উইমেন চ্যাপ্টার ডেস্ক: প্রতিবছরের মত এবারও পোশাক কারখানার শ্রমিকরা ঈদের আগে বকেয়া ও উৎসব ভাতা সহ বেতন পরিশোধের দাবিতে বিক্ষোভ করেছে।
বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়, গত কয়েকদিন ঈদের আগে বকেয়া বেতন পরিশোধ এবং উৎসব ভাতা প্রদানের দাবিতে বিক্ষোভ করেছে বেশ কয়েকটি পোশাক কারখানার শ্রমিক। সাভারের হেমায়েতপুর এলাকায় মঙ্গলবারও রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ করেছে একটি পোশাক কারখানার শ্রমিকরা।
পোশাক শ্রমিকদের জন্য এটি প্রতিবারের নিয়মিত ঘটনার মত হয়ে গেছে।
স্ত্রীকে নিয়ে রংপুরে গ্রামের বাড়িতে ঈদ উদযাপনের জন্য রওনা হওয়ার কথা থাকলেও মঙ্গলবার পর্যন্ত ঈদের ঊৎসব ভাতা না পাওয়ায় রাস্তায় নেমে আরও অনেক শ্রমিকের সাথে ক্ষোভ প্রকাশ করতে বাধ্য হন সাভারের হেমায়েতপুর এলাকার এ কে এইচ গ্রুপ নামের একটি কারখানার একজন শ্রমিক।
তার বরাত দিয়ে প্রতিবেদনে বলা হয়, “আমাদের যে বেসিক বা মূল বেতন সেই পরিমাণ বোনাস দিলেও শ্রমিক কিছুটা সন্তুষ্ট হয়। কারণ জিনিসপত্রের যে দাম তাতে সাধারণ মানুষের কিছুই হয়না। বরং তারা এমনভাবে টাকাটা দিচ্ছে সাধারণ জনগণ যে বাজার করবে বা কোনও ব্যবস্থা নেবে তেমন কোনও পরিস্থিতিই নেই।”
মোহাম্মদপুরের ফ্যালকন গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন শ্রমিক বলেন, শুধু বোনাসই নয় তাদের বেতন বা ওভারটাইম কিছুই এখনো পরিশোধ করা হয়নি। যদিও প্রথমে কথা ছিল ২০ রোজার মধ্যে এগুলো দেওয়া হবে।
এই দুই গ্রুপের দায়িত্বশীলদের সাথে যোগাযোগ করা হলে তারা সাংবাদিকদের সাথে কথা বলতে অপারগতা প্রকাশ করেন।
এ বিষয়ে শ্রমিক অধিকার সংগঠন বিল্সের নির্বাহী পরিচালক সুলতানউদ্দিন আহমেদের সাথে যোগাযোগ করা হয়।
প্রথম সারির কিছু কারখানা বাদ দিলে মাঝারি ও অন্যান্য সব কারখানার মালিকদের মনোভাবই এমন উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘এটি আমাদের জন্য দুর্ভাগ্যজনক। বোনাস অবশ্যই মূল বেতনের সমপরিমাণ দেওয়া দরকার। প্রতিষ্ঠিত শিল্পপতিদের কারখানায় এমনটি ঘটে না। ঘটে মাঝারি মানের এবং সাপ্লাই চেইনে যারা রয়েছেন তাদের ও নতুন উদ্যোক্তাদের ক্ষেত্রে।’
অন্যদিকে রানা প্লাজা ধসের ঘটনায় হতাহতদের স্বজনেরাও ঈদের আগে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার দাবিতে মঙ্গলবার অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছেন।
রানা প্লাজার ছয়তলায় ইথারটেক্সের আহত শ্রমিক উলি বেগম জানান, বহু সাহায্য সহযোগিতার খবর বিভিন্ন মাধ্যমে শুনলেও তিনি নিজে কিছুই পাননি।
হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ৫/৬ হাজারের মত অর্থ সাহায্য ছাড়া আর কোনও কিছুই তিনি পাননি বলেও জানান।
বিজিএমইএ সভাপতি আতিকুল ইসলাম এই সংকটের কারণ হিসেবে কারখানার আর্থিক লোকসানকে উল্লেখ করেন। পাশাপাশি রানা প্লাজার শ্রমিকদের সবাইকেই ক্ষতিপূরণ দেওয়া হচ্ছে বলেও তিনি দাবি করেন।
আতিকুল ইসলাম বরাত দিয়ে প্রতিবেদনে বলা হয়, “গার্মেন্টসের কেউ খুব একটা ভাল অবস্থায় নেই। আসলে বড় কয়েকটা কারখানা ছাড়া বাংলাদেশে গার্মেন্টস শিল্পের যা অবস্থা তাতে মাস শেষে হিসেব করলে দেখা যাবে ব্যাংক সুদের হার বেশি”।
এ বিষয়ে সুলতানউদ্দিন আহমেদ জানান, আহত অনেক শ্রমিক এবং নিখোঁজদের স্বজনরা ক্ষতিপূরণ বাবদ কোনও অর্থসাহায্য পায়নি।