উইমেন চ্যাপ্টার ডেস্ক: প্রসিকিউটররা জামায়াতকে নিষিদ্ধ করার জন্য মামলার বিষয়ে চিন্তাভাবনা করছেন বলে জানিয়েছেন আইন প্রতিমন্ত্রী কামরুল ইসলাম। তিনি বলেন, আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী এ ব্যাপারে সরকার আইনের মাধ্যমে যথাসময়ে সঠিক সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবে।
বিবিসির বাংলাদেশ সংলাপে ‘জামায়াতকে একটি অপরাধী সংগঠন হিসেবে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের রায়ে চিহ্নিত করার পর এই দলটির রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ কী হতে পারে এমন এক প্রশ্নের জবাবে গতকাল শনিবার তিনি এসব কথা বলেন।
আইন প্রতিমন্ত্রী আরো বলেন, ট্রাইব্যুনালে দেওয়া দুটি রায়ে সাংগঠনিকভাবে জামায়াতের বিষয়ে স্পষ্টভাবে বলা হয়েছে। আদালতের যে পর্যবেক্ষণ তাতে অবশ্যই জামায়াতকে নিয়ে চিন্তা করতে হবে।
সংলাপে আরো উপস্থিত ছিলেন বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা মীর মোহাম্মদ নাছির উদ্দিন, ইসলামী চিন্তাবিদ ও কলামিস্ট শাহ আব্দুল হান্নান এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক ড. গীতি আরা নাসরীন।
জামায়াতকে নিষিদ্ধ করার বিষয়টা আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক স্টান্টবাজি এমন মন্তব্য করে মীর মোহাম্মদ নাছির উদ্দিন বলেন, জামায়াতকে নিষিদ্ধ করা একটি রাজনৈতিক কৌশল। ৫ম সংশোধনী বাতিল করে আওয়ামী লীগ ধর্মভিত্তিক রাজনীতির বিধান রেখেছে। তবে আওয়ামী লীগ জামায়াতকে নিষিদ্ধ করবেনা। তিনি হুঁশিয়ারী উচ্চারণ করে বলেন, কারো রাজনৈতিক অধিকার খর্ব হলে বিএনপি অবশ্যই প্রতিবাদ করবে।
গোলাম আযমের রায় সব পক্ষকে সন্তুষ্ট করতে পারেনি কেন এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘বিচার আন্তর্জাতিক মান অনুযায়ী হয়নি। বিচারের নামে জেনেশুনে কিছু লোককে ফাঁসিয়ে তা যেন নির্বাচনের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহৃত না হয় সেটি দেখতে হবে।’
এদিকে ট্রাইব্যুনালকে ‘আন্তর্জাতিক মানের নয়’ উল্লেখ করে শাহ আব্দুল হান্নান দাবি করেন, ট্রাইব্যুনালের সব রায়ই প্রশ্নবিদ্ধ। এই রায়ের উপর ভিত্তি করে জামায়াতকে নিষিদ্ধ করার কোন সুযোগ নেই বলে মন্তব্য করে তিনি বলেন, একাত্তরে পাকিস্তানের পক্ষে ছিলো জেনেই বাংলাদেশের ১০ ভাগ ভোটার জামায়াতকে ভোট দেয়। তাই একটি প্রধান রাজনৈতিক দল হিসেবে জামায়াত টিকে থাকবে।
গীতি আরা নাসরীন বলেন, জামায়াত ধর্মকে ব্যবহার করে রাজনীতি করে। বড় দলগুলো প্রশ্রয় দিলেই কেবল জামায়াত টিকে থাকতে পারে।
এদিকে সংলাপে বিচার প্রক্রিয়া নিয়ে সন্তোষ প্রকাশ করেন আইন প্রতিমন্ত্রী। বিচার আন্তর্জাতিক মান অনুযায়ী স্বচ্ছতার সাথেই হচ্ছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, যারা বিরোধিতা করছেন তারা শুধু বিচারকে প্রশ্নবিদ্ধ করার জন্যই তা করছেন।
তবে দর্শকরা গোলাম আযমের রায় নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন। কেউ মনে করেন অত্যাচার, নির্যাতন, লুণ্ঠন, বুদ্ধিজীবী হত্যা এসবের মূল নায়ক গোলাম আযমসহ দায়ী সবাইকে সর্বোচ্চ শাস্তি দেওয়া উচিত ছিল।
রায়ে সবাই খুশি হবেনা উল্লেখ করে একজন দর্শক বলেন, ‘গোলাম আযমসহ যাদের গ্রেফতার করা হয়েছে তারা সবাই রাজনৈতিক। তাই বিচার যতই স্বচ্ছ হোক তাদের অনুসারীদের কখনোই খুশি করা যাবে না।’
জামায়াতকে নিষিদ্ধের করা হলে পরবর্তিতে গোপনে সন্ত্রাসী কার্যক্রম চালানোর আশংকাও করেন একজন দর্শক।