ফেসবুকে ‘বিলবোর্ড সমাচার’

Billboardউইমেন চ্যাপ্টার ডেস্ক: রাজধানীজুড়ে বিলবোর্ডের আধিক্য আর তাতে সরকারের উন্নয়নের বার্তা দেখে পক্ষ-বিপক্ষে মন্তব্যে সয়লাব সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক। নিউইয়র্ক থেকে সাংবাদিক আশরাফুল আলম খোকন লিখেছেন, ‘বিদ্যুতের খালি খাম্বা দেখার চেয়ে বিলবোর্ড দেখা অনেক ভালো , তাই না?’ শামস রাশীদ জয় লিখেছেন, ‘এম কে আনোয়ার এমপি অভিযোগ করেছেন, আইনের তোয়াক্কা না করে সারাদেশে বাণিজ্যিক বিলবোর্ড টাঙাতে যে ৬০ কোটি টাকা খরচ হয়েছে তা কোথা থেকে এসেছে? বিলবোর্ডের মালিকেরা নিজেরাই বিলওয়ালা ক্লায়েন্টের বিজ্ঞাপনে বিরতি দিয়ে পছন্দের দলের বিলছাড়া বিজ্ঞাপন বিলবোর্ডে দিয়েছেন। কেউ যে বিনা পয়সায় তাঁর পছন্দের দলের জন্যে কাজ করতে পারেন তা এম কে আনোয়ার সাহেবেরা বুঝবেন না। কিভাবে বুঝবেন? উনারা তো জীবনে সবকিছুই বেচাবেচি করে অভ্যস্ত।

এম এক আনোয়ার সাহেবের কাছে একটা প্রশ্ন, চাকরি করার সময় উনি তৎকালীন স্বৈরশাসক এরশাদের কুখ্যাত সিন্ডিকেট জি-১০ নামক মিনি ক্যাবিনেট বা দুর্নীতিগ্যাং এর সদস্য ছিলেন, চাকরি করার সময়ই উনার দেশের বাড়ি হোমনায় লঞ্চ ঘাটের কাছে যে বিশাল ইটালিয়ান প্রাসাদ নির্মাণ করেছিলেন, সেটা কার টাকায়? ওইটা তো বিলবোর্ড দিয়ে তৈরি হয়নি। গরীব কাজের ছেলে বাসাবাড়িতে চাকরি করতে এসে বাজারের টাকা চুরি করলে অনেক গৃহকর্তা তাকে বেন্ধে পিটায়। এম কে আনোয়ারদের মহা সুবিধা – চাকরি করতে এসে চুরি করার পর উনাদের কেউ বেন্ধে পিটায় না। চুরির পুরস্কার হিসেবে নতুন সরকারি দলে ডাক সুযোগ হয়, যেমনটা উনার হয়েছিল এরশাদের পতনের কয়েক মাসের মধ্যেই’। চট্টগ্রামের বাসিন্দা নির্ঝর মজুমদার লিখেছেন, সেনসেশন এর জন্ম নিরোধকের ‘বিশেষ ভঙ্গিমার’ বিলবোর্ড দেখলে গায়ে লাগে না; ডায়মন্ড ওয়ার্ল্ড এর হীরার নামে শরীর প্রদর্শনের বিলবোর্ডে গায়ে লাগে না; সারা ঢাকা শহরে গোপন রোগের ওষুধের বিলবোর্ডে চোখ নষ্ট হয় না; চিকন স্বাস্থ্য এবং নানান অঙ্গ প্রত্যঙ্গ মোটা তাজাকরণের বিলবোর্ড আড় চোখে দেখতে ভালো লাগে; পাইলস, অর্শ ভগন্দর, নাকের পলিপ-নাশা-গোটার বিলবোর্ড টাঙাইলে সেইটা মাইনা নেওয়া যায়; অলৌকিক স্বপ্নে পাওয়া ওষুধের বিলবোর্ড দেখলে যুক্তিমনস্ক মন কথা বইলা উঠে না; কে রহমান হাওলাদারের ভাগ্য গননা, বা অমুক স্টোন-তমুক বাবা’র ১০০% নির্ভুল ভাগ্য গণনার বিলবোর্ড দেখলে জোচ্চুরি মনে হয়না; নিষিদ্ধ ব্যবসার বিলবোর্ড বা গা-টিপানির সুড়সুড়ি মার্কা দোকান এর বিলবোর্ড দেখলে জ্বলে না।

জ্বলে শুধু বঙ্গবন্ধু-হাসিনার ছবি দেখলে, তাইনা??

(অট এক: মির্জা ফখরুল ইসলাম বলেছেন, উন্নয়নের ছবি দেখায়ে লাভ নাই। কি কইতে চান তিনি? শুধু ভিত্তি-প্রস্তর আর খাম্বার ছবি দেখাইতে?? প্রশ্ন রাখলাম প্রজন্ম, সাধ্য থাকলে উত্তর দিও।)

(অট দুই: দায়িত্ব নিয়েই বলতেছি, প্রতিটা বিলবোর্ড এর টাকা এলাকার নেতাকর্মীরাই দিছে, মানে যার নামে বিলবোর্ড উঠছে, সেই ওই বিলবোর্ডের ভাড়ার টাকা দিছে, এইটা মাঠের রাজনীতির সব থেকে কমন নিয়ম-কানুন গুলির একটা। যে নেতার নামে পোস্টার, সেই নেতাই যেই রকম ছাপায়, এইখানেও তাই) জয় চৌধুরী নামের আরও একজন লিখেছেন, ‘পত্রিকা, টিভি, বিরোধী দল সবাই যখন সরকারের খারাপটা তুলে ধরতে ব্যস্ত তখন যদি সরকার তার উন্নয়নের প্রচার চালায় তাহলে সমস্যা কি ? কোন মিথ্যা তুলে ধরলে সেতা নিয়ে সমালোচনা হতে পারে। আর রুচিবোধের কথা যদি বলা তাহলে বলতে হবে যে রুচিয়ালা লোক যদি রাজনীতিতে না আসে তাহলে এমন তো হবেই। আমি ভালো আমার ছেলে মেয়ে ভালো আমরা রাজনীতি করি না এটা বলে রাজনীতি খারাপ লোকের কাজ এটা প্রমান করবেন আর সেই খারাপ লোকের কাছে ভালো কিছু আশা করবেন সেটা কতোটা যৌক্তিক’ ? আবার বিরোধিতাও আছে। মঈনুল হাসান সজল এ নিয়ে একটি কবিতা লিখেছেন।

কবিতার নাম: বিলবোর্ড

চোখ খুললে’ই বিলবোর্ড দেখি, সফলতার কিত্তন দেখি পিলখানায় হারানো রাষ্ট্র সন্তানদের দেখি না । চোখ খুললে’ই বিলবোর্ড দেখি, উন্নয়ন কিত্তন দেখি ফেলানি হত্যার আক্ষেপ দেখি না। চোখ খুললে’ই বিলবোর্ড দেখি, ডিজিটাল কিত্তন দেখি শেয়ার ব্যবসায়ীদের গল্প দেখি না। চোখ খুললেই বিলবোর্ড দেখি, সবক্ষেত্রে কিত্তন দেখি সাগর-রুনি হত্যার বিচার দেখি না। চোখ খুললেই বিলবোর্ড দেখি, কিন্তু পদ্মা সেতু দেখি না। বিশ্বজিৎ এর আহাজারি দেখি না, দেখি না সাংবাদিক নির্যাতনের উদ্বেগ। চোখ খুললেই বিলবোর্ড দেখি, সর্বত্র বিলবোর্ড দেখি উর্ধ্বমুখি বাজার দেখি না। চোখ খুলল’ই বিলবোর্ড দেখি, বিলবোর্ডে সফলতা দেখি আমাদের নিশ্চয়তা দেখি না। প্রমি নাহীদ নামের একজন লিখেছেন, কটকটা লাল-হলুদ রঙের বিলবোর্ডগুলার গ্রাফিকস দেখলে একটা কথাই মনে পড়ে… “৩০০ টেকায় ১০০০ কার্ড!!!”

বি.দ্র. বিলবোর্ডগুলার গ্রাফিকস এর কাজ যিনি করছেন তিনি কোন চালের ভাত খান? কেজি হিসাব সেই চালের বাজার মূল্য কত??? ইয়াসিন ফিদা হোসেন লিখেছেন, ‘যা দেখতেছি এবার এরশাদ যদি নয় বছরের উন্নয়নের ফিরিস্তি দিয়া বিলবোর্ড ছাপা শুরু করে তাহলে তো ঢাকার নতুন নাম হবে বিলবোর্ডের শহর। গিনেস বুকে নামও উঠতে পারে। ভালো তো, ভালো না’?

শেয়ার করুন:

পরিসংখ্যান ১: বিলবোর্ড বানাতে ৬০ কোটি টাকা খরচ উতস জানতে চেয়ে দুর্নিতীর বরপুত্র এম কে আনোয়ারের হমকি

পরিসংখ্যান ২: পিভিসি ফ্লেক্স প্রিন্ট। বাংলাদেশে যা ডিজিটাল ব্যানার বলে
পরিচিত-পাইকারি রেটে প্রিন্টিং কস্ট হবে ১৫ টাকা পার স্কয়ারফিট, ২৫০ টির
মত বিলবোর্ড প্রিন্ট করা হয়েছে যাদের মাপ কমবেশি ৩০ ফিট পাশে বাই ১৫ ফিট
উচ্চতা বা বলতে পারেন ৫০০ স্কয়ার ফিটের মত। সেই হিসেবে মোট প্রায় – ১২৫,০০০
স্কয়ার ফিট। যাতে খরচ হতে পারে সর্বোচ্চ ১৮ লাখ ৭৫০ হাজার টাকা মাত্র

প্রশ্ন: স্যার আওয়ামী লীগ একটা রাজনীতিক দল- মোট ভোটের ৪০% ভোট আওয়ামী
লীগ পায়-সেটা কোটি কোটি হয়-এবং যদি ৫% সমর্থকরা ১০ টাকা করে অনুদান দেয়
তাইলে দাড়ায় কোটি কোটি টাকা-সো আওয়ামী লীগ কি ১৯ লাখ টাকার বিলবোর্ড
লাগাতে পারবেনা-
অফটপিক: এটা কি স্যার হেফাজতের সমাবেশ পাইসেন-যে পাচ কোটি টাকা নিয়া তারপর পিছন দিয়া পলাইবে?

ডাক্তার আইজুর স্ট্যাটাস থেকে পাওয়া।।

Copy Protected by Chetan's WP-Copyprotect.