শামীম রুনা:
এক বছর পর আবার আমির খান! গত বছরের রিটায়ার্ড পালোয়ানজী এবার স্লিম ট্রিম স্টাইলিশ মিউজিক ডিরেক্টর শক্তি কুমার। ওয়াও! বরাবরের মতো এই ছবিতে নতুন গেটআপের সাথে ভিন্ন ঢং-এর অভিনয়, রঙিলার মুন্নার মডার্ন ভার্সন বলা চলে। আমিরের সাথে পাল্লা দিয়ে অভিনয় করেছে জাইরা ওয়াসিম, ওর স্বতঃস্ফূর্ত অভিনয় আমরা দাঙ্গাল ছবিতে দেখেছি, “সিক্রেট সুপারস্টার”-এ আরও প্রাণবন্ত সে।
এই দুই চরিত্রের পাশাপাশি আরও একটি চরিত্র নদীর সুক্ষ্ম কিন্তু স্রোতস্বিনী ধারার মতো কাহিনীকে টেনে নিয়েছে সে হলো, নাজমা; ইনসিয়ার মা। মুসলিম কনজারভেটিভ স্বামীর হাতে শারীরিক আর মানসিক শত অপমান সহ্য করেও নিজের সমস্ত অপ্রাপ্তির বেদনা থেকে নিজ কন্যাকে দূরে রাখার জন্য লড়ে গেছেন, নীরবে। কন্যার স্বপ্ন পূরণের চেষ্টায় সচেষ্ট, তারপরও এই সমাজে একজন পুরুষের আশ্রয় হারানোর আতংকে ভীত। শেষ পর্যন্ত নাজমাকে আমরা রুখে দাঁড়াতে দেখি, হয়তো মেয়ের অর্থনৈতিক স্বাবলম্বী হওয়ার সুযোগ তাকে এমন একটি সিদ্ধান্ত নিতে সাহস জুগিয়েছে, যদিও কথাটি কঠোর শোনাচ্ছে।
কিন্তু এটিও সত্যি, নারীর স্বাধীনতার জন্য অর্থনৈতিক স্বাবলম্বী হওয়া একটি অপরিহার্য অংশ। এই সিনেমাটি মা মেয়ের গল্প, এক মা সন্তানের স্বপ্ন বোনার কাজটি করে গেছেন কন্যার শৈশব থেকে, কন্যাকে, তার গন্তব্যে পৌঁছে দিয়ে মেয়ের চোখে মা’ই শেষ পর্যন্ত সিক্রেট সুপারস্টার। “সিক্রেট সুপারস্টার” এক কিশোরীর স্বপ্ন ছোঁয়ার গল্প বয়ান করার আড়ালে সমাজের দগদগে এক ঘা’র বয়ান করে। একবিংশ সমাজে এসেও শুধু নারী হওয়ার কারণে নারী কতটা লাঞ্ছিত হয়। এখনও কন্যা শিশুর ভ্রুণ কতটা অরক্ষিত পিতার কাছেও।
একদম শেষ দৃশ্যে স্টেজ সিনে এসে অতিরিক্ত মনে হওয়া ছাড়া পুরো ছবিটি মেদ বর্জিত। নারীবাদী তকমা সাঁটা অনেক সিনেমাও এতো প্রকটভাবে পারিবারিক ভায়োলেন্স, পদে পদে নারী লাঞ্ছনা, আধুনিক বিশ্বে বাস করেও কন্যা ভ্রুণ হত্যার কথা এতো সহজ সুরে বলতে পারেনি।
এখানে এসে বাবার চরিত্রটিকে প্রশংসা করতে হয়, ছবিতে চরিত্রটি যখনই এন্ট্রি করেছে, তখনই দর্শকের মনে বিদ্বেষ ভাব হয়েছে, এখানেই তো একজন অভিনেতার সাফল্য।
সব কিছু মিলে একটি ভালো সিনেমা “সিক্রেট সুপারস্টার”।