শুভ জন্মদিন মালালা

malala-yousafzaiসুমন্দভাষিণী (উইমেন চ্যাপ্টার): মালালা ইউসুফজাই এর ১৬ তম জন্মদিন ছিল ১২ জুলাই। দিনটি এবার আরও বেশি তাৎপর্যপূর্ণ দুটি কারণে। এক, একেবারে মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরে আসার জন্য। দুই, বিশেষ এই দিনটিতেই জাতিসংঘের অধিবেশনে তার বক্তব্য রাখার জন্য।

মালালা-একটি নামই শুধু নয় আজ, একটি প্রতীক, একটি আন্দোলনের নামও।

জাতিসংঘে দেয়া বক্তৃতায় মালালা বলেন, মালালা ডে, এটা আমার দিন না। এই দিনটি প্রতিটি নারীর, প্রতিটি ছেলের এবং প্রতিটি মেয়ের, যারা তাদের অধিকারের জন্য আন্দোলন করছে। হাজার হাজার মানবাধিকবার কর্মী আছেন, সমাজ কর্মী আছেন, যারা কেবল অধিকারের কথাই বলছেন না, তারা তাদের লক্ষ্য অর্জনে, শিক্ষার জন্য প্রতিনিয়ত লড়ে যাচ্ছেন। হাজার হাজার মানুষ সন্ত্রাসীদের হাতে নিহত হচ্ছেন, লাখ লাখ আহত হচ্ছেন, আমি তাদেরই একজন মাত্র। কাজেই এখানে আমি দাঁড়িয়ে আছি অনেকের একজন হয়ে। আমি বলছি শুধু নিজের জন্য, তাদের জন্য বলছি, যাদের কথা শোনা যায় না, যারা অধিকারের জন্য লড়ছে, যারা লড়ছে শান্তিতে থাকার জন্য, সমান অধিকারের জন্য, সমান সুযোগ, শিক্ষার অধিকারের জন্য। ২০১২ সালের ৯ অক্টোবরে তালেবান আমার ওপর গুলি চালায়, আমাকে আহত করে, আমার বন্ধুকেও আহত করে। তারা ভেবেছিল তাদের বুলেট আমাদের মুখ বন্ধ করে দেবে। কিন্তু তারা ব্যর্থ হয়েছে।

তারা ভেবেছিল আমার ইচ্ছাকে তারা প্রতিহত করবে, কিন্তু পারেনি। আমার জীবনে কোন পরিবর্তনই আনতে পারেনি। বরং সমস্ত দুর্বলতা, ভয়, আশাহীনতা কেটে গিয়ে সেখানে জন্ম নিয়েছে শক্তি আর সাহস।

আমি সেই আগের মালালাই আছি, সেই আশা, সেই স্বপ্ন, সবই আছে আগের মতো। আমি কারও বিরুদ্ধে না। এমনকি তালেবান বা কোন সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে ব্যক্তিগত প্রতিশোধ নিতেও এখানে আসিনি। আমি কথা বলছি প্রতিটি শিশুর শিক্ষার অধিকারের কথা বলতে। আমি চাই, প্রতিটি তালেবান বা সন্ত্রাসীদের ছেলেমেয়েরাও যেন পড়ার সুযোগ পায়। আমি কারও বিরুদ্ধে নই। এমনকি যে তালেবান সদস্য আমাকে গুলি করেছিল তার বিরুদ্ধেও নই। আমার শক্তির উৎস আমাদের প্রিয় নবী হযরত মোহাম্মদ (স:), যীশু খ্রিস্ট, মহান বুদ্ধ, আমার অনুপ্রেরণা মার্টিন লুথার কিং, নেলসন ম্যান্ডেলা, মুহাম্মদ আলী জিন্নাহ।

তিনি বলেন, তিনি বিশ্বাস করতে পারেন না ঠিক কি পরিমাণ ভালবাসা পেয়েছেন। পাকিস্তান এবং যুক্তরাজ্যের সব চিকিৎসক, নার্সের প্রতিও কৃতজ্ঞতা জানান।

এসময় তার পরনে ছিল হালকা গোলাপি রংয়ের সালোয়ার-কামিজ। আর ওপরে জড়ানো ছিল পাকিস্তানের শহীদ প্রধানমন্ত্রী বেনজীর ভূট্টোর একটি শাল।

মালালা বলেন, তালেবানের গুলিতে আহত হওয়ার পর তিনি বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ভালবাসা পেয়েছেন, তার সুস্থতা কামনা করে কার্ড পেয়েছেন, এজন্য তিনি সবার কাছে কৃতজ্ঞ।

অধিবেশনে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের প্রতিনিধিদের পাশাপাশি উপস্থিত ছিলেন মালালার মা-বাবা ও ছোট ভাই।

জাতিসংঘে মালালার বক্তৃতার ভিডিও:

শেয়ার করুন: