নিকষ আঁধার পথে আলো হাতে এলো যাঁরা-৬

মলি জেনান:

‘কেউ নারী হয়ে জন্ম নেয় না, বরং হয়ে ওঠে নারী।’ নারী সম্পর্কে সবচেয়ে তাৎপর্যপূর্ণ ও স্মরণীয়তম এ-মন্তব্যটি সিমোন দ্য বোভোয়ারের যাকে বলা হয়, ‘নারীবাদের আইনস্টাইন’।

তাঁর বইয়ের পৃষ্ঠার পর পৃষ্ঠা থেকে বেরিয়েছে আধুনিক নারীবাদের বিচিত্র সব ধারা, অনুপ্রাণিত হয়েছেন পঞ্চাশ-ষাট ও পরের দশগুলোর নারীবাদীরা। আদ্যপান্ত পুরুষতন্ত্রের মোড়কে সাজানো এ সমাজে নারীর স্থান কোথায়? একটি শিশু জন্মলগ্ন থেকেই শিকার হয় লিঙ্গ বৈষম্যের, তার হাতে-পায়ে-মননে-মগজে সুকৌশলে পরিয়ে দেয়া হয় লিঙ্গ বৈষম্যের কঠিন শৃঙ্খল।

১৯৪৯ সালে দুই খণ্ডে প্রায় এক হাজার পৃষ্ঠায় লেখা হয় সিমোনের সবচেয়ে সাড়া জাগানো নারীবাদী গ্রন্থ ‘দি সেকেন্ড সেক্স’ । এই বইটির মাধ্যমে সিমন গোটা পৃথিবীতে নারীবাদী তত্ত্বের এক নতুন প্রতিবাদী জোয়ার তৈরি করতে সমর্থ হন। শুধু লিঙ্গ বৈষম্য দিয়ে পুরুষতান্ত্রিক সমাজ নারীকে সমাজের এক স্বপ্নহীন এবং সামাজিক দুর্বল জীবে পরিণত করে রাখতে চেষ্টা করেছে এবং সফল হয়েছে, সিমোন অত্যন্ত জোরালোভাবে এর মনস্তাত্ত্বিক এবং ইতিহাসগত ব্যাখ্যা দেওয়ার চেষ্টা করেন তাঁর ‘সেকেন্ড সেক্স’ বইটিতে।

পুরুষ নিজেকে করে তুলেছে প্রভু। তিনি বলেছেন-

‘বহু শব্দ অনেক সময় ব্যবহৃত হয় চরম আক্ষরিক অর্থে, যেমন ফ্যালাস (শিশ্ন) শব্দটি বুঝিয়ে থাকে মাংসের সে-উত্থান, যা নির্দেশ করে পুরুষকে; তারপর এগুলোকে সম্প্রসারিত করা হয় সীমাহীন ভাবে এবং দেয়া হয় প্রতীকী অর্থ, তাই শিশ্ন এখন বুঝিয়ে থাকে পৌরুষ ও তার পরিস্থিতি।’

পুরুষতন্ত্র এমন ধারণার সৃষ্টি করেছে যে শিশ্নই সমস্ত ক্ষমতার উৎস। নারী ও পুরুষ ব্যাখ্যায় সিমোন চমৎকার ভাবে তা দেখিয়েছেন। তিনি বলেছেন- ‘স্ত্রীলিঙ্গ তার প্রজাতির শিকার’। পুরুষ তার অধিকতর স্বাধীনতা সৃষ্টির লক্ষে নারীকে মানুষ হয়ে উঠতে দেয়নি। পুরুষতন্ত্র তৈরি করেছে একরাশ বিপরীত ধারণা যার একটি ধনাত্নক বা প্রয়োজনীয় বা কর্তা, অপরটি ঋণাত্মক বা অপ্রয়োজনীয় বা কর্ম, যেমন পুংলিঙ্গ: স্ত্রীলিঙ্গ, সংস্কৃতি: প্রকৃতি, মানুষ: পশু, উৎপাদন: প্রজনন, সক্রিয়: অক্রিয়। এ ধারণাগুলোর মধ্যে প্রথমটি শুভ, বিপরীতটি অশুভ এবং পুরুষতন্ত্র প্রথমটি নিজের জন্য রেখেছে, বিপরীতটি নারীর জন্য।

পুরুষতন্ত্রের মতে, পুরুষ ভবিষ্যতের রূপকার, সৃষ্টিশীল এবং আবিষ্কারক; আর এটাই তাকে ভিন্ন করে তোলে পশুর থেকে। সিমোন তাই ‘চিরন্তনী নারীত্ব’কে বাতিল করে নারীর জন্য চেয়েছেন পুরুষের গুণ। তিনি চেয়েছেন নারী ও পুরুষের সাম্য ও প্রীতিপূর্ণ বিকাশ।

অ্যালিস শোয়ার্জার, দ্য বোভোয়ারের এক সাক্ষাৎকার গ্রহণকারী লিখেছেন-

‘পঞ্চাশ ও ষাটের তমসায় যখন কোন নব নারী আন্দোলন দেখা যায়নি, তখন দ্বিতীয় লিঙ্গ এলো এক গুপ্ত সংকেতবিধির মতো, যার সাহায্যে আমরা নতুন নারীরা পরস্পরের কাছে বার্তা পাঠাতাম। আর সিমোন দ্য বোভোয়ার নিজে, তাঁর জীবন ও তাঁর কর্মে ছিলেন এবং আছেন এক প্রতীক হয়ে।’

ধর্মীয় বাতাবরণে নারীরা যখন কোণঠাসা, ঠিক তখন শিল্পবিপ্লবের নামে নারীদের পণ্যের কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়ে দিতে একদল পুঁজিবাদীর সর্বাত্মক প্রচেষ্টা। এমন সময় ১৯০৮ সালের ০৯ জানুয়ারি প্যারিসে সিমোন দ্য বোভোয়ারের জন্ম হয়। সেই সময়টা তাঁরমত তীক্ষ্ণ মেধা ও যুক্তিবোধ সম্পন্ন মানুষের নারীবাদী হওয়াটা ছিল খুবই যুক্তিসঙ্গত। বাবা জর্জ দ্য বোভোয়া ছিলেন উকিল এবং শখের অভিনেতা। মা ফ্রাসোঁয়া ব্রাসেয়ো ছিলেন একজন ধর্মীয় গোড়া ক্যাথলিক। চিন্তায়, চেতনায় ও মননে মা আর সিমোন ছিলেন সম্পূর্ণ বিপরীত মেরুর মানুষ। তাঁর ছোট বোন হ্যালেন দ্য বোভোয়ার (পরবর্তিতে বিখ্যাত আঁকিয়ে হিসেবে বেশ নাম কুড়িয়ে ছিলেন)।

সিমনের বাবার দুই কন্যা সন্তানের চেয়ে অনেক শখ ছিল একটা পূত্র সন্তানের , এ নিয়ে তিনি মাঝে মাঝেই খুব আক্ষেপ করতেন। ছেলেবেলা থেকেই প্রচণ্ড মেধাবী হওয়ায় বাবা জর্জ সবসময় বলতেন, একজন পুরুষের মতোই তোমার মেধা আছে। দারিদ্র্যের সাথে যুদ্ধ করে বেড়ে উঠা সিমন চোখের সামনেই দেখতে পান মা ব্রাসোয়ার অমানুষিক দুঃখ-দুর্দশার এক করুণ চিত্র; সর্বদাই নিজেকে মানিয়ে নেয়ার অসম্ভব চেষ্টা। আর তাই ছেলেবেলা থেকেই সিদ্ধান্ত নেন বিয়ে করবেন না, জন্ম দেবেন না সন্তানের। যে সমাজ লিঙ্গ বৈষম্যকে লালন-পালন করে, সে সমাজে আর যাই হোক বিয়ের মতো সামাজিক বন্ধন মানায় না।

১৯২৯ সালে ২১ বছর বয়সে সিমোন ফ্রান্সের বিখ্যাত বিশ্ববিদ্যালয় সোরবোর্নে দর্শনে এগ্রিগেশন পরীক্ষায় দ্বিতীয় স্থান পেয়ে উত্তীর্ণ হন। উল্লেখ্য সেই পরীক্ষায় প্রথম হয়েছিলেন জ্যাঁ পল সার্ত্র। সিমোনের জীবনীকার দেয়ার্দে বেয়ার্স মনে করেন- ‘পরীক্ষায় প্রথম হয়েছিলেন সত্যিকার অর্থে খোদ সিমোনই; কিন্তু সার্ত্র ছিলেন পুরুষ, আর পরীক্ষাটি ছিল তাঁর দ্বিতীয় উদ্যোগের ফসল, তাই অনেকটা মানবিক অজুহাত দিয়েই জুরি বোর্ড সার্ত্রকে প্রথম স্থানটি দিয়ে দেন।’

তবে প্রথম আর দ্বিতীয় যেই হোন না কেন, সার্ত্র আর সিমোনের সম্পর্ক ছিল বন্ধুত্বের-প্রেমের-অনুরাগের-সমালোচনার। ১৯৩০-এর দশকের জন্য যদিও তাঁদের এই সম্পর্ক সমাজের চোখে ছিল খুবই অপ্রথাগত। কেননা তাঁরা একসাথেও থাকতেন না, আবার ‘লিভ টুগেদার’-ও করতেন না। বিয়ে করে একসঙ্গে থাকা আর্থিকভাবে সুবিধাজনক মনে হলেও তাঁরা এ পথ বেছে নেননি, কারণ তাদের মনে হয়েছে বিয়ে, এমনকি একত্র বাস মানুষের জন্য ক্ষতিকর, যেহেতু এ ব্যবস্থায় একজন হয়ে উঠতে চায় ‘কর্তা’ আর অপরজনকে পরিণত করতে চায় ‘কর্মে’। বিশ শতকের অন্যতম এই দুই দার্শনিক পরস্পরকে প্রভাবিত করেছেন প্রচণ্ডভাবে নিজ নিজ চিন্তা ও কাজের দ্বারা। অবিবাহিত, সন্তানহীন সিমোন আমরণ ডুবেছিলেন সার্ত্রের গভীর বন্ধুত্বে, যদিও অন্য প্রেমের কাছেও দুজনেই ধরা দিয়েছেন মাঝে মধ্যে।

ক্রমেই সার্ত্রের দার্শনিক চিন্তার বিচার বিশ্লেষণের তীক্ষ্ণ সমালোচক হয়ে ওঠেন সিমোন দ্য বোভোয়ার। ১৯৪৩ সালে প্রাক প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পটভূমিকে পুঁজি করে আর সার্ত্রের সঙ্গে ওলগা কোসাকিউয়িজ এবং ওয়ান্ডা কোসাকিউয়িজের প্রেমের দুর্বোধ্য জটিল সম্পর্কের মালা গেঁথে সিমোন লিখে ফেলেন তাঁর প্রথম উপন্যাস ’সি কেম টু স্টে’। এই উপন্যাস প্রকাশ হওয়ার পরপরই উন্মেচিত হয় সিমোন এবং সার্ত্রের অপেক্ষাকৃত জটিল সম্পর্কের কথা। ১৯৪৫ সালে সিমোনের দ্বিতীয় উপন্যাস ‘লা সেং ডেস অট্রিস’ প্রকাশিত হয়। উপন্যাসের নায়ক জন ব্লোমার্ট যিনি পারিবারিক বাধা নিষেধ উপেক্ষা করে কমিউনিস্ট পার্টিতে যোগ দেন। পার্টিতে যোগ দেওয়ার পর প্রেমে পড়েন হেলেন নামে এক নারীর। শুরু হয় জনের রাজনৈতিক এবং পাশাপাশি ব্যক্তিকেন্দ্রিক বিচার বুদ্ধিবৃত্তিক এক নতুন জীবনের কাহিনী। উপন্যাসটি একটি রাজনৈতিক উপন্যাস হিসেবেও বেশ জনপ্রিয়তা পায়। ১৯৮২ সালে ক্লাউদে চারবলের দক্ষ পরিচালনায় এই উপন্যাসকে কেন্দ্র করেই নির্মিত হয় পুরস্কার প্রাপ্ত চলচ্চিত্র ‘হেলেন’।

১৯৫৪ সালে তিনি তাঁর আত্মজীবনীমূলক উপন্যাস ‘লেস মেন্ডারিন’ বা দি ম্যান্ডারিন প্রকাশ করেন । দি ম্যান্ডারিন সিমোনের প্রথম বিশ্বযুদ্ধোত্তর লেখা ভিন্নধর্মী এক উপন্যাস। বলা বাহুল্য উপন্যাসটি সিমোনকে এনে দেয় ব্যাপক জনপ্রিয়তা। উপন্যাসটি ফরাসি সাহিত্যে সেরা হিসেবে প্রিক্স গনকোর্ট পুরস্কারে ভূষিত হয়। বোভোয়ার গোটা উপন্যাসটিতে কেন্দ্রীয় চরিত্র মনোবিজ্ঞানী এনি ডুবরুইল এবং তার স্বামী রোবার্টের জীবনাচরণের মধ্য দিয়ে সূক্ষ্মভাবে সিমোন এবং সার্ত্রের চরিত্রকেই যেন ফুটিয়ে তোলেন।

সিমোন ১৯৪৯ সালে লিখেন সবচেয়ে সাড়া জাগানো নারীবাদী গ্রন্থ ‘দি সেকেন্ড সেক্স’। বাংলায় যা ‘দ্বিতীয় লিঙ্গ’; ড. হুমায়ুন আজাদ অনুদিত বইটি পিতৃতান্ত্রিক সভ্যতায় নারীর পরিস্থিতির এক ধ্রুপদী দার্শনিক, সমাজতান্ত্রিক ও রাজনৈতিক ভাষ্য। ‘চিরন্তনী নারী’র ধারণা পিতৃতন্ত্রের ধর্মে, দর্শনে, সাহিত্যে এবং অন্য সবকিছুতে এক ধ্রুব ব্যাপার বলে গৃহীত, কিন্তু সিমোন ধর্ম, পুরান, মনোবিজ্ঞান, সাহিত্য ঘেঁটে তার অসারত্ব তুলে ধরেন। ভাষার শিল্পিত সৌন্দর্য ও লেখকের ব্যাখ্যা বিশ্লেষণে ‘ল্য দ্যজিয়ম’ (সেকেন্ড সেক্স) হয়ে ওঠে আধুনিক নারীবাদের মূলগ্রন্থ।

১৯৫৮ সালে সিমোন চার খণ্ডে তাঁর আত্মজীবনী লিখেন যা- মেমোয়ার্স অব এ ডিউটিফুল ডটার, দি প্রাইম টাইম, ফোর্স অব সারকামস্টেন্স এবং অল সেইড অল ডান। খুব স্বাভাবিকভাবেই সার্ত্রসহ তাঁর অন্যান্য ঘনিষ্ঠ বন্ধুদের সঙ্গে বিভিন্ন স্থানে ভ্রমণের কথা অত্যন্ত সাবলীল এবং খোলাখুলিভাবেই স্থান পায় এই আত্মজীবনীমূলক গ্রন্থগুলোতে। ঘটনার বর্ণনায় দেখা যায় বোভোয়ার ব্যক্তিগতভাবে ছিলেন খুবই আত্মকেন্দ্রিক। হাতেগোনা তাঁর বুদ্ধিজীবী বন্ধুমহল বলতে যা বুঝায়, তাদের সঙ্গেই ছিল তার নিত্যদিনের ওঠা-বসা।

নিজের পছন্দমতো জীবনযাপনে অভ্যস্ত এবং বিশ্বাসী ছিলেন সিমোন। লোক দেখানো সামাজিকতায় তাঁর কোনো আস্থা ছিল না। এমনকি ব্যক্তিগত ফটোগ্রাফারের অনুরোধে একটু মুচকি হাসতেও বোভোয়ারের পাহাড় সমান বাধা ছিল। ফটোগ্রাফার জিসেলে ফ্রিয়োদ তাঁর স্মৃতি কথায় বলেছেন, “অন্যদের কাছ থেকে নিজেকে লুকোনোর জন্যই সম্ভবত তিনি খুব একটা হাসতেন না।”

ষাটের দশকের শুরুর দিকে জরায়ুর স্বাধীনতা, গর্ভপাত এবং নারীর ওপর যৌন নির্যাতনের বিরুদ্ধে বিভিন্ন সামাজিক-সাংস্কৃতিক এবং রাজনৈতিক আন্দোলনে জড়িয়ে পড়েন সিমোন। তিনি প্রচার করেন ‘একজন পুরুষের সামাজিক মর্যাদায় যে অবস্থান থেকে সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা আছে, একজন নারীরও ঠিক সমানভাবে সেই একই অধিকার আছে’।

১৯৭৯ সালে তাঁর প্রথম জীবনে দেখা অনুসরণীয় কিছু প্রগিতিশীল নারীদের গল্প অবলম্বনে লেখেন ছোটগল্প ‘দা থিংস অব দি স্পিরিট কাম ফার্স্ট’। নারী অধিকার বিষয়ক তাঁর আরেক ছোটগল্পের সিরিজ ’দি ওমেন ডেস্ট্রয়েড’ পাঠকমহলে বেশ সাড়া জাগাতে সমর্থ হয়।

বোভায়ারের দার্শনিক চিন্তায় উজ্জীবিত গ্রন্থ ‘দি এথিক্স অব এমবিগিউটি’ সার্ত্রের ‘বিং এন্ড নাথিং লেস’ দ্বারা প্রচণ্ডভাবে অনুপ্রাণিত বলে মনে করেন অনেকেই অবশ্যই সিমোন নিজেকে একজন দার্শনিকের চেয়ে বরং সাহিত্যিক হিসেবেই দেখতে ভালোবাসেন।

১৯৮১ সালে সিমোন প্রকাশ করেন ‘এ ফেয়ারওয়েল টু সার্ত্র’ যা সার্ত্রের জীবনের শেষ বছর গুলোর স্মৃতি নিয়ে লিখা। বইটির মুখবন্ধে সিমোন লেখেন, “সার্ত্রের ওপর এটিই আমার একমাত্র বই যেখানে রচনাগুলো প্রকাশিত হওয়ার আগেই সার্ত্র পড়তে পারলেন না।” এখানে উল্লেখ্য, সিমোন এবং সার্ত্র সবসময়ই পরস্পর নিজেদের লেখা পড়তেন এবং সমালোচনাও করতেন।

সার্ত্রের মৃত্যুর পর সিমোন যখন সার্ত্রের চিঠিপত্রগুলোতে কোনরকম কাঁচি না চালিয়েই প্রকাশ করার সিদ্ধান্ত নেন, তখন সেখানে বাদ সাধেন সার্ত্রের আরেক গুণমুগ্ধ ও প্রিয় ছাত্রী আরলেটে এলকেইম। এ নিয়ে সিমোনের সঙ্গে আরলেটের ব্যক্তিগত সম্পর্ক খারাপের দিকে চলে যায়। তবে শেষ পর্যন্ত সার্ত্রের বেশির ভাগ চিঠিপত্রই সিমোনকে সম্পাদনা করেই প্রকাশ করতে হয়।

১৯৮৬ সালের ১৪ এপ্রিল এই মহান নারীবাদী নারী নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়ে মারা যান। জীবনের শেষ দিকে তিনি প্রচণ্ডরকম মাদকাসক্ত হয়ে পড়েন, সার্ত্রের মতো তিনিও একসময় ড্রাগ নিতে শুরু করেন। সিমোন দ্য বোভোয়ারকে কবর দেওয়া হয় প্যারিসের সিমেটর ডু মোন্টপ্যারানেসে তাঁর আজীবন বন্ধু জ্যাঁ পল সার্ত্রের সমাধির ঠিক পাশেই। এক নারীবাদীর জীবনের সমস্ত বৈপ্লবিক গল্পকথার সমাপ্তি হয়।

তাঁর মৃত্যু যতখানি সত্য, ঠিক ততটাই সত্য যে সিমোন আমাদের মধ্যে বেঁচে থাকবেন এক তুখোড় বুদ্ধিজীবী, দার্শনিক, সাহিত্যিক এবং মানবিক মানুষ, সর্বোপরি একজন নারীবাদী হিসেবে। 

তথ্যকনিকা

১. উইকিপিডিয়া

২. দ্বিতীয় লিঙ্গ, ড: হুমায়ুন আজাদ (অনুবাদ)

৩. বিভিন্ন অনলাইন ব্লগ ও পোর্টাল

শেয়ার করুন: