“মুনিয়া’’

নাদিরা সুলতানা নদী:

‘মুনিয়া’ বাবা মায়ের চতুর্থ সন্তান। দুই বোন আর এক ভাইয়ের পর প্রায় অর্ধ যুগ পর ওর এই পৃথিবী আগমন। ভাই-বোন স্বাভাবিক ভাবেই উল্লসিত নিজেদের মাঝে অনাকাঙ্ক্ষিতভাবে এতো বছর পর একটা জীবন্ত পুতুল পেয়ে।

মুনিয়া’র জন্মক্ষণে, ওর ইমিডিয়েট বড় বোন নুসরাত ছয় ক্লাসে পড়া ছাত্রী। ওর অনেক দিনের শখ ছিলো একটা ‘ময়না পাখি’ পোষার। বাবার পছন্দ না, হয়নি তাই। ময়না পাখির প্রতি বুকের মাঝে লালন করা সেই ভালোবাসার জন্যেই হোক বা বোনের প্রতি অত্যধিক ভালোবাসার জন্যেই হোক, ছোট্ট বোনের পারিবারিক নাম ‘নুজহাত আজিম’(বাবার পদবী) ঠিক হওয়ার আগেই তার এই বড় বোন ঘোষণা করে ও আমার ‘মুনিয়া পাখি’!!!

‘মুনিয়া’ বড় হতে থাকে পরিবারের সবার বুকের মধ্যিখানের মধ্যমনি হয়ে। বাকি তিন ভাইবোনের জন্মদিন পালনের কোন ঘটা না থাকলেও মুনিয়ার প্রতিটা জন্মদিন ভাই এবং বোনেরা পালন করতো মনের সব মাধুরী মিশিয়ে। মুনিয়ার চতুর্থ জন্মদিন এলো বলে, কিন্তু এর মাঝেই শান্ত সুখী পরিবারে নেমে এলো প্রথম সবচেয়ে কালো একটা দিন। মুনিয়ার সদা হাসিখুশি শান্ত সৌম্য সবার ভীষণ প্রিয় মানুষ ‘বাবা’ চলে গেলেন না ফেরার দেশে তেমন কোন অসুখ বিসুখ ছাড়াই!!!

অল্প কিছু সঞ্চয়, ঢাকায় বাসাবো’র ছোট্ট একটা বাড়ি আর মায়ের শিক্ষকতার চাকরি এই নিয়ে একসাথে চার ভাইবোনের পড়ালেখা এবং জীবন যাপন একটু হুমকীর মুখেই পড়ে গেলো হঠাৎ। সবার বড় বোন আর ভাই তাঁদের সবটুকু ত্যাগ তিতিক্ষা আর সাধ আহলাদে লাগাম দিয়ে গোটা সংসারকে সচল রেখে ‘মুনিয়া’র পৃথিবী যতোটা বর্ণিল করে রাখা যায়, চেষ্টা চালিয়ে যেতে থাকলো।

সময়ের সাথে সাথে ‘মুনিয়া’ শরীরে একটু আধটু বড় হলেও ভাই-বোনেদের কাছে যেন একটা আদুরে-আবদার খাঁচায় বন্দি উচ্ছল ‘মুনিয়া পাখি’ হয়েই রইলো। বাবার আবছায়া স্মৃতির দুঃখকে তীব্রভাবে ধারণ করার আগেই মা বড় ভাই, দুইবোন সব সময়ই বুঝিয়ে দেয় সে তাঁদের কাছে কতোখানি স্পেশাল। মুনিয়া, যেন এক ধেয়ে চলা কলকল ছলছল ছোট্ট ভালোবাসার নদী, আপাতঃ এই সুখি সংসারে!!!

সবার বড় বোন নওশাবা’র বর হয়ে যে ভদ্রলোকটি প্রথম এই সংসারে যুক্ত হয় সেও বুঝে নেয় ‘মুনিয়া’ এই সংসারের প্রাণ ভোমরা। তবে যে বোন নুসরাত ভালোবেসে মুনিয়া পাখি নাম দিয়েছিলো সেও মাঝে মাঝে একটু আধটু বিদ্রোহ করে ওকে ঘিরে অন্য সবার আদিখ্যেতা নিয়ে। ‘’নাহ, আম্মা এটা ঠিক হচ্ছেনা কিন্তু,’’ তুমি একটু অসুস্থ হলে, ‘আমরা কেউ বাসায় না থাকলে কলেজ পড়ুয়া ‘মুনিয়া’ একটু ভাতও চুলায় চাপাতে শিখছেনা এটা কেমন কথা এই নিয়ে ক্ষণিক চিন্তিত দেখা যায় তাকেই কেবল! কিন্তু বড় বোন আর ভাইয়ের আদরের বন্যায় ধোপে টেকেনা এই প্রতিবাদ, চিন্তিত দেখা যায়না মা’কেও!!!

মুনিয়া বড় হয়, শুধুই শারীরিক ভাবে, মানসিক বয়েস যেন কিছুতেই কৈশোর উত্তির্ণ হয়না আর। একটু বাস্তববাদী কাছের দুই একজন বন্ধু মাঝে মাঝে বলার চেষ্টা করে, মুনিয়া এতো আহলাদ, এতো ঢং ভালোনা, তোকে একটু কম গুরুত্ব দিলেই তোর মাথা নষ্ট হয়ে যায়। দেখিস, জীবনে না কষ্ট পাস! এটা যে ভালোবেসে বলা, তা অনুধাবন করার কোন আগ্রহ বা ইচ্ছেই মুনিয়ার মাঝে দেখা যায়না। ওর সরলতার জন্যেই হোক আর বেশি আদর পেয়েই হোক, সব ছাপিয়ে ওর চেহারায় ফুটে থাকে এক অবিশ্বাস্য মায়া আর সরলতার অপরূপ সৌন্দর্য!!!

কলেজ পার হতে না হতেই কাছের বান্ধবীদের কারো বড় ভাই, কাজিন, চাচা বা মামাদের অনেকের কাছ থেকেই নানান মাধ্যমে মুনিয়ার কাছে আসতে থাকে ‘প্রেম এবং বিয়ের মত বিশাল সিদ্ধান্তের প্রস্তাব’!!!

ভাইবোনদের বিয়ে বিষয়ক ঘটনা শেষ হয়ে গেলে স্বাভাবিক ভাবেই এবার তিনজনের একটাই চাওয়া ওদের ‘মুনিয়া পাখি’ যেন বাকি জীবনটাও ওর মতন করেই ডানা মেলে উড়তে পারে পুরো আকাশে!!!

অস্ট্রেলিয়া প্রবাসী পাত্রের প্রস্তাব আসে এক আত্মীয় মারফত। আসে ফোনও একদিন, ‘মুনিয়া তোমার ছবি দেখেই আমার মনে হয়েছে এমন কারো অপেক্ষাতেই আমি আছি, প্রচণ্ড ভালো লাগায় আমি নাই হয়ে গেছি অনেকটাই, তোমাকেই ভাবছি সারাক্ষণ। দেখা করতে চাই, তোমার কলেজ গেইটে আসতে চাই কাল বা পরশু, অল্প একটু সময় দেবে প্লিজ। আমাকে তুমি সবুজ কার্ড দেখাবে কিনা জানিনা, তবে লাল দেখালে কষ্ট পেলেও মেনে নেবো!!!

মুনিয়ার জীবনে এটাই প্রথম অন্যরকম শিহরণ বলতে যা বোঝায়। ভীরু মন নিয়ে মৃদু পায়ে কোন অপরিচিত ছেলের সাথে প্রথম রিক্সা করে তার হোম ইকোনোমিক্স কলেজ গেট থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস গমন।

‘তমাল’ কে খারাপ লাগলোনা, বুকের মাঝে একটা রিনরিন অজানা সুরের তোলপাড়ই যেন টের পেলো ‘মুনিয়া’ এই প্রথম!!!

কিন্তু ঘটনা গেল আটকে, তমালের এক সময়ের ছাত্র রাজনীতি করা সময়ের চুলচেরা বিশ্লেষণে ভাইবোন নাকচ করে দিলো বিয়ের সিদ্ধান্ত।

তমাল নানানভাবে যোগাযোগ অব্যাহত রাখলো। ‘মুনিয়া’ও নানান ভাবে একটাই কথা শুনিয়ে গেলো ওকে, বাসার সবার মতামত ছাড়া বিষয়টা ওর পক্ষে মেনে নেয়া প্রায় অসম্ভব।

‘ভালোবাসা হতে না হতেই এমন তীব্র কষ্ট’ ছোট্ট মুনিয়াকে বেশ নাড়া দিয়ে গেলো। ভাইবোনের চোখের সামনে এমনটা মেনে নেয়া তাঁদের কারো পক্ষেই সম্ভব হলো না।

নানান ঘটনা অঘটনায় তমাল শেষমেশ ‘মুনিয়া’ কে পেলো। এবং মুনিয়ার জীবনও বদলে গেলো পলকে!!! বিয়ের প্রায় ৭ মাস পর প্রবাসেই শুরু হলো তমাল-মুনিয়ার সংসার। ২৩তম জন্মদিনের তিন দিন আগেই মুনিয়া উড়ে গেলো অস্ট্রেলিয়া প্রিয় মা’কে ফেলে, পরিজন ফেলে, বাংলাদেশ ছেড়ে!!!

‘তমাল’ সেই জন্মদিনেই তার প্রায় অর্ধযুগের প্রবাসী জীবনের যে ক’জন কাছের বন্ধু পরিজন তাদের নিয়ে কাছের এক বন্ধুর বাসায় দারুণ এক সারপ্রাইজ পার্টির মিলন মেলায় ‘মুনিয়া’কে পরিচয় করিয়ে দিলো। এমন সারপ্রাইজ মুনিয়ার জীবনে প্রথম এবং এই ঘোর চলতেই থাকলো তার আগত জীবনে…

অল্প ক’দিন না যেতেই তমালের ব্যস্ত রুটিনে খাপ খাওয়ানোর প্রথম ধাক্কা এলো অনেক বছরের লাইফ স্টাইলে। যে মুনিয়া মায়ের পেটের সাথে মিশে না যেয়ে ঘুমুতেই পারতোনা এই সেদিনও, সেই তাকেই কিনা তমালের রাতের শিফটের কাজের জন্যে সপ্তাহের পাঁচ দিন ঘুমোতে হয় একা নির্জন বাসায়। তমাল রাত ১০ টায় চলে যায় ফিরে আসে ভোর ৭/৮ টার দিকে!!!

মাঝে মাঝে রাত্রিরে মুনিয়ার গলা ছেড়ে কান্না আসে, মনে হয় ওকে কেউ নির্বাসনে পাঠিয়েছে। ল্যাপটপ, ফোন এর মত সঙ্গী আর কত সময় ভালো লাগে। মা, ভাই-বোনের সাথে কথা বলতে গেলেই গলা ধরে আসে। উফ কি ভীষণ থমকে যাওয়া এই সময়! মুনিয়া ছটফট করে, ভিতর বাহিরও অন্তরে অন্তরে!!!

তমাল প্রতিদিনের মতই কাজে যাওয়ার আগে, সেদিন ওর ল্যাপটপ বন্ধ করতে ভুলে যায়। মুনিয়া বন্ধ করার জন্যে মাউস প্যাডে হাত রাখতেই সামনে ভেসে উঠে তমালের বাংলাদেশ থাকা কাছের এক বন্ধুর কাছে লেখা ইমেইল। নিচে এটাচ এক তরুণীর ছবি…
২৪ এ পা দেয়া, সদ্য বিয়ে হওয়া তরুণী (!) মুনিয়ার পক্ষে এই কৌতুহল চাপা দেয়া খুব কঠিন। অনেকগুলো ইমেইল, নিঃশ্বাস বন্ধ করে একের পর এক পড়ে যায়। যার নির্যাস হলো ‘সোনিয়া’ তমালের এক সময়ের প্রেম। সোনিয়ার থেকে ‘মুনিয়া’ দেখতে অনেক বেশি সুন্দর এই কারণেই ‘মুনিয়া’ কে এতোটা আগ্রহ করে ক্রেজি হয়ে বিয়ে করা। …তবে মুনিয়া একটু বেশিই ছেলেমানুষ, বিরক্তিকর এই তথ্য জানা যায় এবং ও সোনিয়ার মত অতোটা স্মার্টও না, তমালের এটাও একটা ক্ষোভ!!!

কিংকর্তব্যবিমুঢ় ‘মুনিয়া’র জীবনে আরো একটা অন্যরকম রাত, মুনিয়া নিজেও জানেনা আরো কিছু সারপ্রাইজ এখনও বাকি।

মুনিয়ার সুন্দর চোখ ত্বক মুখ যখনই আয়নায় দেখে ওখানে নিজের অজান্তেই ছায়া হয়ে ভেসে থাকে ‘সোনিয়ার মুখ’, এ যে কি যন্ত্রণার অভিজ্ঞতা মুনিয়ার পক্ষে সেটা বহন করা একটু বেশিই কঠিনা। কেউ তো কোনদিন ওকে বলেনি এটা নিতান্তই স্বাভাবিক ঘটনা। এমন কিছু থাকলেও সময়ের সাথে সাথে অনেক কিছুই আর মানুষের জীবনে ম্যাটার করেনা, কেউ তো বলে দেয়নি এমন হলে কিভাবে জীবনেই থাকতে হয়, হয়কি???!!!

মুনিয়ার জীবনে এর পরের সারপ্রাইজ, প্রথম বিবাহ বার্ষিকী না আসতেই তমাল এবং ওর পরিবারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ওকে লন্ডন পাঠানো হয় তমালের বড় বোনের বাচ্চা হওয়া পরিবর্তী সময়টুকুতে ঘরের কাজে সাহায্য করার জন্যে। এবার ছোট্ট মুনিয়ার (!) উপর বর্তায় বড় দায়িত্ব!!!

‘মুনিয়া’ তমালের প্রথম এবং একমাত্র প্রেম না। কিন্তু ‘তমাল’কে ঘিরেই মুনিয়ার প্রথম রোম্যান্টিক পৃথিবী, এমন সব অবহেলার বিষয়াদির ঘটনা মুনিয়ার জীবনে ঘটে যাওয়ার পরও ‘সেই তমালেই রাখে প্রেম, রাখে বিশ্বাস’ কেমন করে যেন!!!

আদুরে অপরিপক্ক মুনিয়ার পৃথিবী একটু একটু করে ভাঙ্গে আর গড়ে উঠতে থাকে নিজের অজান্তেই নুতন এক ‘’মুনিয়া’’। বাংলাদেশের ২২ বছরের জীবনের ছোট্ট ছোট্ট যে পাওয়াগুলো নিয়ে মুনিয়ার বেড়ে উঠা, সেই মুনিয়াকে একটু একটু করে চাপা দিয়ে ‘তমাল’কেই আঁকড়ে ধরে জন্ম নিতে থাকে নুতন মুনিয়া। অতল তমালের তল খুঁজতে খুঁজতেই হারাতে থাকে মা ভাই বোনেদের আদুরে সেই ‘মুনিয়া’!!!

এবং একদিন যে মুনিয়া কেবল জানতো মায়ের আদর নেয়াটাই, সেই মুনিয়া’ও ‘মা’ হয়ে শিখে নিলো আদর দিতে, পরম মমতায় নিজের সন্তানকে আগলে ধরতে!!!

‘তমাল’ কতখানি ভালোবেসে টেনে নিয়েছে এই সম্পর্ক সেই হিসেবটা একটু অস্পষ্টই থেকে যায়। তবে সরল আর বোকা বোকা মুনিয়া এটা বুঝতে পারে, সোনিয়া নামক নারীটির তমালকে ঘিরে যে কিছু সময়, সেই সময়গুলো বড় বেশি নিষ্ঠুর হয়ে কাঁটা হয়ে মুনিয়ার ভালোবাসার পৃথিবীকে হঠাৎই ঝড়ের মতো এলোমেলো করে দিয়ে যায়।

তমাল মুনিয়াকে যা কিছু নিঃসঙ্গ সময় দিয়েছে ইচ্ছায় বা অনিচ্ছায়, সেই সময় গুলোই মুনিয়াকে গড়ে দিয়েছে একটা নুতন পৃথিবী। যতনে লাগানো টবের চারায় নয়নতারা দেখে মুগ্ধ বিমুগ্ধ মুনিয়া খুঁজেছে জীবনের নুতন মানে। রান্না করতে যেয়ে জানালা দিয়ে দুরের সবুজ গাছ, আকাশে উড়ে চলা পাখিই কেমন করে যেন ওর পৃথিবীর স্থায়ী বাসিন্দা হয়ে গেলো।

নানান রকম চা কিনে রঙিন পাত্র সাজাতে সাজাতে, প্রিয় বসার রুমের কুশন কাভারের রং বদলাতে বদলাতে মনে হয়েছে আমায় কেউ যদি জীবনে একটু কম গুরুত্ব দিয়েই থাকে কি আসে যায় তাতে!!!

তবুও ‘তমাল’ আমার, ওর সন্তান ‘তিতির’ পাখিকে বুকের মাঝে চেপে ধরে ২৭ বছরের স্মার্ট এক তরুণী হয়ে উঠা ‘মুনিয়া’ এখন আর যখন তখন চোখ ভেজায়না!!!

ফেলে আসা পরিবারের আদুরে সেই কিশোরী ‘মুনিয়া’ যখনই ব্যাস্ত জীবনের এক ঘেয়ে রুটিনে ঘাই মেরে ফিরে আসার পায়তারা করে, মুনিয়া শিখে গেছে তাকে মোকাবেলা করা। একটা লম্বা হট শাওয়ার নিয়ে প্রিয় শাওয়ার জেল ‘ল্যাভেন্ডারের সুঘ্রাণ’ নিয়ে গায়ে প্রিয় শীতকাপড় চাপিয়ে প্রিয় বারান্দায় এক কাপ চা হাতে নিয়ে লম্বা নিঃশ্বাস নিয়ে নিজেকে বারবার বলেছে ‘না মুনিয়া না’। ওই মুনিয়াটা ছিলো অবাস্তব এক ফ্যান্টাসি দুনিয়ার বাসিন্দা ওকে মনে করে কষ্ট পেয়োনা আর, কিছুতেই না!!!

এই যে জীবন, আলো আঁধারীর খেলা, রুঢ় বাস্তবতা একে সামলে সামনে চলো। তোমার ‘তিতির’ সোনাকে অন্তত এমন জীবনের মন্ত্র শেখানোর চেষ্টা করো যা সবটুকু সাহস বুদ্ধি এবং আবেগের সমন্বয় দিয়ে উপভোগ করতে পারে!!!

মুনিয়া ভালো আছে। ভালো থাকে, শুধু মাঝে মাঝে কাজ থেকে ফেরার সময় যে রাস্তা দিয়ে ড্রাইভ করে আসে সেই চল্লিশ মিনিটই ওকে নানান ঘোরে নিয়ে যায়। কোন কোন বর্ষণমুখর শীত সন্ধ্যায় চোখটা বড্ড পোড়ায়। ঢাকার বাসাবো’র দু’তলা বাসার ছাঁদে লাল স্কার্ট পড়া উচ্ছল মুনিয়া ডেকে বলে ‘কি ভিজবি আমার সাথে আরো একবার’। মুনিয়ার চোখ ঝাপসা হওয়ার আগেই জ্বলে উঠে নির্জন রাতের ট্রাফিক সবুজ আলো, বাসায় ফিরতে হবে ওর ‘তিতির পাখি’ বসে আছে ওর অপেক্ষাতেই!!!

মেলবোর্ন, ভিক্টোরিয়া

 

শেয়ার করুন:
Copy Protected by Chetan's WP-Copyprotect.