
উইমেন চ্যাপ্টার: কুষ্টিয়ায় প্রায় দেড়শ মেয়ের ওপর যৌন নিপীড়ন চালানোর ঘটনায় অভিযুক্ত সেই স্কুল শিক্ষক হেলাল উদ্দিন পান্না অবশেষে ধরা পড়েছে। রাজধানীর মোহাম্মদপুর এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করেছে মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ।
গোয়েন্দা পুলিশের একজন কর্মকর্তা সাংবাদিকদের জানান, তাদের একটি দল শনিবার সন্ধ্যায় অভিযান চালিয়ে হেলালকে গ্রেপ্তার করে। এদিকে, আজ রোববার এক প্রেস ব্রিফিঙে গোয়েন্দা পুলিশ জানায়, গ্রেপ্তার হওয়ার হেলাল উদ্দিন পান্না ধর্ষণের কথা স্বীকার করেছে।
কুষ্টিয়ার আদর্শ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের গণিতের শিক্ষক হেলাল উদ্দিন পান্নাসহ চার জনকে আসামি করে গত ৭ জুলাই কুষ্টিয়া মডেল থানায় পর্নোগ্রাফি নিয়ন্ত্রণ আইনে একটি মামলা করে পুলিশ। যৌন নির্যাতনের ঘটনায় স্কুল থেকেও তাকে বহিষ্কার করা হয়েছে।
মামলার এজাহারে বলা হয়, গত মাসে হেলাল উদ্দিন তার কাছে প্রাইভেট পড়তে আসা এক ছাত্রীর সঙ্গে জোর করে ছবি তোলার পর বিষয়টি জানাজানি হয়ে যায়। এ নিয়ে গত ১৫ জুন ওই ছাত্রীর আত্মীয়-স্বজন, এলাকাবাসী ও কয়েকজন সাংবাদিক অভিযুক্ত হেলালকে মারধর করে। এসময় হেলালের ল্যাপটপ ও মোবাইল ফোন কেড়ে নিয়ে সেগুলো এলাকার একটি কম্পিউটারের দোকানে পরীক্ষা করলে বিভিন্ন সময়ে ছাত্রী ও বিভিন্ন বয়সী নারীদের ওপর ওই শিক্ষকের যৌন নিপীড়নের ভিডিও পাওয়া যায়। এরপর সেই দোকান থেকেই শিক্ষার্থীসহ সমাজের বিভিন্ন বয়সী মানুষের হাতে ছড়িয়ে পড়ে সেইসব ভিডিও। চার-পাঁচ বছর আগে থেকে শুরু করে গত ১৪ জুন পর্যন্ত গোপন ক্যামেরায় এসব দৃশ্য ধারণ করা হয়েছে বলে এজাহারে বলা হয়।
মামলার বাকি তিন আসামি হলেন- প্রকৌশলী আলিমুজ্জামান ওরফে টুটুল, প্রকৌশলী শরিফুল ইসলাম ওরফে সজল ও প্রকৌশলী হাসানুজ্জামান হাসান। এদের মধ্যে হাসানুজ্জামানকে গ্রেপ্তার করা হলেও বাকি দুজন পলাতক।
এজাহারে নাম না থাকলেও ভিডিও দেখে মনিরুল ইসলাম ওরফে মনো নামে আরেকজনকে গত বৃহস্পতিবার গ্রেপ্তার করেছে গোয়েন্দা পুলিশ। এদিকে এ ঘটনায় একুশে টেলিভিশনে একটি রিপোর্ট সম্প্রচারের পর দেশব্যাপী তীব্র জনমত গড়ে উঠে এই শিক্ষকের শাস্তির দাবিতে। টেলিভিশনের প্রতিবেদনটিতে বলা হয়, নির্যাতনের শিকার হয়ে কমপক্ষে ১১ জন ছাত্রী আত্মহত্যা করার চেষ্টা করেছে। শিক্ষক সমাজকে কলঙ্কিত করা এই শিক্ষকের শাস্তি দাবি করেছেন অভিভাবকরা। একজন অভিভাবক হেলাল উদ্দিন পান্নাকে গণপিটুনি দিয়ে মেরে ফেলার দাবিও করেন। স্থানীয়রা বলছেন, যাদের কাছে লেখাপড়ার জন্য পাঠানো হয় তারাই যদি এমন হয়, তাহলে কার কাছে যাবে?