PMS এবং PMDS সম্পর্কে জানা থাকা দরকার

শেখ তাসলিমা মুন:

নারীর পিরিয়ডের বিষয়ে লিখতে গেলে যে বিষয়টি সকল মেয়েদের থেকে আসে সেটি হচ্ছে পিরিয়ডের যন্ত্রণা। খুব কম মেয়েই আছে, যে এ যন্ত্রণা ভোগ করেনি। করে না। আমরা আধুনিক শিক্ষিত মেয়েরা এটিকে ‘শরীর খারাপ’ না বললেও, শরীর খারাপের সাথে যে যুদ্ধ করতে হয়, সেটি অস্বীকার করতে পারিনি। নারী সবচাইতে যন্ত্রণার ভেতর দিয়ে যায় এ সময়। এ সময় শরীরটি সে তার নিজের শরীরটিকে চিনতে পারে না। যেন এটি অন্য কারও শরীর। তার নয়। এই অবস্থাকে দুটি সিনড্রোমে দেখা হয়। Premenstrual syndrome (PMS) এবং Premenstrual dysphoricsyndrome(PMDS)।

Premenstrual syndrome (PMS) সাধারণত বেশির ভাগ ক্ষেত্রে হয়। এটি পিরিয়ডের এক সপ্তাহ আগে শুরু হয় এবং রক্তস্রাব পুরোপুরি শুরু হলে দূর হয়। এর কারণ নিয়ে বেশি কিছু জানা যায় না। তবে ডিম্বস্ফোটন এবং পোস্ট্রেজেন হরমনের কারণে শরীরে একটি নেগেটিভ ইফেক্ট তৈরি হয় এবং তার থেকে এ সাফারিংস। কারও কারও ক্ষেত্রে এর ইন্টেন্সিটি স্বাভাবিকের থেকে বেশি হয়, তখন সেটাকে বলে Premenstrual dysphoricsyndrome(PMDS)।

উভয় ক্ষেত্রেই মেয়েরা শারীরিক এবং মানসিক দুভাবে এ উপসর্গকে ফেইস করে। শারীরিক দিক থেকে মাথা ব্যথা, ক্লান্তি, মাসল ব্যথা, শরীরে ব্যথা, স্তনে ব্যথা ও ফোলা এবং উরু পা ফুলে যাওয়া। মানসিক যন্ত্রণাটা আরও সবচাইতে কষ্টকর হয়। মেজাজ খিটখিটে এবং উঠানামা, ডিপ্রেশন, অ্যাঙ্গুইশ, কান্না এটাক, ঘুমহীনতা, খাওয়ার প্রবণতা বা খেতে ইচ্ছে না করা।

এ ধরনের উপসর্গ টিনেজ থেকে শুরু হতে পারে। তবে খুব বেশী কমন ত্রিশ বছরের পর থেকে। জীবন নরক হয়ে ওঠে ওই কটা দিন। এর জন্য মেডিকেশন রয়েছে। পশ্চিমের দেশগুলোতে PMS টেস্ট খুব কমন। এ টেস্টের মাধ্যমে এটির মেডিকেশন নির্ধারণ করা হয়।

শুধু PMS নয়, অনেক ক্ষেত্রে হরমোনাল কন্ট্রাসেপটিপের জন্য স্বাভাবিকের থেকে বেশি রক্তপাত হয়, যা তাদেরকে নাজেহাল করে। অনেকের ক্ষেত্রে জরায়ুতে সিস্ট বা মায়াম এক ধরনের ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র গিট্টু দেখা দেয়, যা অতিরিক্ত রক্তপাত ব্যথার কারণ ঘটায়। এগুলো খুব ছোট ১৫ মিনিটের অপারেশনের মাধ্যমে ছেঁচে ফেলে জীবন সহজ করার বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। এজন্য প্রতিটি মেয়ে যখন স্বাভাবিকের থেকে ব্যথা এবং রক্তপাতের শিকার হবে, তাদের উচিত হবে ডাক্তারের সাহায্য নেওয়া।

PMS এর ক্ষেত্রে ঋতুচক্রের সময়টির কারেক্ট হিসাব রেখে সে অনুযায়ী আগে থেকে এ পিরিয়ডটিতে সাবধানতা অবলম্বন বা ব্যবস্থা নিয়ে সাফারিংস এর পরিমাণ কমানো যায়। এক সপ্তাহ আগে খুব স্বল্প মাত্রার এন্টি ডিপ্রেসিভ খেলে অনেক মেয়ে উপকার পায়। ওই সপ্তাহটি খুব দরকারি সপ্তাহ।
এছাড়া, একনাগাড়ে শুয়ে না থাকা, চলাফেরা করা, স্ট্রেস না নেওয়া, মাইন্ডফুলনেস বাড়ানো, নিয়মমতো খাবার এবং ঘুম, অনেক ক্ষেত্রে যোগব্যায়াম অনেক অনেক সাহায্য করে। নিজের প্রতি এ যত্নটুকুন মেয়েদের এ সপ্তাহটিকে অনেক সহজ করতে পারে।

শেয়ার করুন:
Copy Protected by Chetan's WP-Copyprotect.