক।
এই আগুনটা নিভতে দিবেন না। এই আগুনেই পুড়িয়ে দিতে হবে এই সমাজ। যেখানে নারীকে ভোগের বস্তু মনে করে, যে সমাজে নারীর ইচ্ছা, নারীর সম্মতি, নারীর পুলক, নারীর তৃপ্তির কোন মূল্য নাই, সেই সমাজটা দিয়ে নারীরা কী করবেন? ঘণ্টা? পুড়িয়ে দিন। নুসরাতের আগুনে জ্বলে উঠুক নারীরা। আপনার অধিকার নাই ইচ্ছামতো বাঁচার? আপনার অধিকার নাই সম্পত্তিতে? আপনার অধিকার নাই শারীরিক তৃপ্তির? আপনার অধিকার নাই মাথা উঁচু করে চলবার?
নারীকে কেন ভয়ে ভয়ে পথ চলতে হবে? নারীকে কেন নিজের দেহ আবৃত করে চলতে হবে? নারীর দেহ নারীর। নিজের শরীরের প্রতিটি অঙ্গ প্রতিটি প্রত্যঙ্গ আপনার। আপনি কি খাবার জিনিস? রসগোল্লা? গরুর হাড্ডি? যে নিজেকে রেখে ঢেকে চলতে হবে? যেই সমাজ আপনার নিজের শরীরের উপর নিজের মালিকানা অস্বীকার করে, সেই সমাজ রেখে আপনার কী লাভ?
ওরা নুসরাতকে আগুনে পুড়িয়েছে না? নুসরাতের ঘাতকের পক্ষে মিছিল করেছে না? সেই আগুনেই জ্বালিয়ে দিন। জ্বলে উঠুক বহ্নিশিখা। অগ্নিস্নানে শুচি হোক ধরা।