রুখসানা কাঁকন: আমার মেয়ে বাংলাদেশে গিয়ে বিরাট বিরাট ওড়না পরে ঘুরছে। আমি তাকে জিজ্ঞ্যেস করলাম, কী ব্যাপার? সে বললো, ‘সবার মতো করতে হবে, নইলে নাকি পচা বলবে?’ ওর ধারণা এটা না করলে সবাই ওকে বিদেশী ভাববে। যা হোক আমার মেয়ে অতি দ্রুত কী বুঝলো কী জানি, আমি কিন্তু আজও বুঝলাম না, আর মানলামও না এই ওড়না প্রথা।

আমার এই নারী দেহ নিয়ে জন্মানো এই বাংলাদেশে কেন এটা ভাবতে ভাবতে আমি সাদা চুল জন্ম দিয়ে ফেললাম। নারীদেহ মানে একটি ‘পাপ বহন করা শরীর’ এটা নানা ভাবে বুঝতে শুরু করলাম। যার প্রথম পাঠ শুরু হলো ওড়না দিয়ে। মা খালি বলতো ওড়না পরো, ওড়না ঠিক করো। এই যে বুকজোড়া ঠিকমতো ঢাকা হচ্ছে না তা শুনতে শুনতেই বড় হলাম। স্কুল-কলেজে বান্ধবী অনেকে বিশেষ ভঙ্গিতে বলতো, অমুক মেয়েটা তো অসভ্য। ওড়না ঠিক থাকে না। কিন্তু ওড়না যে মেয়ের সবচেয়ে বেশি ঠিক থাকতো সেই এমন চরম অসাধু আর অসভ্য কাজ করে বসতো, যা আমি নিজে দেখেছি।
এক খণ্ড কাপড়ের টুকরা কী সুন্দর করে ভাল আর খারাপ মেয়ের পাৰ্থক্য তৈরি করতো! আমার মায়ের অত্যাচারে ওড়না খণ্ড ঘরে নিরাপদ স্থানে রাখতাম। বাড়িতে কেউ এলে কলিংবেল বাজামাত্র ওটা বুকের উপর বসিয়ে দৌড়। কিন্ত ওড়না আমাকে বাঁচায়নি। বহু বাংগালী পুরুষ কথা বলার সময় মুখ না বুকের দিকে তাকিয়ে কথা বলেছে। ইচ্ছা হয়েছে ওদের গলায় ওড়নাটা পেঁচিয়ে টান মারি।
বরং ইউরোপে কোনো ছেলে এ কাজটি করেছে বলে মনে পড়ে না। যতো ঢাকনা ততো নাকি মেয়েরা আকর্ষণ করে, এমনটিই ভাবে আমাদের ছেলেরা। কিন্তু ঢাকা বা না ঢাকা, সব বুকই তাদের দৃষ্টিতে পড়ে। পুরুষের চোখে যেন স্ক্যান করার ক্ষমতা আছে।
আরেকটা বিষয়, আমাদের দেশে ব্রা কেনা কতোই না কঠিন। ইচ্ছা করে দোকানদার ইঙ্গিতপূর্ণ সুরে গলা ফাটিয়ে বলেছে, ‘আপা এটা লাগবো লাগবো’। অথচ এই আমি এখানে দোকানে যাই, মাপ দিয়ে আমার ব্রা কিনি। কক্সবাজারে বেড়াতে গেলে ছেলেরা দেখি, খালি গায়ে হাফ প্যান্ট পরে ঘুরছে আর মেয়েরা শাড়ী-সালোয়ার-কামিজ পড়ে। এটি যে কতো বিপজ্জনক। বিকিনি পরতে নাই বা পারে, কিন্তু লেগিংস বা ওয়াটার প্রুফ কিছু কি পরা যায় না? এটি বলায় একজন বললো, এটা আমাদের কালচার। কালচার মানে কি জলস্রোতে ওড়না ঠিক রাখা?
এই বাংগালী কিন্তু ইউরোপ-আমেরিকায় ঘুরেও তার চিন্তা-চেতনা বদলাতে পারিনি। এদেশে এসে দেখলাম সমালোচনার কোন পর্যায়ে মানুষ যেতে পারে। অমুক ভাবী জার্মান হয়ে গেছে, তমুক ঠ্যাঙ বের করে আছে। কিন্ত ঠ্যাঙ তারা দেখেও, আবার সমালোচনাও করে। একটি সম্পূর্ণ আলাদা দেশ, যেখানে আবহাওয়া আমাদের দেশী পোষাকের বৈরী। সেখানে মানুষের সমালোচনা করার অভ্যাস বিদেশ এসেও ঠিক হয় না।
গত বছর তুরস্কে ছুটি কাটানোর জন্য গিয়েছিলাম। হোটেল মালিক মুসলমান। তার স্ত্রী মিনি থেকে লং সব পোশাক পরছে। রাস্তাঘাটে মেয়েরা সব ধরনের পোশাক পরে হাঁটছে, কেউ তো কুৎসিত কথা বলছে না।
আর রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সময় শহীদুল্লাহ কলাভবনে আসার আগে প্রতিদিন প্রায় শরীর নিয়ে কমেন্ট শুনতে হতো মেয়েদের। একদিন এক ছেলেকে বলেছি, আচ্ছা ভাই, তুই প্রতিদিন মেয়েদের বুক নিয়া বলিস কেন? মায়ের বুকের দুধ খেয়ে তো বড় হইছিস। ওড়না পরবে, তা গলায় রাখবে না, বুকে রাখবে, এটা প্রতিটি মেয়ের ব্যক্তিগত স্বাধীনতা।
অশ্লীলতা বাস করে মনে, দেখবার দৃষ্টিতে। আর এই দৃষ্টির ব্যবহার এমন পর্যায়ে যায় একজন পুরুষ নারীকে আর সম্মান দিতে পারে না। আমাদের বুক কাপড়ের টুকরা দিয়ে ঢাকা থাকা সত্ত্বেও ধর্ষণ কমেনি। ছেলেরা টাইট জিন্স পরে, আন্ডারওয়্যার বের করা প্যান্ট পরে, অশ্লীলভাবে লুঙ্গি পরে। কই মেয়েরা তো সিটি বাজায় না, বা কমেন্ট করে না!
মেয়েদের শরীর নিয়ে পুরুষ অনবরত ছেঁড়া কাটা করছে, আর তসলিমা নাসরীন শরীর নিয়ে কথা বললেই চরিত্রহীন হয়ে যাচ্ছেন। নারীর আত্মসম্মান খুব প্রয়োজন। সে নিজে সিদ্ধান্ত নেবে ওড়না পরবো, হিজাব পরবো, না জিন্স পরে হাঁটবো। নারী মানে বুক, নিতম্ব, যোনি নয়- আর এটা যেদিন পুরুষরা ভাববে আর বুঝতে শিখবে, সেদিনই নারী তার পোষাকের স্বাধীনতা পাবে।
লেখক: এক্সিকিউটিভ টেলিকমুনিকেশন মার্কিন কোম্পানি, জার্মানি ও কবি
আজব তো! আমার শরীর ইচ্ছা হলে ঢাকবো নয় খুলবো? আমার ইচ্ছা হলো তাইলে আমি নগ্ন হয়ে ঘুরবো? আমার শরীর যা খুশী তাই করবো? সবকিছুর একটা নিয়ম আছে, একটা শালীনতা আছে. আমরা তো কোনদিন বাবার সামনেও ওড়না ছাড়া যাইনি. লজ্জাবোধ নামক জিনিষটা কে আপনারা দিনদিন বিলুপ্ত করে দিতে চান বোঝা যাচ্ছে. মানুষ আর পশুর মাঝে আর তফাত থাকবেনা অচিরেই. এরপরে বলবেন পশুরা কত স্বাধীন, ইচ্ছেমতো সঙ্গম করে, আমরাও যেখানে খুশী এইটা করতে চাই
ছেলেদের চোখ মানেই স্কেনার, তারা চোখ দিয়েই ধর্ষন করে টাইপের কথা শুনতে শুনতে আমিও বড় হয়েছি। কিন্তু ঘটনাটি কি আসলেই এই রকম কাঁকন আপু? না মোটেই এরকম নয়? সিটি বাজানো কিছু পোলাপান সারাজীবন সিটি বাজায়। এরা পুরুষদেরকে দেখেও সিটি বাজায়, টোন করে! অবাক হওয়ার মতো কথা, তাই না? বিভিন্ন সময় নিজেও এমন সিটি গ্রুপের খপ্পরে পরেছি। তারা আমার পায়ের জুতা থেকে শুরু করে টাই, চুল, প্যান্ট নিয়ে টিপ্পনি কেটেছে। তো? কিছু সিটি গ্রুপকে দিয়ে সব পুরুষকে ওজনে নিচ্ছেন? আর সিটি গ্রুপ বাদ দিয়ে সবাই যদি আপনার যুগল বক্ষের দিকে তাকায় তো বুঝে নিবেন, আপনার সৌন্দর্য, পরিপাটি, সবমিলিয়ে আপনি কতটুকু সুন্দর তা অবলোকন করছেন তিনি। তাকাচ্ছে মানেই ধর্ষন করছে না। বা আপনার বুকের মাপ নিচ্ছে না কাকনদি! আমিও তাকাই মেয়েদের দিকে তাকাই, আপনি ছেলেদের দিকে যে দৃষ্টিতে তাকান, আপনার মনে ছোট ছেলে দেখলে যে অনুভূতি, বড় ছেলে দেখলে যে অনুভূতি, বন্ধু দেখলে যে অনুভূতি, মা-বাবাকে দেখলে যে অনুভূতি! আমার মনেও একই রকম! মহাত্মা ফকির লালন সাঁই বলেছেন ‘পুরুষ কি আর প্রকৃতি (নারী) স্মরণ, থাকতে কি হয় মানুষের গড়ন?’ ক্ষমা করবেন কবি। আমি আপনাকে পরামর্শ দেওয়ার জন্য কিছুই বলিনি। ভুল বললে ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন কাকনদি। ভালো থাকবেন।
I’m confused. In the writer’s opinion , you cooked something delicious for your guests to impress them so they think you are an efficent cook. But you don’t like how they look at your food dishes and if they finish all of your dishes you’re not going to like it either. Oh! They never saw or tasted such kinds of foods. What’s the point other then to make it look yummy? The writer mentioned Taslima Nasrin. Everybody knows about her, she is independent and modern and she is the one who complained about a man she respected as her father raped her.And for your last line, it’s not about just men thinking or understanding; it is our responsibility too, to try to avoid ourselves from any kind of incidents.
as we should have to pay respect every women. although everyone should have to maintain well dressed
Loved your writing. The problem is the solution is not in our hands. The solution needs to come with change in our education, in our radical socio-religious bias and our law. When law starts protecting our rights of freedom, every girl will be able to do what they want. The predators will be scared to death thinking about the consequences.
লেখাটি একদম আমার মনের মত,অসাধারণ।গরমের সময় আমারও কত অসহ্য লাগে ওড়না একটা গলায় পেচিয়ে ঘুরে বেড়াতে!
অসাধারন প্রানোজ্জল একটা লেখা, আমার মনে হচ্ছে লেখাটা সব মায়ের, সব বোনের, সব স্ত্রীর মনের কথা।
আমরা পুরুষরা হিংষো দানবের মত নারিদের দেখি, দেখতে গিয়ে নিজের মা বা নিজের বোনের মুখটা ভেসে আসে না, এটাও সেই আমরা ভদ্রলোকের মুখোষ পরা মানুষ নামক অমানুষ।
লেখাটা সেই সব অমানুষদের সারাক্ষন শোনাতে পারলে ভাল হত॥
আপনার যুক্তিটা স্থুল এবং মন গড়া লেখা। ধরুন আপনার সামনে একটা পুরুষ নগ্ন ভাবে ঘুরে বেড়াচ্ছে আর ভাবছে আমার শরীর আমি ইচ্ছে হলে প্যান্ট পরো নয়তো না। আপনি নিশ্চয়ই তখন অন্য যুক্তি নিয়ে তাকে বন্ধ করবেন।সমাজবদ্ধ হয়ে চলতে হলে অবশ্যই সমাজের ট্যাবুকে স্বীকার করতে হবে। পুরুষতান্ত্রিক সমাজের কারণে যে বৈষম্য নারী মুখোমুখি হয় সেগুলো ভাঙতে হলে সমাজে শিক্ষা বাড়াতে হবে, মানুষের সচেতনতা বাড়াতে হবে। তা না হলে গুটি কয়েক মন্দ মেয়ে হিসেবেই স্বীকৃতি মিলবে
উপমহাদেশ এর কালচার অনেক বেশি দূষিত। আমাদের ইতিহাসে গর্বের অনেক উপাদান থাকলেও নারীদের ব্যাপারে আমাদের চিন্তাভাবনা নৃশংস। আমার মা, বোন, প্রেয়সি, স্ত্রী এর বাইরে মেয়েদের জীবন থাকবেনা। তারা সিনেমা দেখতে গেলে হয়ে যায় বেশ্যা,সাগরে গোসল করতে গেলে বেশ্যা,গরমে কাপড় কম পরলে বেশ্যা, গান গাইলে বেশ্যা, অভিনয় করলে বেশ্যা, নাচলে বেশ্যা।এই কাজগুলো আমার বোনের যায়গায় আমি করলে আবার কুল ম্যান। কতটা হিপোক্রেট আমরা।
Wonderful writing. But check the rape statistics at western country and here. You can dress as you like. But don’t get upset, when some guys give you weird staring. He can see whatever he wants. As long as he is not touching you, you should ignore it. Good luck with your western philosophy.
wow! what a writing!
wow! what a writing. So true.
Every one has own religion, I want to say what’s religion obey to you ? At a glance not support nude any religion . Are you trusted all mighty Allah neither faithless ?
Exellent! I have no other comments because I agree with the writer in every respect.
লেখাটি অত্যন্ত মনজ্ঞ। তবে একটি বিষয় বলতে চাই:পুরুষ নারীকে মাংসপিন্ড হিসাবে না দেখলেই যে বিষয়টি সমাধানের পথ দেখবে তা নয়,প্রয়োজন সমাজের পুরুষতান্ত্রিক কাঠামোটিকে ধ্বংসের কারণ পুরুষতান্ত্রিক যে কেউ হতে পুরুষ বা নারী। পুরুষতান্ত্রিক মতবাদের অবসানটাই প্রধান পন্থা,পুরুষের দৃষ্টি নয়।
@কথাকলি! হ্যাঁ,মনে অশ্লিলতা বাস করে এমন লোকের সংখ্যা চারপাশে অগনিত। কয়জনকে বোঝাবেন বা সুপথে আনবেন?তাদের থাবা থেকে বাঁচতে হলে নিজেকে সেইভ করে চলাটাই উত্তম পন্থা।খাবারে মাছি পরবে,তাই বলে মাছিকে বোঝাবো নাকি খাবার ঢেকে রাখবো। sorry to say,কিছু উৎকট প্রগতিশীল এর আগমন ঘটেছে সমাজে যারা তাদের উদ্ভট চিন্তা চেতনা সমাজে ছড়িয়ে দিয়ে বিশৃঙ্খলা ছাড়া আর কিছুই বয়ে আনছে না।
আপনার চিন্তায় নারি হল পুরুষের খাবার।চো খ খুলে দেখুন থাইল্যান্ড এর কয়টা মেয়ে ওড়না পরে।তাই বলে কি সবাই রেপ হচ্ছে বা মেয়ে দের বুক দেখার জন্য রাস্তা য় সবাই দারিয়ে গেছে।আসলে আপনাদের মতো মানুষ সাহিত্যিক ডা,লুতফর রহমানের প্রবন্ধতে খুজে পাওয়া যায় “রাত হলে পুরুষ আর সমর্পক দেখে না”। কিছু মনে করবেন না, আসলে আপনার চিন্তার দেষা
নাই।পুরুষ তান্ত্রিক মতো বাদটাই আপনাকে এটা বলতে শিখিএছে।
i love it
ঠিক বলেছেন, ফাতিমা রুমি; “অশ্লিলতা …. এমন লোকের চারপাশে অগনিত”; এদেরকে আপনি মাছির সাথে তুলনা করেছেন – তাও ঠিক; তবে কি জানেন, শহরে মাছি-মশার সংখ্যা বেড়ে গেলে ইনসেকটিসাইট ব্যবহার করে ওগুলোকে মেরে ফেলতে হয়; ওদের ভয়ে শহর ছেড়ে চলে যেতে হয় না – তাই নয় কি?