আশঙ্কামুক্ত ব্লগার তন্ময়

tonmoy buetউইমেন চ্যাপ্টার: অস্ত্রোপচার শেষে এখন আশঙ্কামুক্ত সন্ত্রাসীদের হামলায় গুরুতর আহত ব্লগার তন্ময় আহমেদ মুন। রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তন্ময়ের চিকিৎসকরা এ খবর নিশ্চিত করেছেন। তন্ময়ের পরিবারের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে, ব্লগে লেখালেখি এবং গণজাগরণ মঞ্চের সাথে সম্পৃক্ততার কারণে জামাত-শিবির ক্যাডাররাই তার ওপর হামলা চালিয়েছে।

ডা. মোকসেদ আলী বসনিয়া জানান, তন্ময় এখন ভালো আছে। তার আঘাত ভালভাবে ‘রিপেয়ার’ করা হয়েছে । মাথায় কোন আঘাত নেই বলেও জানান তিনি। তন্ময়কে বর্তমানে পোস্ট অপারেটিভ কেন্দ্রে রাখা হয়েছে।

রাতে ডিউটিরত একজন চিকিৎসক জানান, তন্ময়কে যখন আনা হয়েছিল তখন তাকে বাঁচানো যাবে কিনা সন্দেহ ছিল। তন্ময়ের মাথায়, বাম কানের নিচে এবং ডান হাতে ধারালো ক্ষুর দিয়ে মারাত্মকভাবে আঘাত করা হয়েছে। রাত আড়াইটা থেকে ভোর সাড়ে ৫টা পর্যন্ত টানা তিন ঘণ্টা অস্ত্রোপচারের পরে তার জ্ঞান ফিরেছে এবং তিনি সবাইকে চিনতে পারছেন।
তন্ময় গাইবান্ধা জেলার পলাশবাড়ি উপজেলার জামালপুর গ্রামের মানিক মিয়ার ছেলে। তিনি বুয়েটের শিক্ষর্থী এবং বুয়েট ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক।

এদিকে তন্ময়ের ওপর হামলার পরপরই সোচ্চার হয়ে উঠে সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম ফেসবুক। অনলাইন অ্যাক্টিভিস্টরা এই ঘটনার তীব্র নিন্দা জানান। রাতভর উদ্বেগ আর উৎকণ্ঠা ছিল তাদের লেখনীতে।

ঘটনার পরপরই গণজাগরণ মঞ্চের মুখপাত্র ইমরান এইচ সরকার তার ফেসবুক স্ট্যাটাসে লিখেন, ‘আজ আবারও রক্তাক্ত হয়েছে আরেকজন মেধাবী ছাত্র এবং প্রগতিশীল আন্দোলনের একজন একনিষ্ঠ কর্মী তন্ময় আহমেদ। ছাত্র রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত থাকলেও তন্ময় শুরু থেকেই গণজাগরণ মঞ্চে দায়িত্বশীলতার সাথে কাজ করেছে এবং জামাত-শিবির বিরোধী আন্দোলনে বলিষ্ঠ কন্ঠস্বর হিসেবেই পরিচিত। …….একজন ছাত্রনেতা, গণজাগরণ মঞ্চের কর্মী এসব পরিচয়ের বাইরেও তন্ময়ের যে পরিচয়টি সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ, তা হচ্ছে সে একজন মানুষ। একজন মানুষকে কোনোভাবেই আরেকজন মানুষ এভাবে রক্তাক্ত করতে পারেনা। সুতরাং যারাই এই কাপুরুষোচিত হামলা করেছে তারা হিংস্র, বর্বর, অমানুষ। একজন নিরস্ত্র মানুষের উপর সশস্ত্র হামলাকারী বর্বর অমানুষদের খুজে বের করে অবিলম্বে বিচারের আওতায় আনার জোর দাবী জানাই’।
একজন সহযোদ্ধা তার ফেসবুক স্ট্যাটাসে লিখেছেন, ‘তন্ময় এখন বিপদমুক্ত। ঘাড়ের ক্ষতটাই মারাত্বক ছিল। সেটার চিকিৎসা করা হয়েছে। বাকি ক্ষতগুলো মাংসপেশিতে হওয়ায় ডাক্তাররা আর কোন বিপদের আশঙ্কা করছেন না। ডাক্তাররা বলেছেন, রংপুরেই প্রপার ট্রিটমেন্ট দেয়া হচ্ছে, ঢাকায় আনার দরকার নেই। পর্যাপ্ত রক্ত মজুদ আছে’।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, আনুমানিক রাত ১০টার দিকে পলাশ বাড়ি সরকারি কলেজ মোড়ে তিনটি মোটরসাইকেলে মোট ৯ জন মুখোশধারী দুর্বৃত্ত তার ওপর অতর্কিত হামলা চালায়। তাকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে গুরুতর আহত অবস্থায় ফেলে পালিয়ে যায়।

শেয়ার করুন:
Copy Protected by Chetan's WP-Copyprotect.