আসুন, সম্প্রীতির গল্প বলি-১

শ্রাবণী এন্দ চৌধুরী:

অজন্তা,

আজ তোমাকে আমার কাকাবাবু ও মাসিমার গল্প বলবো। আমি যখন খুব ছোট আমার বাবা মায়ের বন্ধু ছিলেন আব্দুল কাদির ও সালমা চৌধুরী। আমাদের কাকাবাবু, মাসিমা। ওনারা সৈয়দ মুজতবা আলীর দুই বোনের ছেলেমেয়ে ছিলেন। আমি এই কাকাবাবু, মাসিমার স্নেহের ছায়ায় মানুষ হয়েছি।

আমার বাবার যখন ডায়বেটিস ধরা পড়লো, তখনো আমি স্কুল শুরু করিনি। বাবা লম্বা ছুটি নিয়েছিলেন। কাকাবাবু তখন ম্যাজিস্ট্রেট কুমিল্লায়। আমরা তখন কিছুদিন কাকাবাবু, মাসিমার কাছে ছিলাম। সেই সময় কুরবানি ঈদ পড়েছিলো। মাসিমারা কোন কুরবানি দেননি। এবং পাড়া প্রতিবেশীদের বলেছিলেন, আমাদের দাদা-বৌদি আছেন, কোনো কুরবানির গরুর মাংস কেউ পাঠাবেন না। কেউ পাঠায়ওনি।

আমি এই গল্প শুনে বড়ো হয়েছি। আমরা ছেলেমেয়েরা আজও একে অপরকে ভাইবোন ভাবি। কাকাবাবু ও মাসিমার অনেক অবদান আছে আমার জীবনে। আমার বিপদে আপদে আমি সব সময় কাকাবাবু, মাসিমাকে আমার পাশে পেয়েছি। আমার বাবা-মায়ের পর ওঁরাই আমার বাবা-মা। কাকাবাবু নেই, মাসিমা আছেন। মাসিমার ভাই সুলেমান মামা সব সময় আমাকে বলেছেন ‘আমার ভাগ্নি’। অনেকে জিজ্ঞেস করতো, উনি মুসলিম আর আপনি হিন্দু, ভাগ্নি হলেন কীভাবে। আমি হাসতাম।

আত্মার সম্পর্কই তো সবচেয়ে বড়ো।

#BeHumaneFirst

শেয়ার করুন:
Copy Protected by Chetan's WP-Copyprotect.