
উইমেন চ্যাপ্টার ডেস্ক: আদালত অবমাননার অভিযোগে জামায়াতের ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি রফিকুল ইসলাম খান ও কেন্দ্রীয় প্রচার বিভাগের প্রধান মো. ইব্রাহিমকে তলব করেছে হাই কোর্ট।
রায়ের বিরুদ্ধে জামায়াতের হরতাল ডাকা বিষয়ক একটি পত্রিকা প্রতিবেদনকে আমলে নিয়ে বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি এবিএম আলতাফ হোসেনের অবকাশকালীন বেঞ্চ সোমবার এই আদেশ দেয়।
আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে বিবৃতি ও হরতাল ডাকার কারণ ব্যাখ্যা করতে জামায়াতের বর্তমান এই দুই নেতাকে ১৬ সেপ্টেম্বর আদালতে উপস্থিত থাকতে বলা হয়। তাদের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার অভিযোগে কেন ব্যবস্থা নেয়া হবে না- তা জানতে চেয়ে রুলও জারি করেছে হাই কোর্ট।
জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধন বাতিল করে হাইকোর্টের রায়ের পর জামায়াতের কেন্দ্রীয় প্রচার বিভাগের মো. ইব্রাহিমের স্বাক্ষরে বিবৃতি দিয়ে আগামী ১২ ও ১৩ অগাস্ট ৪৮ ঘণ্টার হরতাল ডাকেন রফিকুল ইসলাম খান।
তিনি বলেন, “অসাংবিধানিক, অগণতান্ত্রিক ও মৌলিক অধিকারের পরিপন্থী এ রায়ের বিরুদ্ধে আমাদের কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে।”
জামায়াতের নিবন্ধন বাতিলের রায়কে ভুল রায় উল্লেখ করে তিনি বলেন, এ রায়ের মাধ্যমে সরকারের ‘রাজনৈতিক উদ্দেশ্যের’ প্রতিফলন ঘটেছে।
পত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদনটি সোমবার আদালতের নজরে আনেন ব্যারিস্টার মাসুদ রেজা সোবহান।
তিনি বলেন, রাজনৈতিকভাবে প্রতিবাদের সুযোগ আমাদের সংবিধান স্বীকৃত মৌলিক অধিকার। আবার আদালতের রায়ের সমালোচনাও যে কেউ করতে পারে। কিন্তু হাই কোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে হরতাল দিয়ে দেশ অচল করে দেয়া যায় না।
ব্যারিস্টার মাসুম রেজা সোবহান আরও বলেন, রায়ে সন্তুষ্ট না হলে উচ্চ আদালতে আপিল করে যুক্তি দিয়ে হাই কোর্টের যুক্তি খণ্ডন করতে পারে। কিন্তু দেশ অচল করা নয়।”
এছাড়াও এই হরতাল মারত্মক জনদুর্ভোগ সৃষ্টি করবে বলেও তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করেন।
এ বিষয়ে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানিতে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এসএম মনিরুজ্জামান।
আদেশের বিষয়ে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, “অবকাশকালীন বেঞ্চ আদালত অবমাননার রুল দিয়ে তাদের হাজির হতে বলেছে। ছুটির পর এখতিয়ার সম্পন্ন আদালতে হাজির হয়ে তাদের রুলের জবাব ও নিজেদের ভূমিকা ব্যাখ্যা করতে হবে।”
জামায়াত নেতা রফিকুল ইসলাম রায়ের দিন বিবৃতিতে বলেন, “বাংলাদেশের পরিবর্তিত সংবিধানেও ‘বিস্মিল্লাহির রাহমানির রাহীম’ ও রাষ্ট্রধর্ম ‘ইসলাম’ বহাল আছে। এমতাবস্থায় ধর্মীয় দল হিসাবে জামায়াতের রাজনৈতিক নিবন্ধন বাতিল করার প্রশ্নই উঠে না।”
এই রায়কে তিনি নির্বাচনে জামায়াতের অংশ নেয়া বন্ধ করতে সরকারি ষড়যন্ত্র বলে উল্লেখও করেন।
এর আগে ট্রাইব্যুনালের বিচার নিয়ে অবমাননাকর মন্তব্য করায় ট্রাইব্যুনাল একাধিকবার হাজির হয়ে কারণ ব্যাখ্যা করার জন্য তলব কলেও তিনি উপস্থিত না হওয়াতে তাকে তিন মাসের কারাদণ্ড দেয়া হয়। পলাতক থাকায় তাকে ওই সাজা এখনো ভোগ করতে হয়নি।