‘মাতৃত্ব যখন বোঝা বা বার্ডেন’

মাহাজাবীন খান:

‘I need a space to say- Motherhood is a burden for many women’. Biological motherhood is a myth based on the threefold belief that “all women need to be mothers, all mothers need their children, all children need their mothers.”- Ann Oakley

আমার লেখালিখিতে একদমই দম নাই। এ নিয়ে আমার আক্ষেপ নাই একদম, কারণ এটা আমার প্রায়োরিটি না।  লেখালিখির বহুত মানুষ আছে, বন্ধু আছে,  তারা লিখুক, আমি বরং পড়ি। তবে আমার দম আছে সাইকেল চালানোতে , মোটর সাইকেল চালানোতে, প্রতিদিনের আফিসের কাজে,  ডুডলিং এ,  রান্না করায়, ক্যানভাসে এ্যাক্রেলিক রং ছিটানোতে, এরকম অনেক কিছুতে।

আমি শুনেছি মা হতেও নাকি অনেক দম লাগে, আর নারীমাত্রই এই দম থাকে। Zvi মানে দাঁড়ায়, নারী মাত্রই মা। হ্যাঁ, ‘নারী মাত্রই মা’- কথাটা কেমন যেন দমবন্ধ করা  অনুভূতি দেয়। কেন জানি না আমার দমবন্ধ লাগে। মা হওয়া বা যারা হতে চায়, তাদের চাওয়ার সাথে কিন্তু আমার বিবাদ নাই, এটাকে অবধারিত, অনিবার্য, অনস্বীকার্য হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করা নিয়ে আমার বিবাদ।

কেন জানেন? বলছি-

রেহানা আপা আমার বাসায় এক বছর ধরে কাজ করেন, যদিও উনি ঢাকায় থাকেন আট বছর হচ্ছে। আপার ৮/৯ বছরের   একজন ছেলে আছে, যাকে রংপুরে গ্রামের বাড়িতে রেখে আপা ঢাকায় কাজ করছেন। রেহানা আপার স্বামী বিয়ের কয়েক মাসের মাথায় তাকে রেখে চলে যায়,আর কোন খোঁজ খবর নাই, কারণ অাপার গায়ের রং কালো। আপা উনার ছেলেকে রেখে এসেছেন নিজের বাবা-মার কাছে, ওখানেই ছেলে স্কুলে পড়ে। আপা মাসে মাসে টাকা পাঠান আর বছরে একবার বাড়ি যান।

অন্যান্য বাসা বাড়িতে যারা কাজ করে তাদের চেয়ে আপা কাজের ব্যাপারে তুলনামূলক নিষ্ঠাবান। বেশ নিয়মিত আসেন, কাজও ভাল করেন। আর তেমন কোনো অভিযোগ-অনুযোগও নাই। চার বাসায় কাজ করে আপার মাসে আট হাজার টাকা আয় হয়। বাসা ভাড়া ও বাড়িতে টাকা পাঠিয়ে কিছু টাকা জমাও করছেন। বাসা-বাড়িতে কাজ করা নারীদের তুলনায় উনি বেশ স্মার্ট, স্বাধীন ও সাহসীও বটে।

 বেশ কদিন আগে আপা বাড়ি থেকে তার ছেলেকে হঠাৎ নিয়ে আসলেন, কারণ তার বাবা-মা ছেলের যত্ন নেন না। বললেন, ‘আমার ছেলে আমার কলিজার টুকরা, ওরে ছাড়া আমার কী আছে বলেন! ওকে আমি আমার কাছেই রাখবো।’

এর পরের সপ্তাহ থেকেই শুরু হলো বাচ্চার পেটের সমস্যা। ছেলেকে নিয়ে বেশ কদিন ভুগলেন। ২/৩ দিন ছুটিও নিলেন। এর পরের মাসেই বাচ্চার জ্বর, আপা ছুটিতে গেলেন, কারণ বাচ্চাকে দেখার মানুষ নাই। ঈদের ছুটি কাটিয়ে বাচ্চার হাম হলো, তাতে ছুটি নিলেন ৩/৪ দিন। সব মিলিয়ে ১২ দিন। দুদিন আগে এসে বললেন উনাকে দুই বাসা থেকে আসতে না করে দিয়েছে। কারণ বলেছে, বাচ্চার কারণে সে কাজ করতে পারছে না, তাই তারা অন্য লোক দেখবে। গতকাল থেকে আপা নিজে অসুস্থ, আমার ভয় যে আমি ছাড়া আরও যে একটা বাসায় উনি কাজ করছেন, সে বাসায় তার কাজ থাকে কিনা!

এই হলো মাতৃত্ব। গরীব বলে যে এমন, তা কিন্তু না। আমার আশেপাশে এমন শত শত নারী আছে যারা কিনা মা হওয়ার জন্য চাকরি ছেড়েছেন। তাদের কারও কারও কাছে হয়তো মা হওয়াটা প্রায়োরিটি ছিল না, কিন্তু তাদের ভিতরে সেই আত্মবিশ্বাস, সাহস ছিল না যে তারা বলবে- এটা আমার চয়েস না, আমার এই কাজে দম নাই।  কারণ তাদেরকে ছোটবেলা থেকে শেখানো হয়েছে- নারীমাত্রই মা, এবং মা তোমাকে হতেই হবে। সমাজ নারী আর মাতৃত্বকে একাকার করে ফেলেছে।

আমার মাকে আমি অনেক ভালোবাসি, অন্য সবার মতো। মার কাছ থেকে ততোটা স্নেহ ভালোবাসা, যত্নই আশা করি যতোটা অন্যরা করে। কিন্তু, I can’t be or I don’t want to be like my mother. This is not my modesty, nor glorifying motherhood. It’s my choice, my priority. FOR ME IT’S A BURDEN. Yes, MOTHERHOOD IS A BURDEN. This patriarchal society is sustaining its reproduction system in the name of reincarnation of women, which is actually a myth and burden for many women.

শেয়ার করুন:
Copy Protected by Chetan's WP-Copyprotect.