হেলেনা আফরোজ:
অামার কাজিনের মেয়েটার বয়স যখন তিন বছর, কেউ যদি ওকে বলতো তুমি বড় হয়ে কী হতে চাও, ও খুব সুন্দর করে উত্তর দিত, ছোট বেবির মা হতে চাই। কী সহজ সাবলিল চাওয়া, এতোটুকুও ভণ্ডামি নেই।
এখন ওর বয়স পাঁচ। বয়সের সাথে সাথে ওর ভবিষ্যৎ গোলও পাল্টে গেছে। সে এখন বড় হয়ে ছোট বেবির মা না, পুলিশ হতে চায়। চোর, ডাকাত সব ধরে ধরে সমানে পিটায়ে খাঁচায় ঢুকাতে চায়। তবে পুলিশ হবার ইচ্ছা যে বেচারির নিজের মাথা থেকে অাসছে, তা না। মায়ের চোখ রাঙানি অার মারের ভয়ে স্বপ্নটা কখন যে ছোট বেবির মা থেকে পুলিশ এ ট্রান্সফার হয়ে গেছে, বেচারি বুঝতেই পারেনি।
অামি নিশ্চিত এই স্বপ্নটা অাবারও পাল্টে যাবে। এবার অবশ্য মারের ভয়ে না, সমাজের ভয়ে পাল্টাবে। ও যখন পুলিশের পোশাকে চোর ডাকাত সব ধরে সমাজের জন্য কাজ করতে চাইবে, তখন সমাজের একদল সভ্য মানুষ ওকে শুধরানোর দায়িত্ব নিজেদের কাঁধে তুলে নিবে। বলবে, এ মেয়ে তো উদাম চলে, মেয়েছেলের কোনো গন্ধ বাতাসই নেই এর মধ্যে। তার উপর পরে শার্ট-প্যান্ট, অাবার কথাও বলে মুখে মুখে। বেয়াদবি অার খারাপের যতগুলো সার্টিফিকেট অাছে সবগুলো পেয়ে যাবে মেয়েটা।
বলছিলাম অামার কাজিনের মেয়ের কথা, কিন্তু এই ব্যাপারগুলো বোধহয় ছেলেমেয়ে সবার জন্যই প্রায় একই রকম হয়।
কী অদ্ভুত তাই না, সমাজ যে লিঙ্গভেদে শুধু অামাদের কার কী দায়িত্ব, পোশাক, গলার স্বর, হাঁটা চলার ধরন এসবই ঠিক করে দেয়, তা না। এমনকি অামরা বড় হয়ে কে কী হবো, সেটাও ঠিক করে। অার যারা সমাজের এই সোকলড সেটেলড ওয়ে থেকে বেরোতে চায়, তাদেরকে অার ভালো হিসাবে ধরা যায় না। তারা হয়ে যায় সমাজের চোখে খারাপ মানুষ।
ভাগ্যিস অামরা অামাদের ফেলে অাসা স্বপ্নগুলো সিনেমার মতো বড় পর্দায় দেখতে পাই না। হঠাৎ কোন একদিন অবেলায় অবসরে মনে করে একটু দীর্ঘশ্বাস ফেলতে পারি মাত্র। তা নাহলে অামরা কী হতে চেয়েছিলাম, অার কী হয়েছি, এই দুটোর মধ্যিখানের ব্যবধানটা কাছ থেকে দেখে চমকে যেতাম সত্যিই।
মাঝে মাঝে খুব জানতে ইচ্ছা করে সমাজের এই সো-কলড সেটেলড ওয়ে থেকে অাদৌ কি অামরা পারবো বের হতে? অামাদের যেন একেবারে মাইন্ড সেট করা, এটা এটা করলে খারাপ, অার সেটা সেটা বললে ভালো। এই নিয়মের বাইরে যাবার সাহস করলেই অার রক্ষা নেই।
অাজকে অামাদের মধ্যে এই সোকলড ভালো সাজার প্রতিযোগিতাটাই সবচাইতে বেশি। ঘরে-বাইরে যেটাই করি না কেন সেটা করছি লোকে ভালো বলবে তাই। ধর্ম-কর্ম থেকে শুরু করে সাজ পোশাক, ইচ্ছা, স্বপ্ন সবকিছুতেই সমাজের লোকের কাছে ভালো সাজতে গিয়ে অামরা ভালোর অাসল মানেটাই ভুলতে বসেছি।
অার এসবকিছুতে সমাজের চাইতেও বেশি যে ভূমিকা রাখছে সেটা হলো পরিবার। অামরা তো পরিবার থেকেই শিখেছি ভাল মেয়ে মানে হলো চুপচাপ সব সহ্য করে যাওয়া। কোন টুঁ শব্দটিও না করা, পাছে লোকে শুনে ফেলবে। ন্যায়-অন্যায়ের মধ্যের পার্থক্যটা শেখার বদলে যেটা শিখেছি সেটা খানিকটা এরকম। ভালো মেয়েরা মুখে মুখে কথা বলে না। অন্যায়ের বিরুদ্ধে যারা জোর গলায় কথা বলে, তারা খারাপ মেয়ে। অার খারাপকে যেহেতু কেউ চায় না, ভালো নিয়েই সবার যত অায়োজন। সো চুপচাপ ভালো মেয়ে সেজে থাকার অভিনয়টার হাতেখড়ি হয়েছে পরিবার থেকেই। অার ছেলেদেরকে শেখানো হয় অাওয়াজ তোলার কাজটা তোমাদের। নিচু গলায় কথা বলবে মেয়ে মানুষ। তোমাদের কাজ মেয়েদের ঘাড়ে সবটা বোঝা চাপিয়ে দেয়া।
কখনও ধর্মের অজুহাতে, অাবার কখনও বা সমাজের ভয় দেখিয়ে অামরা দিনের পর দিন অামাদের ভুল দৃষ্টিভঙ্গিগুলোর প্রচলন করে অাসছি। কিন্তু দিনশেষে অামরা কতটা লাভবান হচ্ছি এসব করে? ছেলেমেয়ে গুলোকে একে অপরের কাছে মানুষ ভাবতে শেখাতে পারছি না। কিন্তু একজনকে অারেকজনের প্রতিদ্বন্দ্বি ভাবতে শেখাচ্ছি।
স্বাভাবিক সব ব্যাপারগুলোকে অস্বাভাবিকভাবে তুলে ধরছি এদের সামনে। শারীরিকভাবে একটা ছেলেকে দেখতে যেমন ছেলের মতোন অার মেয়ে মানুষও দেখতে হবে তার নিজের মতোই। ঠিক যেমনটা তাদের হবার কথা। এখানে না কারও কোনো হাত অাছে, কিংবা এটা কাউকে ভালো বা খারাপ বানাবে না। কিন্তু অামরা স্বাভাবিক এই ব্যাপারগুলোকেও অার স্বাভাবিক থাকতে দিচ্ছি না। অামরা যেন ভেবেই নিয়েছি মেয়ে মানুষের শরীর মানেই একটা পাপের বস্তু। নিজেদের মতো করে নিয়ম করছি কে কী পরবে, কীভাবে বসবে, কীভাবে হাঁটবে, চলবে সব।
এমন একজন মেয়েকে খুঁজে পেতে সত্যিই খুব কষ্ট হবে অামাদের, যাকে তার নিজের শরীরটা নিয়ে হাজার রকম বিকৃত কথাবার্তা শুনতে হয়নি। একটা ছেলে ছোটবেলা থেকেই যখন তার পরিবারের মধ্যে ছেলেমেয়ের মধ্যকার এই ভেদাভেদ দেখছে, অার ভাবতে শিখছে এরকমই বুঝি হওয়ার কথা। অামি যতোই অন্যায় করি না কেন মেয়েটাকে সব মুখ বুঁজে সহ্য করতে হবে। কারণ এটাই তো নিয়ম।
এমনকি সেক্স যেটা খুবই স্বাভাবিক একটা ব্যাপার, সেটাকেও অামরা ছেলেমেয়েদের সামনে এক্সপোজ করছি একটা সাসপেন্স হিসাবে। শুধু তাই না, এটা নিয়ে কথা বলতে হবে লুকিয়ে, তা না হলে খারাপ বলবে লোকে। অামি বলছি না এসব নিয়ে প্রতিদিন বা সবসময় কথা বলতে হবে। কিন্তু এই স্বাভাবিক অার সুস্থ বিষয়টাকে অামরা খুব অস্বাভাবিক অার অসুস্থ বিষয় হিসাবে কেন ভাবছি? অার এটার ফলাফল যে কতটা ভয়াবহ হতে পারে, তা নিশ্চয় অামরা খুব ভালভাবে দেখতে পাচ্ছি অাজকাল।
কিছুদিন অাগে অামার এক টিচার বন্ধুর সাথে কথা হচ্ছিল, ও বললো ক্লাস সেভেন-এইটে যে শারীরিক শিক্ষা ও স্বাস্থ্য বইটা অাছে, সেটা নাকি বেশিরভাগ টিচাররাই পড়াতে চায় না। কারণটা হলো ওই বইয়ে অাছে বয়ঃসন্ধিকালে ছেলেমেয়ে উভয়ের শরীরে কী কী ধরনের শারীরিক পরিবর্তন অাসে বা তাদের অনুভুতিগুলো কী রকম হতে পারে এই ধরনের প্রাকৃতিক বিষয়গুলো। টিচাররা ক্লাসে ছেলেমেয়েদের সামনে এই বিষয়গুলো নিয়ে কথা বলতে নাকি খুব অানকমফোর্টেবল ফিল করে।
একটা স্বাভাবিক ব্যাপারকে অামরা কোন কারণ ছাড়াই কেমন অস্বাভাবিক করে ফেলছি। বরং অামাদের উচিত ছিল এই ছেলেমেয়েগুলোকে অারেও শেখানো একটা হেলদি রিলেশনশিপ কেমন হতে পারে। হেলদি রিলেশনশিপ এবং এবিউসিভ রিলেশনশিপের মধ্যের পার্থক্যটা কী! কারণ অামাদের দেশের বেশিরভাগ ছেলেমেয়ে তাদের টিনএইজ বয়স থেকেই এবিউজড হয়।
অার সবচাইতে ভয়ংকর যে ব্যাপারটা, তাহলো, এবিউজড এর হারটা ঘরেই বেশি হয় বাইরের তুলনায়। অার এটা ছেলেমেয়েরা শেয়ারও করতে পারে না কারেও সাথে, পাছে সবাই উল্টো ওদেরকেই খারাপ ভাববে। কারণ অামাদের সমাজ বা পরিবার কেউই অামাদের জন্য এতোটুকু নিরাপত্তার জায়গা তৈরি করতে পারেনি, যেখানে অামরা গিয়ে নির্ভয়ে নিজের অনুভূতিগুলোর কথা বলতে পারবো।
ইউরোপ অামেরিকার দেশগুলোকে বলা হয় ওপেন সেক্স এর দেশ। একটা সময় ভাবতাম ওরা বোধহয় সারাদিন এই ব্যাপারটা নিয়েই ব্যস্ত থাকে। কিন্তু সত্যিটা অাসলে তা না, বরং এই ব্যাপারটাকে ওরা অার দশটা অালু পটল টাইপ ব্যাপারই মনে করে। অামরা যেমন ঢাক ঢাক রাখ রাখ করে এই অতি স্বাভাবিক ব্যাপারটাকে চূড়ান্ত অস্বাভাবিক পর্যায়ে নিয়ে গেছি, ওরা শুধু সেটা করতে পারেনি।
কারণ ওরা জানে এবং মানে এই বিষয়টা ন্যাচারালি একটা মানুষের মধ্যে থাকবে। শুধু শুধু এটাকে টপ সিক্রেট লেভেলে নিয়ে যাবার তো কিছু নেই। অার অামরাও সবাই এগুলো জানি, কিন্তু অভিনয়টা করি না জানার। কারণ এটা তো অামাদের পরিবার বা সমাজ থেকেই শিখেছি যে এটা একটা খারাপ বিষয়।
যেমন শুধু ধর্ষণটা পর্যন্ত বোঝা গেল, অসুস্থ মানসিকতা অার বিকৃত যৌনতা। কিন্তু তারপর যে পাথর দিয়ে মাথাটা থেঁতলে দিল, সেখানে নিশ্চয় কোনো যৌনতা ছিল না। সেখানে ছিল শত বছরের জমে থাকা হিংসা, বিদ্বেষ অার ঘৃণা। কারণ এটা তো মানুষের না, মেয়ে মানুষের শরীর। এরকম বিকৃত মানুষগুলোর শাস্তি হলে সমাজ থেকে কয়েকটা অমানুষ কমবে মাত্র। কিন্তু অামাদের দৃষ্টিভঙ্গি না বদলালে, সমস্যার গোড়া থেকে না শুধরালে দিনে দিনে এই বিকৃত মানুষগুলো বাড়তেই থাকবে।
কয়েক বছর অাগের কথা, অামার কাজিনের পাঁচ বছরের ছেলেটা বিদেশ থেকে এসেছে। অামি দেখতে গেছি ওকে। ওর বাসায় অনেক বাক্স, ল্যাগেজ ভর্তি। তো, ও অামাকে বাক্সগুলো দেখিয়ে বলছে, জানো এগুলো কী, এগুলো হচ্ছে মাল। অামি যে ওর কাছ থেকে শুধু জানলাম তা না, ভালো করে বুঝলামও যে মাল মানে তো মালপত্র বা জিনিসপত্র।
কিন্তু কবে থেকে অামরা বুঝতে শুরু করলাম যে মাল মানে মালপত্র না। মাল মানে মেয়ে মানুষ। অার কেই বা বোঝালো অামাদের মাল এর এই নতুন মানে।
অামরা যে শুধু এই বিকৃত মানসিকতার অমানুষগুলোকে সাথে নিয়ে চলছি, বা সমাজে অাশ্রয় দিচ্ছি তা না। প্রতিটা পরিবার অামাদের সমাজ দিনে দিনে এদেরকে তৈরি করছে। অার অাজকে যখন তাদের ওই বিকৃত বীভৎস চেহারাটা অামাদের সামনে উঠে অাসছে, অামরা কেউ কেউ হয়তো ছি ছি বলে মুখ ঘুরিয়ে নিচ্ছি। ভাবছি যে অামার ঘরে তো ঘটেনি এটা, সো অামি তো সেইফ।
অার একদল সচেতন মানুষ বা সমালোচক ব্যস্ত হয়ে পড়ছেন ভিকটিম এর কী কী প্রবেলেম থাকতে পারে, কী কারণে সেই ভিকটিমাইজড হলো সেগুলো খুঁজে বের করতে। হোক না সেটা তার পোশাক। অথচ অামাদের ব্যস্ত হয়ে খোঁজা দরকার ছিল এই অপরাধের পেছনের অাসল কারণগুলো, বা শিকড়টা কোথায় এর। অামাদের ভিকটিমের পোশাকের মধ্যে না ঢুকে, ঢোকার চেষ্টা করা দরকার ছিলো অপরাধীর মাথার ভিতর, মনের ভিতর।
কারণ অপরাধীরও একটা পরিবার অাছে, মা, বোন বা বন্ধুরুপী মেয়েগুলো তাকেও নিশ্চয় অনেক ভালবাসা দিয়েছে সারাটা জীবন। তবুও কী করে পারলো সে এরকম অসুস্থ অার বীভৎস অাচরণ অার একটা মেয়ের সাথে করতে। অাপনার কি এখনো মনে হচ্ছে যে একটা মেয়ের পোশাকের মধ্যেই সব মহত্ত্ব লুকিয়ে অাছে! যেটা দেখে একজন পুরুষ এক মুহুর্তেই তার সারা জীবনের মা বোন মেয়ে বন্ধু সবার মায়াভরা মুখগুলোর কথা ভুলে গিয়ে তার সামনের মেয়েটিকে মাল ভাবা শুরু করছে! এবং ঠিক সেভাবেই ট্রিট করছে যেভাবে অামরা মালপত্র ব্যবহার করি।
অামার ঠিক তা মনে হয় না, একটা মুহুূর্তেই একজন মানুষ এমন হিংস্র পশু হয়ে উঠতে পারে না। এর শুরুটা হয়েছে অনেক অাগেই সবার অাড়ালে তার পরিবারের মধ্যে থেকেই। মেয়েদের প্রতি চরম হিংসা বিদ্বেষ অার একটা বিরূপ মনোভাব নিয়েই ছোট থেকে বড় হয়েছে এই মানুষগুলো। অার সেক্স, সে তো এক নিষিদ্ধ অধ্যায়। অার নিষিদ্ধ বিষয়গুলোর প্রতি মানুষের অাগ্রহের মাত্রাটা বরাবর একটু বেশিই থাকে।
তবে পুরুষদের মনের মধ্যে নারী বিদ্বেষী ধারণাগুলো ঢুকিয়ে দেবার পেছনে সবচেয়ে বড় ভুমিকাটা বোধহয় মহিলাদের। অামি অামার সারা জীবনে কোন পুরুষকে নারীর শরীর বা চলন বলন নিয়ে এতটা বিদ্রুপ বা বিদ্বেষ প্রকাশ করতে দেখিনি, যতটা দেখেছি ঘরে বাইরে বেশিরভাগ নারীদের। অামি ঠিক জানি না কেন। কেনই বা নারীরা নিজেরাই নিজেদেরকে একটা অপছন্দ করে।
অাজকে অামরা ভাবছি একজন অপরাধীকে মৃত্যুদণ্ড দিলেই বুঝি সব সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে। সত্যিই কি তাই? অামার তো মনে হচ্ছে এটাই যদি সত্যি হয় তাহলে বোধহয় অামরা অাসল সমস্যাটা কোথায় সেটা এখনও বুঝতে পারিনি। অথবা সব বুঝেও না বোঝার অভিনয় করে যাচ্ছি।
অামি বলছি না যে অপরাধীকে মৃত্যুদণ্ডের বদলে সোনার মেডেল দেয়া হোক। বরং ওর মৃত্যুটা যেন সবচাইতে ভয়ংকর হয় সেটা নিশ্চিত করা হোক। কিন্তু এই মুহূর্তে অপরাধীকে মেরে ফেলা বা সমাজ থেকে ধ্বংস করার চাইতেও যে কাজটা বেশি জরুরি, তা হলো অপরাধের গোড়াটা খুঁজে বের করে সেটাকে কীভাবে সমাজ থেকে ধ্বংস করা যায়, সেই উপায়গুলো খোঁজা।
তা না হলে একটা একটা করে কয়টা অপরাধীকে অাপনি ধ্বংস করতে পারবেন? অার বুঝবেনই বা কীভাবে যে কার মনের মধ্যে বা কার মাথার মধ্যে কী চিন্তা ঘুরপাক খাচ্ছে! সমাজে নিশ্চয় অপরাধীদের জন্য অালাদা কোনো জায়গা নেই, যেখানে শুধু ওরাই থাকে। ওরা অামাদেরই কারও সন্তান, কারও ভাই, কারও স্বামী বা কোনো সন্তানের পিতা। যে পরিবার যে সমাজ এই মানুষগুলোর মনের মধ্যে দিনে দিনে অসুস্থতার বীজ বুনে এদেরকে বিকৃত করে ফেলছে। এই সমস্যার সমাধানটাও ওই একই জায়গা থেকে শুরু করতে হবে। যেটা অবশ্যই একদিনে সম্ভব হবে না। কারণ এটার জন্য কোনো সিক্রেট ফর্মুলা নিশ্চয় নেই।
অামরা অহেতুক সমালোচনাগুলো বাদ দিয়ে মনুষ্যত্বের প্রকৃত চর্চাটা যখন থেকে শুরু করতে পারবো, যেদিন থেকে পরিবারের বা সমাজের এই তথাকথিত ভুল অার অসুস্থ দৃষ্টিভঙ্গি থেকে বেরিয়ে অাসতে পারবো, সেদিন থেকে বোধহয় নতুন করে অার একটা অপরাধীও তৈরি হবে না এই সুন্দর পৃথিবীতে।