সতী কিংবা ছিনালের পুংলিঙ্গ নেই

ফাহমি ইলা:

‘একজন লেখিকা একাধিক পুরুষকে কামনা করলে হয় ছিনালি,
কারো বুকের তিল দেখা গেলেও দোষ।
তোমরা বাপু কেনো এতো নাখোশ!’

একজন কবি একাধিক প্রেমে পড়লে সেটা কাব্য, সেটা প্রেম। সে বিশ্বকবি, জাতীয় কবি কিংবা ‘প্রেম ও দ্রোহ’র কবি।
নারীকে কবি হতে গেলে, চিত্রশিল্পী হতে গেলে, লেখিকা হতে গেলেও খুব খেয়াল করে ‘সতীত্ব’র খোলশে মুড়ে রাখতে হবে নিজেকে, নতুবা সে ছিনাল। আচ্ছা কবি, যুগে যুগে আপনারা যাদের প্রেমে পড়েছেন কিংবা পুড়েছেন তারা কী ছিনাল ছিলেন? কিংবা যাদের সাথে গিয়েছিলেন একাধিক সঙ্গমে?

না না, আপনাদের কবিত্বপূর্ণ শৈল্পিক প্রেম-সঙ্গমকে খাটো করছি না একদম। শুধু বলতে চাইছি, ছিনালদের ঘাটতে ঘাটতে আপনারাও হয়ে গেছেন পাক্কা জহুরী! আপনারা জহুরী, আপনারাই সৃষ্টিকর্তা। কর্তার ন্যায় সৃষ্টি করে চলেছেন সতী নারীকে, ছিনাল নারীকে।

সতী কিংবা ছিনালের পুংলিঙ্গ নেই। একটি মাত্র লিঙ্গ নিয়ে তাদের জন্ম। নিজের মত করে পাবার বাসনা, দেখবার বাসনায় মত্ত হয়ে যখন বিপরীত বা ভিন্নটা দেখে ফেলেন হে সৃষ্টিকর্তা, তখন নারী হয় ছিনাল! পাক্কা জহুরীর চোখ আপনাদের!

নারী যদি হয় নারীবাদী, সে ছিনাল
নারী যদি হয় প্রেমে কামে মত্ত, সে ছিনাল
নারী যদি হয় সূর্যস্পশ্যা, সে ছিনাল
নারী যদি না হয় ‘আমার’ মতোন, সে ছিনাল
নারী যদি না হয় সতী, সে ছিনাল
নারী যদি না হয় মনের মতো, সে ছিনাল গো, সেও ছিনাল!
নারী জোরে কথা কইলে ছিনাল,
জোরে হাসলে, চিৎকার করলেও ছিনাল।
আসলে এসব কিছুই না
নারী নিজেরে নিজের মতো বুঝলে ছিনাল
পুরুষের মতো বুঝলে সতী।

শেয়ার করুন: