মেয়ের উত্যক্তকারীকে কোপালেন মা 

ম্যারিনা নাসরীন:

বেশিদিন হয়নি গাজীপুরে এক বাবা আট বছর বয়সী মেয়ের ধর্ষণের বিচারের জন্য দ্বারে দ্বারে ঘুরেও বিচার পাননি। উল্টো এক হাজার টাকায় ঘটনাটি দফারফা করার প্রস্তাব দেয়া হয়েছিল। রাগে-দুঃখে তিনি মেয়েসহ ট্রেনের নিচে লাফ দিয়ে আত্মহত্যা করেছিলেন।

মানুষ কোন অবস্থার প্রেক্ষিতে এভাবে নিজেকে শেষ করতে পারে ভাবুন? ঠিক এই ঘটনার বিপরীত একটি ঘটনা দেখলাম আজই।

মাগুরার এক মা মেয়েকে রক্ষা করতে ঘুরে দাঁড়িয়েছেন। নিঃসন্দেহে তিনি নিরুপায় হয়েই কাজটি করেছেন। তিনি কি গাজীপুরের ঘটনাটি জানতেন? আমরা ঠিক জানি না, তবে এটুকু অন্তত বলতে পারি, আত্মহত্যার চেয়ে এটা ভালো। একটা ব্যাপার খেয়াল করেছেন? তিনি মেয়েটিকে নিরাপদ রাখার জন্য ব্যাগে ছোট একটি চাপাতি রেখেছিলেন। কারণ ওই বখাটে ছেলের জন্য মেয়েটির নিরাপত্তা হুমকির মুখে ছিল।

পুলিশ জানায়, শৈলকুপা উপজেলার আলফাপুর গ্রামের অসিত অধিকারীর বখাটে ছেলে কৃষ্ণ অধিকারী (২৪) দীর্ঘদিন ধরে মাগুরার শ্রীপুর কলেজের অনার্স তৃতীয় বর্ষের এক ছাত্রীকে উত্যক্ত করে আসছে। এই ঘটনায় এর আগে শ্রীপুর কলেজের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা কৃষ্ণকে ধরে পুলিশে সোপর্দ করেছিলো। সে সময় এ ঘটনায় মামলা না করায় একদিন হাজতবাসের পর ছাড়া পেয়ে বখাটে কৃষ্ণ আবারো ওই কলেজ ছাত্রীর পিছু নেওয়া অব্যাহত রাখে। সবশেষ শনিবার দুপুরে ওই ছাত্রী বাড়ি থেকে মায়ের সাথে মাগুরা সরকারি হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজে পরীক্ষা দিতে আসার পথে মোটরসাইকেল নিয়ে পিছু নেয় বখাটে কৃষ্ণ। পরে কলেজ গেটে পৌঁছালে সে ওই ছাত্রীর সাথে কথা বলার জন্য হাত ধরে টান দেয়।

এ সময় ওই পরীক্ষার্থীকে তার মা পরীক্ষার রুমে পৌঁছে দিয়ে এসে কলেজের সামনে চায়ের দোকানে ওই বখাটেকে বসে থাকতে দেখে চড় থাপ্পড় মারেন। এক পর্যায়ে কয়েক যুবককে ডেকে তাকে কলেজের ভেতর ধরে নিয়ে নিজের ব্যাগের মধ্য থেকে ধারালো চাপাতি দিয়ে তাকে কুপিয়ে জখম করেন। আহত অবস্থায় কৃষ্ণকে মাগুরা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

ভেবে দেখুন, জনে জনে মেয়েরা যদি এভাবে ব্যাগে চাপাতি রাখে তখন অবস্থা কী দাঁড়াবে? সব থেকে বড় প্রশ্ন হলো, কেন মা’টি এই কাজ করতে বাধ্য হলেন?
যাই হোক, শুরু হয়েছে কোপাকুপি। অজায়গা, বেজায়গায় কারো মনে কামভাব প্রবল হলে চেপে যান। মনে রাখবেন, চাপাতির কোপ বড় কঠিন কোপ।

শেয়ার করুন:
Copy Protected by Chetan's WP-Copyprotect.