জান্নাতুন নাঈম প্রীতি:
আমি যতদূর জানি, হিন্দি ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির সর্বকালের সেরা নায়িকাদের একজন রেখা তার বাবার পরিচয় কোথাও দেন না। কারণ রেখার জন্মের পর রেখার বাবা আর তাঁর মা’কে স্ত্রী হিসেবে মেনে নেননি, মেনে নেননি রেখাকেও। ইউটিউবে শাকিব খান আর সাকিব আল হাসানের একটা অনুষ্ঠান দেখেছি, উপস্থাপক ছিলেন ফারহানা নিশো। সাক্ষাতকারটা যখনকার তখন শাকিব অলরেডি বিবাহিত, সাকিব আল হাসানও বিবাহিত। কিন্তু শাকিব খান নেকু নেকু গলায় হেসে বললেন- বিবাহিত জীবন নিয়ে আমার আইডিয়া নেই! আমিতো সাকিব আল হাসানের মতন বিবাহিত না!
গতকাল ছিল অপু ও শাকিব পুত্র আবরাম খান জয়ের প্রথম জন্মদিন। বিখ্যাত বাবা-মার কন্যা পুত্র হওয়ার যে মজা আছে সেটা সে ক্রমে ক্রমেই পাচ্ছে, যদি কোনোদিন গুগলে নিজের প্রথম জন্মদিনের ছবি-টবি দেখতে কৌতূহল জাগে তাহলে সে দেখবে- তার মহামান্য পিতা তার প্রথম জন্মদিনেও আসেনি! সে আবিষ্কার করবে, তার মহামান্য বাবা তার এমনকি জন্মের স্বীকৃতিও দিতে চায়নি! অথচ ‘খান’ নামটি তার গলায় মাছের কাঁটা হয়ে বিঁধে আছে!
শাকিব খানের অন্ধভক্তরা বলে ওঠে, বিয়ের কথা স্বীকার করায় তার ভক্ত কমে গেছে, আমিতো দেখিনা তার নমুনা! বিপাশা-তৌকির, আলমগীর-রুনা লায়লা, ওমর সানি-মৌসুমি, এই জুটিরা কি বিদেশী ইন্ডাস্ট্রির লোক? অপু বিশ্বাসের সাথে বিয়ের জন্য শাকিব খানের নাম কমে গেছে এই অভিযোগ সত্য নয়, যদি হতো তাহলে বিয়ের পর পাশের দেশের অভিষেক বচ্চন ঐশ্বরিয়াকে বিয়ে করার পর জানাতেন না- তাদের ফ্যামিলির শেয়ারের দাম বেড়ে গেছে কেবল ঐশ্বরিয়া যুক্ত হওয়ার কারণে!
শাকিব খান নাকি শাহরুখকে ফলো করেন? কই বিবাহিত হওয়ায় শাহরুখের নাম-যশ-খ্যাতি কমেছে কি? আর অপু বিশ্বাস! সেই বা এতোসব অপমান মেনে নিচ্ছে কেন? কেন সে তার ছেলের স্বীকৃতির জন্য বার বার নিজেকে ছোট করছে? এই সময়ে এসে এতোটা মেরুদণ্ডহীন কোনো নারীকে কল্পনাও করা যায় না! আমি হলে কবেই ডিভোর্স দিয়ে চলে আসতাম!
জয় নামের শিশুটির জন্য আমার খুব কষ্ট হচ্ছে, কারণ সে একদিন আবিষ্কার করবে তার স্বীকৃতির জন্য তার মা’কে টিভি চ্যানেলে গিয়ে কান্নাকাটি করতে হয়েছে, প্রথম জন্মদিনেও অনুষ্ঠানভর্তি লোকের কাছে অসম্মানিত হতে হয়েছে! আমি তাই মনেপ্রাণে চাইছি- ছেলেটি একদিন বলবে, আমি আমার বাবা নামক লোকটির মতন হতে চাই না কোনোকালেও, আমি মানুষ হতে চাই!
আসল কথা হচ্ছে জন্ম দিলেই কেউ বাবা-মা হয়ে যায় না। বাবা মা হতে যোগ্যতা লাগে! নইলে নেশাদ্রব্য ইয়াবাও বাবা হয়ে যেতো এতোদিনে, সত্যিকারের বাবাদের আর লাগতো না!