শাশ্বতী বিপ্লব:
কোন এক রাজনৈতিক নেতার গৃহে হঠাৎ করিয়া তেলাপোকার দৌরাত্ম্য বাড়িয়া গেলো। খাবার দাবার হইতে বইপত্র কিছুই তাহাদের হাত হইতে রেহাই পায় না। গৃহিনী বলিলেন, “আর তো পারি না বাপু, কিছু একটা না করিলেই নয়।” নেতা গভীর চিন্তায় মগ্ন হইলেন এবং ভাবিয়া চিন্তিয়া কয়েকখানা বিড়াল লইয়া আসিলেন। তেলাপোকারা আপাতত সাইজ হইলো।
কিন্তু গৃহিনীর মুখের হাসি ভালো করিয়া ফুটিয়া উঠিতে না উঠিতেই পুনরায় মিলাইয়া গেলো। বিড়াল মহাশয়গণ যত্র-তত্র মলমূত্র ত্যাগ করিতে লাগিলো। খাবার দাবার চুরি করিয়া খাইয়া সাবাড় করিয়া দিলো এবং ঝাড়ে বংশে বাড়িয়া সকলের প্রাণ ওষ্ঠাগত করিয়া তুলিলো।
গৃহিনী এইবার কাঁদিতে বসিলেন। নেতাও যারপরনাই বিব্রত হইলেন। বলিলেন, “আহ্, এতো অশ্রু বিসর্জনের কী প্রয়োজন? আমি তো আছি, দেখিতেছি কী করিতে পারি।”
নেতা এইবার আরো গভীরভাবে চিন্তা করিলেন। সতীর্থদের কাছ হইতেও মতামত লইলেন। এবং সর্বসম্মতিক্রমে সাব্যস্ত করিলেন, বিড়ালদিগকে সাইজ করিতে কুকুর আনয়ন বিনা বিকল্প নাই। অতঃপর তিনি কতিপয় বৃহৎ কুকুর ক্রয় করিয়া আনিলেন।”
গৃহকর্তার এহেন অদূরদর্শিতা দেখিয়া গৃহিনী কপাল চাপড়াইয়া কহিলেন, “আপনি কী কখনোই অতীতের ভুল হইতে শিক্ষা লইবেন না? আমাদের গৃহে কেবল নিয়মিত তেলাপোকা মারার ওষুধ ছিটাইলেই চলিতো, কিন্তু আপনি রাজনীতি করিতে গিয়া মাঝখান হইতে বৃহৎ থেকে বৃহত্তর উপদ্রব ডাকিয়া আনিলেন!! হা ঈশ্বর, এই লোককে কে বুঝাইবে?”
তিনি রাজনৈতিক নেতাকে সাবধান করিলেন (যদিও সে শুনিবে বলিয়া ভরসা পাইলেন না), ” এর মাশুল কিন্তু আপনাকে দিতে হইবে, দেখিয়া লইবেন। শুধু আপনি নহে, আমরাও বাদ যাইবো না। আমাদের এই গৃহ এমনি করিয়া একদিন কুকুর বিড়ালের দখলে যাইবে, আর আমরা গৃহহারা হইবো। অপেক্ষায় থাকুন….”