পরকিয়ায় মেয়েরাই ঠকে বেশি

মনোরমা বিশ্বাস:

আমার এক পরিচিত নারী, তেমন শিক্ষিত নয়, এদেশে আসে অন্যের বউ সেজে। গ্রিনকার্ড হওয়ার পর সেই পুরুষকে ডিভোর্স দিয়ে দেশের একজন উচ্চশিক্ষিত ছেলের সাথে সম্পর্ক করে, এবং তাকে বিয়ে করে নিয়ে আসে। নারীটি বেশ কর্মঠ, এদেশে কর্মঠ হলে যে কেউ বাড়ি গাড়ি করতে পারে, আর অলস হলে পিএইচডি ধারীও কিছু করতে পারে না।

তেমনই এই নারীর স্বামী তেমন কিছুই করতো না। বউয়ের ইনকামেই চলতো। আমাদের সমাজে বউ কিছু না করলেও অসুবিধে নেই, কিন্তু স্বামী বউয়ের আয়ে বসে বসে খাবে, এটা কেউ মেনে নেয় না। এ নিয়ে ঐ মেয়েটির মনে ক্ষোভ ছিল এবং তাদের স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে মনোমালিন্য ছিল।

স্বামী মাঝে মাঝে তার বন্ধুদের নিমন্ত্রণ করতো, বউ দেখতো, এই বন্ধুরা সবাই বাড়ি-গাড়ির মালিক, অথচ তার স্বামী বেকার।

মেয়েটি তখন এই বন্ধুদের মধ্য থেকে একজনের সাথে পরকিয়া শুরু করলো।
সুখ স্বপ্নে ভাসতে থাকলো সে। বছর খানেকের মধ্যে ঝগড়াঝাঁটি করে স্বামীকে পুলিশ ডেকে বের করে দিল। পুলিশ স্বামীকে জেলে ঢুকালো। এদিকে মেয়েটি মহাসুখে পরকিয়া করে চললো।

মেয়েটি ধরেই নিয়েছে, এর সাথে সে বাকি জীবন এভাবেই কাটাবে। প্রতি সপ্তাহে হোটেলে গিয়ে ঘন্টাখানেক সময় ব্যয় করে শারীরিক চাহিদা মিটিয়ে আসতো।
এ কাজে সব সময় মেয়েটির আগ্রহই বেশি থাকতো। স্বামীকে বের করে দিয়ে ফাঁকা মাঠে সে গোল দিতে লাগলো।

এভাবেই চলতে লাগলো। হাজবেন্ডের বন্ধুর সাথে সে মনের সুখে পরকিয়া চালিয়ে যেতে থাকলো।
কথায় আছে, চোরের দশদিন, গেরস্থ্যের একদিন। তারা একদিন ধরা পড়ে গেলো। সবাই বুঝে গেলো মেয়েটি কেন স্বামীকে তাড়িয়ে দিয়েছে। আর প্রেমিক পুরুষ বউ রেখে বন্ধুর বউয়ের সাথে এভাবে পরকিয়া করাও কেউ সমর্থন করলো না।

প্রেমিক লেজ গুটিয়ে পালিয়ে গেলো, আর কখনও মেয়েটির সাথে দেখা করলো না।
মেয়েটি তখন মরিয়া হয়ে প্রেমিককে পাওয়ার চেষ্টা করলো, প্রেমিকের বউকে আঘাত করতে লাগলো। সমস্ত আক্রোশ পড়লো প্রেমিকের বউয়ের উপর।

দু’জন প্রাপ্ত বয়স্ক নরনারী যৌনকর্ম করতেই পারে, এটা নেচারের ধর্ম। কিন্তু অনৈতিকভাবে অন্যকে আঘাত করা কেনো? আর মহিলার উচিৎ ছিল একজন সিংগেল লোক বেছে নেওয়া। বিবাহিত লোক সে তো একদিন নিজের সংসারে ফিরে যাবেই।
বুদ্ধদেব বসুর ‘রাত ভ’রে বৃষ্টি’ বই তে লিখেছেন, বিবাহিত প্রেমই আসল প্রেম, এটা অস্বীকার করা যায় না, আমাদের সামাজিক কারণেই।

ওই মেয়েটি তার প্রেমিকের সংসার ভাংগার জন্যে অনেক চেষ্টা করেছে, এখনো করছে।
এখন সে মেন্টাল পেশেন্ট, মনোরোগ বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের কাছে নিয়মিত যাওয়া লাগছে।
সেই জন্যেই মেয়েদের পরকিয়া করতে ভেবে চিনতে করতে বলি। এক্ষেত্রে মেয়েরা ঠকে বেশি।

শেয়ার করুন:
Copy Protected by Chetan's WP-Copyprotect.