আলাদা রাজ্যের দাবিতে উত্তাল আসাম ও দার্জিলিং

assamউইমেন চ্যাপ্টার ডেস্ক: আলাদা রাজ্যের দাবিতে আবারো সহিংস হয়ে উঠেছে দার্জিলিং এর পাহাড়ি অঞ্চল ও আসাম।

অন্ধ্রপ্রদেশ রাজ্যকে ভাগ করে তেলেঙ্গানা রাজ্য তৈরির সিদ্ধান্ত নেওয়া হলে এই সহিংসতার শুরু হয়।

বিবিসি অনলাইনের এক প্রতিবেদনে জানা যায়, ইতিমধ্যেই আসামের কার্বি আংলং জেলায় পুলিশের গুলিতে একজন বিক্ষোভকারী প্রাণ হারিয়েছেন। শুক্রবারেও সেখানে যানবাহন আর দোকানে আগুন লাগানোর মত সহিংস ঘটনা ঘটেছে।

আসামে আলাদা বোড়োল্যান্ড এর দাবিতে ১২ ঘন্টার বন্ধ চলছে বড়ো অধ্যুষিত এলাকাটিতে। সকাল থেকে রেল অবরোধ শুরু হওয়ায় দেশের অন্যান্য অংশের সঙ্গে উত্তরপূর্ব ভারতের রেল যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে রয়েছে।

অন্যদিকে নিজেদের গোর্খাল্যান্ড রাজ্যের দাবিতে শনিবার থেকে অনির্দিষ্টকালীন বন্ধ ঘোষণা করেছে দার্জিলিংয়ের সবচেয়ে শক্তিশালী রাজনৈতিক দল গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার প্রধান বিমল গুরুং।

ঘোষণায় দার্জিলিংএ অবস্থানরত সকল পর্যটক ও ছাত্রছাত্রীদের দার্জিলিং ছেড়ে যেতে বলা হয়।

অন্য সময়ের চাইতে তুলনামূলক এই সময়টিতে পর্যটক কম আসলেও কিছু সংখ্যক বিদেশি পর্যটক যারা ছিলেন তারা ইতিমধ্যেই পাহাড় ছেড়ে চলে গেছেন। আর ছাত্র ছাত্রীদের অভিবাবকেরা তাদের সন্তানদের দার্জিলিং থেকে নিয়ে গেছেন। বিদেশি ছাত্ররাও দার্জিলিং এলাকা ত্যাগ করেছেন।

দার্জিলিং এর বিখ্যাত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সেন্ট পল্‌সের সিনিয়র শিক্ষক উমেশ দ্বিবেদীকে উদ্ধৃত করে বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়, “স্কুল বন্ধ, হোস্টেলও প্রায় খালি, সেন্ট পলসে যারা পড়তে আসে- অনেকেরই বাবা-মা যেমন পশ্চিমবঙ্গ বা ভারতেরই অন্য কোথাও থাকেন, তারা তো চলে গেছেই। বাংলাদেশ, ফ্রান্স, সিঙ্গাপুর বা জর্দান থেকেও ছাত্ররা আসে। বিদেশী ছাত্রদেরও প্রায় সবাইকেই আত্মীয়স্বজন বা স্থানীয় অভিভাবকেরা সরিয়ে নিয়ে গেছেন। তবে কয়েকজন মাত্র রয়ে গেছে।”

দার্জিলিং এর নামী হোটেল ম্যানেজার রাজেশ রজকের উদ্ধৃত করে প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, “এমনিতেই এই সময়ে কেউ বেড়াতে আসেন না। গতমাসেই পর্যটন মৌসুম শেষ। যারা ছিলেন, তারাও গতকালের মধ্যেই চলে গেছেন, বিদেশীরাও কেউ নেই।”

বন্ধ শুরু হওয়ার আগে দার্জিলিং এর বাজারগুলোতে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রবাদি কেনার জন্য ক্রেতাদের উপচে পড়া ভিড় দেখা গেছে।

শুক্রবার দার্জিলিং এর পোখরিয়াবঙ ও মঙপু এলাকায় সহিংসতার খবর পাওয়া গেছে। বিক্ষোভকারীরা একটি পুলিশ ফাঁড়ি, একটি বনবাংলো এবং একটি সরকারি গাড়ি জ্বালিয়ে দিয়েছে বলে জানা গেছে।

এদিকে পাহাড়ের শান্তি বজায় রাখতে বাড়তি কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা বাহিনী পাঠানো হয়েছে। গোর্খাল্যান্ড দাবির বিষয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের সাথে আলোচনা করতে জনমুক্তি মোর্চার শীর্ষ ৬ জন নেতা দিল্লিতে পৌঁছেছেন।

যদিও রাজ্য সরকার এমন দাবি মানবে না বলে ঘোষণা দিয়েছে।

অন্যদিকে, আলাদা রাজ্যের দাবিতে আসামে সহিংসতা চলছে। সকল বিক্ষোভকারীর যুক্তি – কেন্দ্রীয় সরকার যদি তেলেঙ্গানা রাজ্য তৈরির পক্ষে সায় দিতে পারে, তাহলে তাদের দাবি মানা হবে না কেন?

শেয়ার করুন:
Copy Protected by Chetan's WP-Copyprotect.