দিনা ফেরদৌস: স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্ক যতক্ষণ ডিভোর্স বা মারামারি, কাটাকাটি পর্যন্ত না যায়, ততক্ষণ পর্যন্ত আমরা ধরেই নেই সম্পর্কটি বেশ ভালোই আছে। একসঙ্গে একই ছাদের নিচে বসবাস মানেই সব ঠিকঠাক। তারপর কোনদিন যদি খবর পাই সেই সম্পর্কে ফাটল ধরেছে, তবে আশ্চর্য হই।
মনে করি কী সোনার সংসার, আর একটুখানি মানিয়ে নিলে কী হতো? সংসার মানেই কম্প্রোমাইজ করে চলতে হয়। কেউ বলতে পারি না কতোটুকু কম্প্রোমাইজ করলে তাকে কম্প্রোমাইজ বলে।

তাই আমি সব সময় চাই, মেয়েরা বলুক। তার জায়গা থেকে তার কথাগুলো নিজের মতো করে বলুক। তা হোক ব্যক্তিগত, বা গোপন কষ্ট। কোনো ঘটনা ঘটলে তো তা আর গোপন থাকে না, সংবাদপত্রের খবর হয়ে যায়। আসল ঘটনা না জানার কারণে আমরা বিভ্রান্ত হই। একই ছাদের নিচে বসবাস করলে কিছু বলা যাবে না, এমন তো কোনো কথা নেই। সংসারের সমস্যাগুলো একই ছাদের নিচে থাকা অবস্থাতেই শুরু হয়।
তাইতো বলছি, বলতে থাকো মেয়ে, স্বামীর কিংবা শ্বশুর বাড়ির কারও দেয়া কষ্ট। বাপ কিংবা ভাইয়ের দেয়া কষ্ট। প্রতিবেশি কিংবা কোন আত্মীয়ের দেয়া কষ্ট। আমি চাই প্রতিটা মেয়ে তার কথাগুলো বলুক। জানিয়ে রাখুক সবাইকে।
দশজন যদি বলে, নিজ সংসারে থেকে ব্যক্তিগত দুঃখ-যন্ত্রণা প্রকাশ করে বলে ভুল করছো, এর মধ্যে একজন হলেও ভাববে।কোনদিন কোন দুর্ঘটনার খবর পেলে একজন হলেও বলবে, কোন কারণ ছাড়া কিছুই ঘটে না। একশো জনের মধ্যে একজন হলেও বলবে, “মেয়েটি বহু কষ্ট পেয়েছে”। পঞ্চাশজন তোমার বিরুদ্ধে কথা বললে ,তার মধ্যে একজনেরও যদি কিছু কথা জানা থাকে তো সত্য বেরিয়ে আসবে।
বাস্তবতার বাইরে কারো বেশি কিছু করার নাই। তবে সময় থাকতে নিজের কথাগুলো জানিয়ে রাখতে পারি যাদের কিছু বলার আছে। নানাজন নানাবিধ কথা বলতেই পারে, এই বলা নিয়ে। সে তার কথাই’তো বলছে। তুমি তোমার কথা বলবে মেয়ে।
আজ তুমি কিছু না বললে কাল তোমার প্রতিপক্ষ নিজেকে বাঁচিয়ে, তার সুবিধামতো করে তোমার গল্প বানাবে। এ বলাতে তোমার আমিত্ব প্রকাশ পাক বা নিজস্বতা হারিয়ে যাক বা গোপনীয়তা প্রকাশ পাক, বলতে থাকো। যা তোমাকে কষ্ট দেয় তা বলতে থাকো, যা সহ্যের বাইরে তা প্রকাশ করো (যতটুকু সহ্যের ভিতরে তাতো মেনেই নিচ্ছ)। যা তোমাকে ক্ষয় করে ফেলছে, ভিতরে ভিতরে তা থেকে নিজেকে বাঁচাও।
নিজের কথা তোমার নিজেকেই বলতে হবে মেয়ে।
আজ থেকেই বলা শুরু করো।