রেহেনা মাহমুদ:
BE BOLD FOR CHANGE – এবারের নারী দিবসের স্লোগান। যাতে বোঝানো হয়েছে যে আমাদের নারীদের পরিবর্তন আনতে হবে। এই যে পরিবর্তনের কথা বলা হয়েছে, সে পরিবর্তনটা কিসে আনতে হবে? কোথায় আনতে হবে? কীভাবে আনতে হবে? কেনইবা এই পরিবর্তন দরকার?

এক একটা দেশের প্রেক্ষাপট এক একরকম হয়ে থাকে। সে অনুযায়ী সেখানকার অধিবাসীদের সমস্যাটাও ভিন্ন হয়ে থাকে। আমেরিকায় একজন নারী যেসব সুবিধা ভোগ করে থাকেন এবং যেসব সমস্যার সম্মুখীন হন তা আমাদের দেশে একজন নারীর প্রেক্ষাপটে ভিন্ন। সেখানকার নারীরা পারিবারিক এবং অর্থনৈতিক বাধা অতিক্রম করে আজ অনেকটাই এগিয়ে।
কিন্তু আমরা, আমাদের দেশের মেয়েরা এখনো যেন এগিয়ে যাওয়ার যাত্রাই শুরু করতে পারিনি।এদেশে একজন মেয়েকে প্রথমেই পারিবারিকভাবে স্থবির করে দেয়া হয়।মেয়ে মানেই বোঝা;সুন্দরী না হলে তো আরো মরার উপর খাড়ার ঘা।পড়ালেখা করানো যেন এখানে শুধুমাত্র বিয়ে দেয়ার প্রস্তুতি পর্ব। পারিবারিকভাবে এখনো মা-বাবারা এখনো মেয়েদের একটা ভাল বিয়ে দেয়াকেই প্রাধান্য দেন। আমাদের বাবা-মার স্বপ্নের নাটকের সমাপ্তি এ পর্যন্তই।
অল্পসংখ্যক আধুনিক বাবা-মা আছেন যারা মেয়েকে বড়জোর ডাক্তার বা শিক্ষক করার স্বপ্ন দেখেন। মেয়েদর জন্য যেন আর কোন পেশা নেই। কেন কোন মা তার মেয়েকে নিয়ে এর বাইরে কোন স্বপ্ন দেখেন না? বাবার পারিবারিক ব্যবসা কেন মেয়ে সামলানোর কথা চিন্তা করতে পারে না?
কিংবা মেয়ে পুলিশ, এ্যাথলেটস, বৈমানিক, ট্র্যা
SO, BE BOLD FOR THE CHANGE – যেসব নারী পারিবারিক সমস্যাগুলোকে উতরিয়ে আসতে পারেন তাদের আর পিছু ফিরে তাকাতে হয় না। সামনে এগিয়ে যাবার জন্য সে হয়ে উঠে অদম্য সাহসী আর আত্মবিশ্বাসী। নারীকে পারিবারিক বাধা পেরিয়ে সামাজিক বা রাষ্ট্রীয় সমস্যাগুলোকে মোকাবেলা করতে হবে।এর জন্য নারীদের একত্রিত হওয়া প্রয়োজন।নারী দিবসে আমরা আমাদের প্রধান সমস্যাগুলোর আলোকে সমাধানের প্রচেষ্টা চালাতে পারি।
দেশের রপ্তানি খাতে গার্মেন্টস কে এক নম্বর ধরা হয়,যেখানে নারী শ্রমিকদের অবদান অনস্বীকার্য । অথচ গার্মেন্টসগুলোর অন্য সেক্টরে পুরুষেরাই গুরুত্বপূর্ণ পদ দখল করেরে আছেন। এমনকি অনেক ইন্ডাস্ট্রি আছে যেখানে কোন মহিলাদেরই নিয়োগ দেয়া হয় না। একটা ইন্ডাস্ট্রি যেখানে হাযার হাযার পুরুষ কাজ করছে তারা ঠিক কোন মানসিকতায় মহিলাদের নিয়োগ দিচ্ছেন না এ নিয়ে আঙুল তোলা দরকার।
নারীরা কি কেবল পোশাক শ্রমিক হিসেবেই ফিট! মেয়েরা কি কেবল রিসিপশনিস্ট হিসেবে শোভা বর্ধন করবে অফিসে? অথবা অফিসের বসের সুন্দরী সহকারি? এসব ব্যাপারে নারীদের আরো সোচ্চার হতে হবে। কর্মস্থলে উচ্চপদগুলোতে নারী-পুরুষ বৈষম্য কমিয়ে আনতে হবে। এ অধিকার আদায় করতে পারলে আমাদের নারী দিবসের প্রতিপাদ্য সফল হবে। না হলে এটি হবে কেবল ব্যর্থ স্লোগান। এটি হবে কেবল কথার কথা।
১০/০৩/১৭