জাহানারা নুরী:
দুনিয়ার এক প্রান্ত থেকে আরেক প্রান্ত পর্যন্ত যতো সভ্য দেশেই যান না কেন, পিতৃতন্ত্রের সিস্টেমটা একই রকম। কিন্তু ইসলামে নারী-পুরুষের সম্পর্কটা বলা যায় ইউনিক। পিতৃতন্ত্রের প্রবলতর বৈশিষ্ট্য যেটি- তা হলো, লিঙ্গভিত্তিক ভিন্নতাকে ভিত্তি করে বৈষম্য ও অসমতা বজায় রেখে সমাজ ও ব্যক্তিকে শাসন এবং নিয়ন্ত্রণ। এই পিতৃতন্ত্রের জাল কিভাবে দৃঢ় করে নাগরিকের জীবনের রন্ধ্রে ঢুকে বসে থাকতে হবে ইসলাম তা নির্ধারণে তার পূর্বের আব্রাহমিক ধর্মগুলো থেকে শিক্ষা গ্রহণ করেছে। যে কারণে পিতৃতান্ত্রিক নিয়ন্ত্রণের চরম প্রকাশ ইসলাম ধর্মে পূর্ণ রূপ পেয়েছে।
সবচেয়ে অর্গানাইজড পিতৃতন্ত্র কোনটি? নিঃসন্দেহে আপনি তা চিহ্নিত করতে পেরেছেন? হ্যাঁ। মুসলিম উম্মাহ। এই উম্মাহকে নিয়ে মুসলমান সম্প্রদায় গর্ব করে। নিয়ন্ত্রণেই শান্তি! হক মাওলা।
বেয়াদবিটা মনে নেবেন না। লেখা খুব সিরিয়াস হয়ে যাচ্ছে। বরং উম্মাহর বৈশিষ্ট্যগুলো যদি একটু ফিরে দেখে নিন। তাহলে এ নিয়ে গর্বের বিষয়টি খোলাসা হবে।
বলা হয়েছে, উম্মাহর চোখে সব মুসলমান পুরুষ সমান। ওয়াও! এবং এই মুসলমান পুরুষদের মধ্যে পারস্পরিক স্বার্থোদ্ধারের বিষয়গুলো ভাগ বাটোয়ারা করার নিয়মই শরীয়ত। মারতে আসবেন না। আপনি নিজেই দেখুন না। ইসলামের হাদীস ও কুরানের দেয়া প্রিভিলেজগুলো ঘেঁটে দেখুন একটু।
মুসলমানের প্রতিটি প্রতিষ্ঠান, সংস্থা, প্রথায় মুসলমান পুরুষদের পরস্পরের সাথে নানান কিছু বন্টন করে নেয়ার নিয়ম আছে, যেমন ধরুন, খিলাফতের উত্তরাধিকার, পিতৃ-মাতৃ-সম্পত্তি,, আল্লাহ প্রদত্ত যাবতীয় উপঢৌকন (যার মধ্যে পড়ে মেয়েমানুষ) কেনা দাস-দাসী ও যুদ্ধে গণিমতের মাল হিসেবে পাওয়া মেয়েমানুষ, বিজিতের সয়-সম্পত্তিও, বা ইহকাল ও পরকালে আনুগত্যের পুরষ্কার-সবকিছুই কিন্তু উম্মাহর পুরুষেরা পরস্পরের মধ্যে ভাগ করে নিচ্ছে। তাদের নবী যদি বারো জন নিতে পারে, তো তাদের দিয়ে গেছে কমপক্ষে চারজন এবং দাস-দাসীর অপশনটা কিন্তু এখনও খোলা।
বাংলাদেশের মেয়েরা সউদী আরব থেকে ফেরার পর যে ভয়ংকর কাহিনী বর্ণনা করে, সে সব সত্যি। কিন্তু সউদীদের দোষ দেয়া যায় না। তারা নবীর খাঁটি উম্মত। পুরাটাই পালে, মানে সুন্নতের কথা বলছি। বাঙ্গালী নিজেরে সভ্য করতে গিয়া সুন্নতরে ঘেন্না করতে শিখছে। না হলে মাতা ঠাকুরানীরা বিদেশ থেকে কাঁদতে কাঁদতে ফিরার কথা না।
সে যাক উম্মাহয় আসি। উম্মাহর পুরুষেরা সম্মিলিত হওয়ার নিয়ম রয়েছে ইসলামে। কোথায় তারা সম্মিলিত হয়? মসজিদে। পাঁচ বেলা। ইসলাম ব্যতিত আর কোনো ধর্মেই প্রার্থনার স্থানকে এতোখানি রাজনৈতিক ভূমিকা দান করা হয়নি। মুসলিম উম্মাহ একটা ইউনিট হিসেবে কাজ করবে বলে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। মুসলমানকে বলা হয়েছে, যদি কোনও কালো আফ্রিকানও কুরান হাদীসে এতোখানি দক্ষ হয় যে, তিনি নেতা বা ইমাম হওয়ার যোগ্য, তবে তাকেই বিনা প্রশ্নে অনুসরণ করতে হবে। ইসলামের প্রাথমিক যুগে কালো আফ্রিকানরা দাস হিসেবে গণ্য হতো। মুসলমানরা ইসলামের উদরতার অংশ হিসেবে কালো কাফ্রি দাস বেলালের উদাহরণ দেয়। মহান ইসলামের দ্বীনে দয়ার উনি এক নম্বর নিদর্শন।
এখন হাদীস কথিত ঐ এক ইমামের পেছনের উম্মাহটিকে কল্পনা করুন-মুসলমান পুরুষের কাছে কোন্ ধরনের ইউনিটি আশা করা হয়, তার মাজেজা বুঝতে পারবেন। ইউনিটির মূল শক্তিটা এখানে যে, মুসলমান পুরুষ একে অপরের ভাই হতে হবে। একাধিক ইউনিট নিয়ে এক একটা কমিউনিয়ন হবে ইসলামের মূল শক্তি। এক ইমামের পেছনে দাঁড়ানো ভাইয়ের জন্য আরেক ভাইয়ের ভালোবাসাই সেই শক্তিতে প্রেরণা যোগাবে। এক মসজিদে তারা এক ইমামের পিছনে দাঁড়িয়ে নামাজ পড়ে এবং আল্লাহর নামে তাদের সংখ্যা বৃদ্ধি করতে- হয় জিহাদ, নয় অন্য ধর্মের মানুষকে নিজ ধর্মে দীক্ষিত করা, নয় তো নারীকে লাগাতার গর্ভবতী করে মুসলমান উৎপাদন করার পথে কাজ করে যাবে। এক ভাই জিহাদে গেলে সে নিহত হওয়ার পর তার স্ত্রী নামক জমিকে চাষ করবে কোন্ ভাই, তা নির্ধারিত থাকবে।
সবচেয়ে বড়ো কথা, এই উম্মাহ জীবন শেষ হবে না। কারণ তারা পরকালে আরেক জীবনে বিশ্বাস করে। বিশ্বাস করে সে জীবনেও উম্মাহর পুরুষরাই সেরা সুখ ও সমৃদ্ধির জীবন যাপন করবে।
এই সম্মিলিত ভালোবাসা ও ভাগ বাটোয়ারা বন্ধনে বাঁধা ব্রাদারহুডের পরিচালক কে? কী? এক রসূল, তার কথিত উক্তিগুলো, তার উচ্চচারিত কুরানের বাণীর প্রতিশ্রুতি বা ভীতিসমূহ এবং এক আল্লাহতে বিশ্বাস- যাকে নবী মোহাম্মদ প্রি-ইসলামিক যুগের একাধিক উপাস্যের দল থেকে বেছে নিয়েছেন। মোটামুটি এই ফরমেটে সব ধর্মকেই ফেলতে পারবেন। কম বেশি একই মাল সব।
ধর্মীয় উম্মাহ একটি কমিউনাল গোষ্ঠী, যেখানে ব্যক্তি মুসলিম পুরুষরা সম্মিলিত হয়, ঐক্যবদ্ধ হয় একটি বিশ্বাসে, বিশ্বাস বলতে এখানে বুঝাচ্ছি কতগুলো ধারণা, রীতিনীতি, যা দিয়ে গোষ্ঠীবদ্ধতাকে রূপ দেয়া হয়েছে, উদ্বুদ্ধ করা হয়েছে, তাড়িত করা হয়েছে কিছু একটা অর্জনে।
এই সঙ্ঘবদ্ধতা কাকে কেন্দ্র করে? একজন পুরুষ, তার কয়েকজন অনুসারী, তার কথিত একজন সৃষ্টিকর্তাকে কেন্দ্র করে।
উম্মাহর প্রত্যেক পুরুষ নাগরিক গুরুত্বপূর্ণ। তারা এক একজন এক একটা প্রোডাকশন ইউনিটের ম্যানেজার, যেখানে তারা উম্মত তৈরি করে এবং তার নিজের বিশ্বাসের মূল্য হিসেবে কর্তৃত্বের ও সম্পত্তির উত্তরাধিকারী হয়। উম্মাহর নাগরিক পুরুষের এই প্রোডাকশন ইউনিটটি হচ্ছে পরিবার।
এখন আসুন উম্মাহর বৈশিষ্ট্যের পাশাপাশি ‘পরিবার’ কী, তা একটু দেখি। পরিবারকে বুঝতে হবে যৌন বৈশিষ্ট্য অনুযায়ী ব্যক্তির স্পেস নির্ধারণের অন্যতম উদাহরণ রূপে। এক অর্থে ইসলামকে কোনও স্পিরিচুয়াল ধর্ম বলা ঠিক নয়। এটা সম্পূর্ণ বস্তুবাদী একটা ধর্ম। এর প্লেইন অ্যান্ড সিম্পল ভোগ ব্যবস্থাপনা, সম্পদ, যৌনতা ও ক্ষমতা ব্যবস্থাপনা দেখলেই বিষয়টি বোঝা কঠিন নয়।
ইসলাম সমাজের স্পেসকে ব্যবহার করেছে মানবজাতির অর্ধেককে অন্য অর্ধেকের পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে রেখে-যাদের ইসলাম বলছে উম্মাহ-ইসলামিক ব্রাদারহুডের ভাইরা। এই ভাইরা সুযোগ সুবিধার বিনিময়ে মুষ্টিমেয় ইমাম, ফিকাহ শাস্ত্রবিদ, ও নেতার অধীনস্ত। তারা যা বলছে, তাই বিধান হিসেবে মান্য করার ব্যবস্থা পাকাপোক্ত করা এদের কাজ।
ইসলামের হায়ারারকিতে পরিবার নিম্নতম প্রোডাকশন ইউনিট। এর মধ্যে নাগরিকদের অবস্থা হচ্ছে, পুরুষ ম্যানেজার, নারী দাস বা কর্মী, যাকে নিয়োগ দেয়া হয়েছে বিনা পারিশ্রমিকে খাটতে। আশৈশব তাকে শেখানো হয়েছে এই ভূমিকা। শেখানো হয়েছে সে যেহেতু নারী যৌন লিঙ্গের মানুষ, সে পুরুষ লিঙ্গের অধীনে থাকবে, তার সিদ্ধান্ত মানবে, তার ইচ্ছে অনুযায়ী জীবন-যাপন করবে। দুনিয়ার সব মুসলিম নারীর কাজ হচ্ছে মান্য করা।
পরিবারের বৈশিষ্ট্যের মধ্যে আপনি সেই বৈশিষ্ট্যগুলো পাবেন না- যা উম্মাহর মধ্যে থাকতেই হবে-বলা হয়েছে। মুসলিম উম্মাহর বৈশিষ্ট্যগুলো ভেঙ্গে দেয়া হয়েছে মুসলিম পরিবারের চরিত্র নির্মাণে। পরিবারকে তৈরি করা হয়েছে নাগরিক মানুষের লিঙ্গের বৈশিষ্ট্যের ওপর ভিত্তি করে। তার মধ্যে নারী ও পুরুষ নাগরিক পরস্পরের সাথে নানা জিনিস সমান ভাগ বন্টন করে নেবে তা বলা হয়নি। তাদের পরস্পরের স্বার্থ রক্ষা করে চলতে বলা হয়নি। তাদের মিলে-মিশে এক ব্রাদারহুড গঠন করতে বলা হয়নি। বলা হয়েছে, আলাদা তোমরা, কারণ তোমাদের যৌনাঙ্গ আলাদা।
ইসলামিক পরিবারে যৌনাঙ্গের গঠনের ওপর ভিত্তি করে গড়ে তোলা হয়েছে অসাম্য, অসম অবস্থানের বোধ, রীতি-নীতি, প্রভাব- প্রতিপত্তি। পরিবারের ভিত্তিতে প্রেরণা দেয়া হয়েছে ভিন্নতাকে, আলাদা হওয়ার গুরুত্বকে। ভিন্নতাকে ব্যবহার করা হয়েছে নারীকে উম্মাহর প্রতিনিধি পুরুষের কাছ থেকে বিচ্ছিন্ন রাখতে ও সে যে উম্মাহর সমান অংশ এই দাবি থেকে দূরে রাখতে।
এই বিচ্ছিন্নতা, ভিন্নতার ওপর ভিত্তি করে তৈরি হয়েছে নারী-পুরুষের শ্রমের ধরন কী হবে, তাদের শ্রমের মূল্য ও মর্যাদা কতুটুকু হবে ইত্যাদি। একই সাথে তৈরি করা হয়েছে উত্তরাধিকারের ভিন্নতা বা ডিভিশন অব ওনারশিপ। বিভক্তির মাধ্যমে স্থায়িত্ব দেয়া হয়েছে নারী-পুরুষের পরস্পরের প্রতি অনাস্থা ও অবিশ্বাসকে। এককে অপরের অধীনস্থ করে রাখার ব্যবস্থা এবং একের ওপর অন্যের কর্তৃত্ব চিরস্থায়ী করা হয়েছে।
বহু ধর্মের ধরণীতে এই ব্যবস্থা ধর্মের এমন একটা ডিফেন্স মেকানিজম তৈরির প্রয়াস, যা দিয়ে উম্মাহর নাগরিকদের জন্য মানব প্রজাতির তিনভাগের দুই অংশকে চিরস্থায়ীভাবে দাস হিসাবে ব্যবহার করার ব্যবস্থা করা সম্ভব হয়েছে। এবং যে ব্যবস্থা দীর্ঘস্থায়ী করার সব রকমের আট-ঘাট বেঁধে দেয়া হয়েছে ধর্মগ্রন্থ, এর অলৌকিকতা, ও হাদীস কিম্বা বামুনদের টীকা-টিপ্পনী দিয়ে। ইসলামে হাদীস, ওহী সূত্রে প্রাপ্ত কুরান সব দেশে সব কালে মুসলমানের পারিবারিক আইনের ভিত্তি।
ইসলামী যৌনতা বিষয়ক ফিকাহ শাস্ত্র মতে, মেয়েদের বিবাহের বয়সের বৈশিষ্ট্য হচ্ছে রজঃস্বলা হওয়া, সিক্তস্বপ্ন দর্শন ও গর্ভধারণোপযোগী হওয়া। দৈহিক ও মানসিক যৌন চাহিদা পূরণের জন্য বিবাহে নানাভাবে উৎসাহ দেওয়া হয়েছে এ ধর্মে। কারণ এ ধর্ম প্রবক্তার ধারণা-মানব যৌনতার একমাত্র উদ্দেশ্য হলো পেনিট্রেশন ও নিষেক-যা থেকে উম্মাহর মুসলমানের সংখ্যাবৃদ্ধি ঘটবে। সেকারণেই অবিবাহিত থাকা নিষিদ্ধ, সমকামিতা, পায়ূকামিতা নিষেধ ও হারাম।
ইসলাম পূর্ব আরবে দাসপ্রথা প্রচলিত ছিল, যাকে একটু রদবদল করে ইসলামে বৈধ করা হয়েছে। কুরানে পনের বার একটি বাগধারার উল্লেখ রয়েছে-’মা মালাকাত আইমানুকুম’-তোমার ডান হাত যার মালিকানা ধারণ করে অর্থাৎ ক্রয়করা দাসী বা যুদ্ধবন্দি হিসেবে প্রাপ্ত দাসী। মুসলমান পুরুষ তার ক্রয়কৃত একাধিক দাসীর সাথে যৌন সম্পর্ক স্থাপন করতে পারবে, চাইলে এদের মুক্ত করে দিয়ে বিয়েও করতে পারবে। উপপত্নী হলেও এদের সন্তান বৈধ এবং সম্পত্তির অধিকারী।
নবীর কথানুযায়ী নারীকে বিবাহ করার কারণ চারটি; সম্পদ, বংশমর্যাদা, সৌন্দর্য এবং ইসলামে অন্তর্ভূক্তি ও আনুগত্য। উত্তম নারীর বৈশিষ্ট্য নানাবিধ;
১, সতিসাধ্বী ও অনুগত এবং লজ্জাস্থান বা যোনী নিরাপদে রক্ষাকারী (কেননা পুরুষের কাছে সে গেলেই পুরুষ তার যোনীর ওপর ঝাঁপিয়ে পড়বে)
২. ইসলাম ও এ ধর্ম-বিশ্বাসের সহযোগী।
স্বর্গলাভকারী রমণী কারা? নবী বলছেন, ‘যারা স্বামীর প্রতি প্রেমময়ী ও অধিক সন্তান প্রসবকারিণী। স্বামী ক্রুদ্ধ হ’লে সে এসে স্বামীর হাতে হাত রেখে বলে, আপনি আমার প্রতি সন্তুষ্ট না হওয়া পর্যন্ত আমি ঘুমাব না’। অন্য বর্ণনায় এসেছে-‘এই আমার হাত আপনার হাতের মধ্যে রাখছি, আপনি আমার প্রতি সন্তুষ্ট না হওয়া পর্যন্ত আমি চোখে মুদিত করব না’। অর্থাৎ আমি ঘুমাবো না, আরাম-আয়েশ করবো না।
নবীকে জিজ্ঞেস করা হয়েছিল ‘কোন নারী উত্তম? তার উত্তর ছিল, ’যে স্বামীকে আনন্দিত করে যখন সে (স্বামী) তার দিকে তাকায়; যখন সে নির্দেশ দেয়, তা মান্য করে। তার নিজের ও স্বামীর সম্পদের ব্যাপারে স্বামীর অপছন্দনীয় কাজের বিরোধিতা করে না’ অর্থাৎ স্বামীর পছন্দ নয়, এমন কাজ করবে না ও স্বামীর বিনা অনুমতিতে তার সম্পদ খরচ করবে না।
সম্পদ খরচের কথাটা কোত্থেকে এলো?
নবীর কথায় ‘আমি কি তোমাকে মানুষের সর্বোত্তম সম্পদ সম্পর্কে অবহিত করবো না? তা হ’ল, নেককার স্ত্রী। সে (স্বামী) তার (স্ত্রীর) দিকে তাকালে স্ত্রী তাকে আনন্দ দেয়, তাকে কোনো নির্দেশ দিলে সে তা মেনে নেয় এবং সে যখন তার থেকে অনুপস্থিত থাকে, তখন সে তার সতীত্ব ও তার সম্পদের হেফাযত করে’।
কে ভালো স্ত্রী?
নবীর কথায় ‘কোন লোক তার স্ত্রীকে নিজ প্রয়োজন পূরণের উদ্দেশ্যে ডাকলে সে যেন তার নিকট আসে, যদিও সে চুলার উপর রান্না-বান্নার কাজে ব্যস্ত থাকে’। কিম্বা বলা হয়েছে, ‘যখন স্বামী তার স্ত্রীকে নিজ প্রয়োজন পূরণের উদ্দেশ্যে ডাকে, সে যেন তার ডাকে সাড়া দেয়, যদিও সে উটের গদির উপরে থাকে’।
স্বামীর অধিকার পূরণে অগ্রগামী: এটা পাওয়া গেছে উম্মুল হুছাইন বিন মিহছান এর ফুপুর কাছে, যে নিজ প্রয়োজনে কখনো নাকি নবীর কাছে যায় ও ফেরার কালে নবী তাকে জিজ্ঞেস করেন যে, সে বিবাহিতা কি না। তিনি ‘হাঁ’ বললেন। মোহাম্মদ জিজ্ঞেস করলেন,’তুমি তার জন্য কেমন?’ তিনি বললেন, আমি অক্ষম না হওয়া পর্যন্ত তার সেবা করি।’ মোহাম্মদ নাকি বলেছিলেন, ’লক্ষ্য কর, তার থেকে তুমি কোথায়? কেননা সে তোমার জান্নাত ও জাহান্নাম’।
খরচের ক্ষেত্রে স্বামীকে কষ্ট না দেওয়া। হাইসেন না। সত্যি এমত কথাবার্তা মুসলমানের জীবনকে পরিচালনা করছে।
আরো আছে ‘তোমরা স্বগৃহে অবস্থান কর, প্রাচীন জাহেলী যুগের নারীদের মত নিজেদেরকে প্রদর্শন করো না’ (আহযাব ৩৩/৩৩)। নবী বলেছেন,‘নারী হচ্ছে গোপন বস্তু। যখন সে বাড়ি থেকে বের হয়, তখন শয়তান তাকে (সৌন্দর্য প্রকাশে) উদ্বুদ্ধ করে’।
এইখানে থামি। কিম্বা আপনারা চাইলে চলবে…