“অন্ধ পাল্লাওয়ালি বেটিকে” বিদায়

নায়না শাহরীন চৌধুরী:

দিন দিন কথা বলার জায়গাটা ছোটো হয়ে আসছে। খুব বুঝে শুনে মেপে জুখে কথা বলতে হয়। অনুভুতি এমন বিষম ব্যাপার যে, যাকে খুশি কোপানো যায়, অ্যাসিড মারা যায়, যেকোনো ক্ষতি করা যায়। তো, আমি সেই বিষয়ে কখনও যাইনি, আর যাবোও না, কারণগুলোও বলা বারণ।

যাই হোক, হাইকোর্ট চত্বর থেকে অবশেষে “অন্ধ পাল্লাওয়ালি বেটিকে” বিদায় করা হচ্ছে। এটি একটি ধর্মীয় বিজয়, যার আনন্দে প্রাণভরে তেঁতুলের জুস খাওয়া যায়। সমস্যা হচ্ছে, তেঁতুল খেয়ে দাঁত টকে যায়, তখন অন্য কিছু খাওয়া যায় না। যে দাঁত তেঁতুল খেতে সাহায্য করে, সেটা যদি সমস্যা করে তবে সেটা কেউ উপড়ে ফেলতেই পারে। এমনকি রাগের চোটে তেঁতুল গাছটিও। এখন তেঁতুল খাদক কতোটা শক্তিশালী সেটা যদি বোঝা না যায়, তাহলে বাঘ আর বকের নাটক মঞ্চায়িত হতে পারে নতুন করে। তবে সেই নাটকের ধাক্কা একটা দেশ বা জাতির উপর অন্ধকার নামিয়ে আনবে না, তার গ্যারান্টি কি কেউ দিতে পারবেন?

একজনের পাঁচ বছরের কন্ট্রাকচুয়াল চাকরি, চাকরির মেয়াদ শেষে বুক দুরু দুরু করবেই। নানান দল। কাউকে অখুশি করলে যদি মেয়াদ আর না বাড়ায়! তো যে দলটিকে খুশি করা হলো, তাদের সাথে সম্পূর্ণ আদর্শিক মিল না থাকলেও শাক দিয়ে মাছ ঢেকে তাদের চাহিদা পূরণ করে বিরাট একটা হাসি দিয়ে সে ভাবলো, যাক এদের তরফ থেকে আমি সেফ।

কিন্তু সত্যি কি তাই হবে? ওদের চাওয়া দিন দিন বাড়বে, এটা সবাই ভাবছে। আর আমি ভাবছি, এই ছোট অপ্রয়োজনীয় চাহিদা পূরণে, দেশ ও জাতি কতটা এগিয়ে গেল? এবং তারাও তাদের আদর্শিক জায়গায় কতটা শক্ত মাটি পেল? চিন্তাটা সবার মাথায় জমাট বেঁধে আছে হয়তো, কিন্তু ঠোঁটের কাছে এসে চুপ।

একটা মানুষের বা দলের আদর্শ অনুসরণীয় হতে পারে, কিন্তু সব সিদ্ধান্তই কি ঠিক হয়? আত্মবিশ্বাস, ক্ষমতা, কূটনৈতিক বিশ্লেষণ, বা আজন্ম রাজনৈতিক অভিজ্ঞতা থাকা সত্ত্বেও অনেক ভুল সিদ্ধান্তের মধ্যে অনেকেই নিজেদের কবর খুঁড়েছেন হাসিমুখে, গ্রিকদেবির ভাস্কর্যের মতই চোখে কাপড় বেঁধে।

খুব কাছ থেকে কাউকে চেনা যায় না অনেক সময়। দূর থেকে যারা দেখছে হয়তো প্রতিটা জেসচারে বুঝে যাচ্ছে কে নাটকের ভিলেন, আর কে ট্রাজেডির নায়ক!   

শেয়ার করুন:
Copy Protected by Chetan's WP-Copyprotect.