শেখ তাসলিমা মুন:
ধর্ষণের প্রকোপ বেড়েছে মহামারির মতো। রূপাকে ধর্ষণ করে ঘাড় মটকে ছুঁড়ে ফেলার কথা আর বলবো না। এক বছরের নিচে যে শিশুর বয়স, আর আশি বছরের বৃদ্ধা, কেউই বাদ যাচ্ছে না। সেখানে সম্প্রতি ধর্ষণের সময় এক নারীর ব্লেড দিয়ে ধর্ষণকারী পুরুষের লিঙ্গ কর্তনে পুরুষ মহলে বেশ কিছু উদ্বেগ লক্ষ্য করা গেছে।
পুরুষ লেখকেরা উচাটন, তাদের উদ্বেগের কথা পুরুষ সমাজে জানিয়েছেন। এভাবে যদি পুরুষ লিঙ্গ কর্তন হতে থাকে তাহলে লিঙ্গের মারাত্মক অনটন পড়ে যাবে। বিষয়টি কিন্তু বেশ সঠিক। ধর্ষণের হার যেভাবে বেড়েছে, তাতে যদি সব নারী ব্লেড দিয়ে কটাকট পুরুষাঙ্গ ফেলে দ্যায়, তাহলে পৃথিবী এক ভয়াবহ পুরুষ লিঙ্গ ক্রাইসিস ফেইস করবে কোনো সন্দেহ নাই।
এ ক্ষেত্রে করণীয় একটি আছে। পুরুষাঙ্গের ইনশিওরেন্স করে ফেলা। মাসিক প্রিমিয়াম ভিত্তিতে ইনশিওরেন্স করে রাখলে পুরুষাঙ্গ হারালে বিদেশ থেকে পুরুষাঙ্গ আমদানি করে ক্ষতিগ্রস্তকে পুরুষাঙ্গর ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে। শহীদুল্লাহ কায়সারের সারেং বউয়ে আমরা পড়েছি, ধর্ষণ রোধ করতে বিচি চেপে ধরে ঠেকানোর গল্প। ধর্ষণ ঠেকাতে সব চাইতে কার্যকরি মেথড বিচি চেপে ধরা। শুনেছি এতে বিচিধারী মারাও পড়তে পারেন। বিচি মেথড সবচাইতে ক্লাসিক্যাল এবং পুরাতন মেথড। গ্রামে-গঞ্জে এ মেথড বেশ জনপ্রিয়।
কিন্তু এটির বৈধতা নিয়ে এখন সভ্য সমাজে প্রশ্ন উঠেছে। একজন ধর্ষকের বিচি টিপে হত্যা করাটা কি আইনসিদ্ধ? খুবই বেআইনী। ধর্ষণ অপরাধ কবে হলো? এটি সামান্য যৌন আকাঙ্ক্ষা মাত্র। বা ওপার বাংলার দিদির ভাষায় সর্দি জ্বরের উপসর্গের মতো! কিন্তু বিচি টিপে মেরে ফেলা বা ব্লেড দিয়ে লিঙ্গ কর্তন করা? রীতিমতো ক্রিমিনাল এক্টিভিটিজ। একেবারে ১০০% ফৌজদারি অপরাধ।
প্রশ্ন কিন্তু আরেকটি আছে। ধর্ষণের মোটিভ প্রমাণ। ব্লেড দিয়ে যে উহা কর্তন করলো মেয়েটি, মেয়েটি কিভাবে বুঝলো যে তাকে ধর্ষণ করা ধর্ষকের মোটিভ ছিল। The Burden of Proof এ মেয়েটি ফেঁসে যাবে। মেয়েটি কি ব্লেড নিয়ে বসে থাকে? সর্বনাশ, রীতিমতো খুনের মোটিভ! একটি মেয়ে কথা নাই, বার্তা নাই, ব্লেড নিয়ে বসে আছে লিঙ্গ কর্তন করার জন্য!
প্রশ্ন আরেকটি, লিঙ্গ ব্লেডের কাছে আগে আসছে, নাকি ব্লেড লিঙ্গের কাছে? নিন্দুকেরা বলবে, ব্লেড এবং লিঙ্গের দেখা হলো কিভাবে? এটি একটি গভীর ষড়যন্ত্র।
মেয়েটি ধর্ষণের শিকার না হওয়া পর্যন্ত কিভাবে বুঝলো যে সে ধর্ষিত? তাঁর আগে ব্লেড ব্যবহার কিভাবে আইনসিদ্ধ হতে পারে? আগে ধর্ষিত হও, ধর্ষণ যখন অবধারিত, তখন তাকে উপভোগ করো। নাহলে মেয়েটি সভ্যভাবে বলবে, ধর্ষক ভাই, আপনার ধর্ষণ শেষ হলে বলবেন, আমি ব্লেড হাতে অপেক্ষা করছি। তার আগে ব্লেডের অপব্যবহার কেন? দামী দামী লিঙ্গ কর্তন কেন?
বিষয় আরেকটি আছে। এইযে মেয়েরা ধর্ষণের জন্য পুরুষাঙ্গ কাটা ধরছে। এটা কিন্তু বহু আগে সিগ্মুন্ড ফ্রয়েড ভাই সতর্ক করে গেছেন। তিনি বলে গেছেন, মেয়েদের পুরুষের এই অঙ্গটির প্রতি আক্রোশ আছে। তারা দিনরাত ধ্যানে-জ্ঞানে, স্বপনে-শয়নে তাদের কেন লিঙ্গ নাই, কিন্তু পুরুষের আছে সেই মনোবেদনায় দিনাতিপাত করে। একটা ঝুলন্ত বিষয় সামনে ঝুলে না, এজন্য মেয়েরা নিজেদের অসম্পূর্ণ মনে করে। তাই তারা সারা জীবন পুরুষদের ঈর্ষা করে আসে। একে বলে পিনেস এনভি। এই এনভিতে জ্বলে পুড়ে ছারখার হতে হতে সারা জীবন কাবাব করে ফেলে মেয়েরা। পুরুষাঙ্গ কাটাই নারীর মূল ইচ্ছা। ধর্ষণ একটা অজুহাত মাত্র।
এখন তারা খড়্গ ব্যাবহার করবে, না রামদা, না ব্লেড, সেটা তাদের ইচ্ছে। জয় বাবা সিগ্মুন্ড ফ্রয়েড! তুই তোর জিনিস নিয়ে খাড়া! হাতে আমাদের ব্লেডও খাঁড়া!