এই পারভার্টদের শেখাবে কারা?

বিথী হক: ছোট ছোট যে বাচ্চাগুলোর সাহস নেই সামনে এসে তর্ক করার, চোখ তুলে কথা বলার কিংবা গালি দেবার, তারা দেখি হুড়মুড় করে আমার টাইমলাইনে এসে যাচ্ছেতাই বলে অপমান করছে, গালি দিচ্ছে। আমার যতোটা না খারাপ লাগে, তার চেয়ে বেশি কষ্ট লাগে। এই বয়সী আমার মায়ের পেটের ভাই আছে, যার প্রথম দাড়ি ওঠার, বয়ো:সন্ধির তিড়িং বিড়িং আচরণের, লালা ফেলে ঘুমানোর সাক্ষী আমি।

14010030_10208655007345449_1721871974_nআমার কষ্ট লাগে এই ভেবে, সে ও কি কারো বোনকে এভাবে আমার অলক্ষ্যে গালি দেয়? আমি যেমন আমার ভাইয়ের সমস্ত বায়না, আবদার মেটানোর বাক্স; তেমনি আর কারো এমন অধিকারের বাক্সকে সেও কি অপমান করে। আমি জানি আমার ভাইয়ের বুদ্ধি-বিদ্যার দৌড় কতটুকু, সে কতটুকু নিতে পারে, কতটুকু জানে। সমপরিমাণ জ্ঞান নিয়ে কেউ যদি আমাকে গালি দিতে আসে তাহলে ব্যাপারটা দু:খজনক না হয়ে যায় না।

কয়েকদিন আগে নাম প্রকাশ না করে একটা গ্রুপ সম্পর্কে লিখেছিলাম। পারভার্ট আর সেক্সুয়ালি ফ্রাস্ট্রেইটেড আন্ডার ১৮ বাচ্চা-কাচ্চারা আমার পোস্টে এসে নোংরামি করল। আমার ব্যক্তিগত বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আমাকে ছোট করল, হা হা হু হু করে হাসল। আমি শুধু হাত বন্ধ করে বসে বসে তাদের এসব কীর্তিকলাপ দেখে গেলাম। তাদেরকে আমার কিই বা বলার আছে? প্রত্যেকটা মানুষকে সম্মান করতে হয়, এই ব্যাপারটা তারা জানে না। তারা এটাও জানে না, প্রত্যেকটা মানুষই গুরুত্বপূর্ণ।

তাদের কাছে বিকৃত যৌনতাই শেষ কথা। এই একটা জিনিস ছাড়া তাদের জীবনে আর কিছু আছে বলে মনে হয় না। অথচ এই বয়সে তাদের হুমায়ূন আহমেদ, জাফর ইকবাল, লিও তলস্তয় কিংবা মাসুদ রানা পড়ার কথা! বইয়ের ভেতর তাদের আলাদা একটা জগত থাকার কথা। তবে জগত অবশ্য তাদের আছে। যে জগত আঁধারের, যে জগতে বিকৃত যৌনতা, যে জগতে নোংরামি, যে জগতে কিলবিলে পোকামাকড়, তাদের সে জগত আছে। কৈশোর থেকে এমন মানসিকতা তাদের কোথায় ঠেলে দিচ্ছে তা এদের পরিবার ঘূণাক্ষরেও টের পাচ্ছে কিনা জানি না। টের কি পাচ্ছেই না তাদের ভালবাসা আর আদর দিয়ে তিলতিল করে গড়ে তোলা বাচ্চাটা ঘরের দরজা এঁটে কোন অন্ধকারে তলিয়ে যাচ্ছে?

নিজের অজান্তেই এসব ছেলেমেয়েরা নিজের ব্যক্তিত্ব আর বোধশক্তিকে নিজের থেকে হারিয়ে ফেলছে। ছেলেরা মেয়েদের ব্যক্তিগত অংশ নিয়ে নোংরা মজা করছে, আর মেয়েরাও তাতে স্বত:স্ফূর্ত অংশগ্রহণ করছে। মেয়েরা বাকি সব দিক দিয়ে পিছিয়ে থাকলেও এক্ষেত্রে এক্কেবারে সমানে সমান। তারাও ছেলেদের ব্যক্তিগত দৈহিক অংশের ছবি দিয়ে যাচ্ছে তাই পোস্ট করে। তারপর শুরু হয় যৌনতা। এই যৌনতা শরীরের নয়, কী-বোর্ডের, স্মার্ট ফোনের আর ট্যাবের। সভ্যতা এদের কাছ হার মেনে হাঁটু গেড়ে বসে থাকে, একটু যদি নিজের অস্তিত্ব রক্ষা করতে পারে।

কিন্তু না, এরা ডেস্পারেট। এদের কাছে শরীর একটা খেলনা, এটা নিয়ে খেলা যায়। নগ্ন, অর্ধনগ্ন ছবি দিয়ে ছেয়ে আছে এই গ্রুপের আপদমস্তক।

কাজী নজরুল, রবীন্দনাথ, জসীমউদ্দিন কেউ ছাড় পায়নি এদের থেকে। সবার লেখার ভেতর বিকৃত যৌনতা এনে নষ্ট করে দিয়েছে সবকিছু। এখন যখন আমরা কয়েকজন প্রজন্ম বাঁচাতে গ্রুপ বন্ধের চেষ্টা করছি, তখন এরা এসে আত্মপক্ষ সমর্থন করে ওকালতি শুরু করেছে। আমরা নাকি শুধু তাদের খারাপ দিকগুলোই দেখছি, তাদের ভাল দিকগুলো দেখার সময় চোখ বন্ধ করে রাখছি। তারা রোজার সময় নাকি পথশিশুদের ইফতার করিয়েছে, কাকে রিকশা কিনে দিয়েছে। এবং তারা যেহেতু এসব কাজ করেছে সেহেতু নোংরামির বৈধ ও হালাল সার্টিফিকেটও পেয়ে গেছে।

ব্যাপারটা এমন যে আমি ২০ লাখ টাকার বিনিময়ে খুন করে ২০ হাজার টাকা দিয়ে বাসার দারোয়ানকে সাইকেল কিনে দিলাম। তার যেহেতু টাকা নাই, সে এখন থেকে সাইকেলে করে দ্রুত সবখানে যেতে পারবে। তো, তাহলে কি আমার ২০ লাখ টাকা দামের দামী খুনটা বৈধ হয়ে গেল?

Bithy 2
বিথী হক

যদি না হয় তাহলে নাকে কান্না বন্ধ করুন। এই ২/১টা ভাল কাজকে উদাহরণ হিসেবে টেনে এনে গ্রুপ বন্ধের বিপক্ষে কথা বলে নিজের সাথে সাথে পুরো পরিবারকে বিপদে ফেলবেন না। আর যেসব ভিডিও ফাঁস হয়েছে বলে আক্রমণাত্মক কথা বলে অন্যকে প্ররোচিত করছেন, একবারও কি ভেবেছেন আপনি এর চেয়েও কত নোংরা!

যৌনতা স্বাভাবিক বিষয়, এই বিষয়টিকে যারা নোংরামির পর্যায়ে নিয়ে গিয়ে অন্যের ব্যক্তিগত স্পেস রাখার প্রয়োজন মনে করে না তাদের দ্বারা সব সম্ভব। এরা না জানে নিজেকে শ্রদ্ধা করতে, না জানে অন্যকে। এরা তৈরি হচ্ছে, পুরো দেশকে বধ্যভূমিতে পরিণত করতে, দেশকে তথা দেশের সম্মান আর মানুষকে ধর্ষণ করে নিজের ভেতরের অসামাজিক, নষ্ট এবং দুর্গন্ধযুক্ত বীজ বপন করতে। এদেরকে বাঁচাবে কারা কিংবা আমাদেরকে এদের হাত থেকে বাঁচাবে কারা?

 

শেয়ার করুন:

মা বাবার জ্ঞান গত শিক্ষার অভাবে ( প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার কথা বলছি না ) ছেলে মেয়েরা ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে অথচ মা বাবার চোখে পড়ছেনা কিছুই । এই মা বাবার বিরাট অংশ এখন শিক্ষিত , কিন্তু তাদের ছেলেমেয়েরাও যে বখে যাচ্ছে , হামলা করে অপরের সম্পদে হাত বাড়াচ্ছে — শুধুমাত্র গৃহশিক্ষার অভাবে । এমনকি নামকরা স্কুলগুলোতে তৃতীয় শ্রেণির ছাত্ররা অপেক্ষাকৃত কমবয়সীদের ওপর নির্যাতন চালিয়ে হাত পাকায় । ছোটদের চোখের সামনে বড়রা তাদের টিফিন খেয়ে ফেলছে, পানির পট থেকে পানিটা ঢেলে ফেলে দিচ্ছে । একটি শিশুর মনে এ নির্মমতা কোথা থেকে আসলো ? Genetic factor টা যদি বাদ দি তাহলে সবার আগে আসে পরিবেশের বিষয়টি । মোবাইল ফোন সেট সবার হাতে হাতে । প্রথমে গেমস দিয়ে সুরু , পরে mobile দিয়ে কোথায় কতদুর যাওয়া যায়। অপরিণামদর্শী বাবা মা এভাবেই সন্তানের মধ্যে ভবিষ্যতের ধ্বংসের বীজ রোপন করেন । এরা নোংরা জ্ঞান মাথায় পুরে অসামাজিক জীব হিসাবে সবার নাকের ডগার সামনেই বড় হয় , কারো প্রতি এদের শ্রদ্ধাবোধ থাকেনা , বড়দের প্রতি অসৌজন্যমুলক আচরন তার নিত্যদিনের অভ্যাসে পরিনত হয়। প্রায় প্রতিদিনই মহিলা নির্যাতন, নিপীড়নের ঘটনাসমূহ খবরের কাগজের মাধ্যমে আমরা জানতে পারি । অনুতাপ হয়, দুঃখ হয়, এই মাতূজাতি কোন সুবিচার পেলো না বলে । বীথি চমৎকার লিখেছে, দাবানলী ভাষায় ওর লেখাটি যেন সারা আকাশ জোড়া । শত শত বীথির আর্তির ছবিটা সবাই দেখুক । এই নরকের কীটদের হাত মেয়েরা বাঁচুক সরকারের হস্তক্ষেপে ।।

ভালো লেগেছে লেখাটি !
আমি ডীসু মেম্বার ! কি বলবো আসলে বুঝতে পারছি না ! হয়তোবা আমি ডিসু মেম্বার শুনে ইতিমধ্যে সিদ্ধান্তে চলে গিয়েছেন আমি বিকৃত যৌনাচার বিশিষ্ট মানসিকতার ! অবশ্য অস্বাভাবিক কিছু না, আমরা সিদ্ধান্ত খুব দ্রুত নেই, জানার চেষ্টা পরেই করে থাকি। জ্ঞান কম বেশি থাকাটা অস্বাভাবিক কিছু না, এবং ভালোমন্দ সবখানেই থাকে, এটা আপনিও জানেন, আমিও জানি। কিছু পার্ভার্ট কিংবা কম বয়সী অপরিণত মেম্বারের জন্য পুরো গ্রুপটাকে বন্ধ করাটা কি শোভা পায়? অনেক টা মাথা ব্যাথা হলে মাথা কেটে ফেলার মত ! আপনারা এমন উঠে পরে লেগেছে গ্রুপ বন্ধের জন্য ! এই আপনারাই পাপ কে ঘৃণা করো, পাপিকে নও বলে বেড়াবেন কোন কোন ক্ষেত্রে! আপনারা এত উঠে পরে লেগেছেন, গ্রুপ বন্ধের জন্য, এই আপনারাই হয়তো কোন ছোট ভাই, কিংবা ছোট বোন হতাশ হয়ে আত্মহত্যা করতে গেলে তাদের বোঝাতে গেলে একবার হলেও, এই বাক্য ব্যবহার করবেন, মাথা ব্যাথা হলে মাথা কেটে ফেলে নয়, ওষুধ দিয়ে সারিয়ে তুলতে হয়!
এবার আসি আরেক কথায়, বারংবার আপনারা পুরো গ্রুপটাকে দোষ দিচ্ছেন, কিছু বিকৃত মানসিকতার মেম্বারদের জন্য, এবং আপনারা গ্রুপ বন্ধের দাবি জানাচ্ছেন, একটি বার দেখলাম না, এত বিশাল বড় একোটা গ্রুপ, যেখানে এত মেম্বার, সেটাকে শুধরানো চেষ্টা করতে! আপনারা উল্টো নিজেদের প্রভাব দেখানোর চেষ্টাই করছেন বারংবার, গ্রুপ বন্ধ করা ব্যাতিত আপনাদের আর কোন মোটিভ দেখতে পেলাম না। সবার লেখালেখির মূল উদ্দেশ্য ঐ একটাই ! গ্রুপ বন্ধ ! পরবর্তিতে আপনাদের দেখা যাবে, বলে বেড়াতে, ওমুক পপুলার গ্রুপ টা খারাপ ছিল, আমদের লেখনী দিয়ে সেটা বন্ধ করিয়ে দিয়ছি, তাদের লাফালাফি বন্ধ করে দিয়েছি! এত বড় একটা ফ্যামিলি ব্রেক হচ্ছে সেটা নিয়ে আপনাদের বিন্দু মাত্র আক্ষেপ থাকবে না। আমি পক্ষে লিখতে আসিনি, গ্রুপ আপনারা বন্ধ করানো চেষ্টা করছনে, বন্ধ হলেও হয়তো আমার কিছু বলার থাকবে না, আপনারা বিচক্ষণ মানুষ! আমি নিতান্ত সাধারণ মানুষ। যে গ্রুপ ছিল শুধুমাত্র ফান করার জন্য, আর মাত্রা পেরিয়ে যাওয়া তথাকথিত ফান বরাবরের মত এভয়েড করেই থাকা গ্রুপটাতে! কিন্তু, আপনাদের বিচক্ষণতার প্রকাশ এখানে এসে এত সুন্দর ভাবে দেখছি, তাহলে পর্ণ দেখা সমাজ যে বিকৃত যৌনধারণা নিয়ে ঘুরে, তাদের বিপরীতে কোথায় আপনাদের অবস্থান? এটা তো গ্রুপের কিছু মেম্বার কে আপনারা বলছেন, গ্রুপ বন্ধ হল, পর্ণ সাইট তো বন্ধ হচ্ছে না! স্ক্যান্ডাল বের হওয়া তো বন্ধ হচ্ছে না! বন্ধ হচ্ছে না যটি পেজগুলো, চটি লেখার ওয়েবসাইট গুলো!
বাহ ! গ্রুপে একটু আধটু ফান করলেই দোষ! কারণ, সেখানে সবাই দেখছে ! আড়ালে বিকৃত ধারণা গড়ে উঠলে দোষ নেই !!
শুনুন, আমাদের সামাজিক প্রেক্ষাপটে, আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থায় বিকৃত যৌনাচার গড়ে ওঠার সুন্দর মাধ্যম! এখানে শুধু একটা গ্রুপ আর কিই বা করছে ! গ্রুপ বন্ধ করবেন! আড়ালে চর্চা তারা ঠিক চালিয়ে যাবে!
অবাক করা ব্যাপার কি! গ্রুপে এত এক্টিভ থেকেও ! কি কারণে যেন আমার মধ্যে বিকৃত যৌনাচার ব্যাপারটা নেই! কেন নেই? তেমনি আমার মত অনেক মেম্বার আছে এরকম! তাদের উপর এসব কোন প্রভাব ফেলে না! 🙂
গ্রুপ বন্ধ , গ্রুপ বন্ধ বাদ না দিয়ে যদি আপনারা বলতেন, গ্রুপ টাকে পরিস্কার করার ব্যাপারে! তাহলে বিন্দুমাত্র পিছপা হতাম না আপনাদের পক্ষে কথা বলতে!

সমস্যা হচ্ছে স্বাভাবিক যৌনতাকে অশ্লীল করেছে সমাজ। জীব বিজ্ঞানে প্রজননের চ্যাপ্টার স্কিপ করে যাওয়া হয় সকল স্কুল ও কলেজে। সেক্স এডুকেশন বলেও কিছু নেই। এঁদের কাছে যৌনতা মানেই হচ্ছে পর্ণ নতুবা চটি বই। এতোটা রক্ষণশীল সমাজে সুস্থ মানুষ বেড়ে উঠবে না এটাই স্বাভাবিক।

দারুণ লাগলো আপনার লেখাটা। হতাশও বোধ করছি।
স্বাভাবিক যৌনতাকে অশ্লীলতার আখ্যা দিয়েছে আমাদের সমাজ, নিষিদ্ধতার তকমা দিয়েছে। যৌনতা আমাদের পাঠ্যে অন্তর্ভুক্ত পর্যন্ত নেই। কিশোর মনের ঔতসুক্য তাতে থামবে কেন? তখনি শুরু হয় অবৈধ, নীতিভ্রষ্ট উৎস থেকে যৌনচর্চা, যাতে নারী-পুরুষের পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধ তৈরীর সুযোগই নেই। চটি বই হয়ে ওঠে খোরাক, যেখানে পরিচয় হয় স্বাভাবিক যৌনতা নয়, বরং কামলিপ্সার সাথে। পারস্পরিক শ্রদ্ধার অভাব যে কারো ব্যক্তিগত বিষয়ে নাক গলাতে উদ্বুদ্ধ করে।

আর মেয়েরাও কেন শামিল? কারণ লিঙ্গভিত্তিক সমতার যুগে এসে, মেয়েরাও ছেলেদের সমান হতে চায়, সমান হওয়া বলতে ‘ছেলে’ দের মত হয়ে ওঠাটাই বুঝি আমরা। তারা যেভাবে দাঁড়ায়, পোশাক পরে, কথা বলে, বন্ধুত্ব করে, সব নকল করে সমান হতে চাই আমরা। কিন্তু আসল কথাটাই ভুলে যাই যে, আমরা ভিন্ন, শারীরিক, মানসিক, চাহিদাগত সব দিক থেকেই। তাই আমাদের পছন্দ, অভিরুচি, ইচ্ছেগুলো আর বা অন্য কিছু একটা হবে, এটাই স্বাভাবিক। সমতা হবে তখন, যখন আমার পছন্দ আর মতামতটাও সমান দাম পাবে, সমতা এটা নয় যে ‘আমি সে হয়ে যাব’। তাহলে তো ‘আমি’ই আর থাকবো না।

ধন্যবাদ।

স্বাভাবিক যৌনতাকে অশ্লীলতার আখ্যা দিয়েছে আমাদের সমাজ, নিষিদ্ধতার তকমা দিয়েছে। যৌনতা আমাদের পাঠ্যে অন্তর্ভুক্ত পর্যন্ত নেই। কিশোর মনের ঔতসুক্য তাতে থামবে কেন? তখনি শুরু হয় অবৈধ, নীতিভ্রষ্ট উৎস থেকে যৌনচর্চা, যাতে নারী-পুরুষের পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধ তৈরীর সুযোগই নেই। চটি বই হয়ে ওঠে খোরাক, যেখানে পরিচয় হয় স্বাভাবিক যৌনতা নয়, বরং কামলিপ্সার সাথে। পারস্পরিক শ্রদ্ধার অভাব যে কারো ব্যক্তিগত বিষয়ে নাক গলাতে উদ্বুদ্ধ করে।

আর মেয়েরাও কেন শামিল? কারণ লিঙ্গভিত্তিক সমতার যুগে এসে, মেয়েরাও ছেলেদের সমান হতে চায়, সমান হওয়া বলতে ‘ছেলে’ দের মত হয়ে ওঠাটাই বুঝি আমরা। তারা যেভাবে দাঁড়ায়, পোশাক পরে, কথা বলে, বন্ধুত্ব করে, সব নকল করে সমান হতে চাই আমরা। কিন্তু আসল কথাটাই ভুলে যাই যে, আমরা ভিন্ন, শারীরিক, মানসিক, চাহিদাগত সব দিক থেকেই। তাই আমাদের পছন্দ, অভিরুচি, ইচ্ছেগুলো আর বা অন্য কিছু একটা হবে, এটাই স্বাভাবিক। সমতা হবে তখন, যখন আমার পছন্দ আর মতামতটাও সমান দাম পাবে, সমতা এটা নয় যে ‘আমি সে হয়ে যাব’। তাহলে তো ‘আমি’ই আর থাকবো না।