জেসমিন চৌধুরী: পনেরো বছর আগের কথা, তখন দেশে থাকি। আমার এক সহকর্মী একবার একটা কাজে আমার বাসায় এসে চারদিকে তাকিয়ে আশ্চর্য হয়ে বললেন, ‘তোমার তো দেখি সবই আছে?’ ‘মানে?’ ‘মানে একেবারে সাজানো সংসার তোমার, আর সবার মতো।‘
‘আপনি কী ভেবেছিলেন?’
‘না মানে, একটা মেয়ে স্বামীকে ছেড়ে এসে বাচ্চাদেরকে নিয়ে একা থাকছে শুনলে অন্যরকম একটা ছবি মাথায় আসে, এরকম সাজানো-গোছানো ড্রয়িং রুম নয়’।
আরেকবার আমার এক বোন-পো আমার বাসায় বেড়াতে এলো তার বন্ধুকে নিয়ে। আমার বাচ্চারা তখন হৈচৈ করে খাবার টেবিলের উপরে ‘বনভোজন’ করছে। আমি কাদামাটি দিয়ে একটা চূলা বানিয়ে দিয়েছিলাম তাদেরকে। সেই চূলাকে একটা বড় এল্যুমিনিয়ামের থালার মাঝখানে রেখে তার মধ্যে ঝাড়ুর কাঠির আগুন জ্বালিয়ে আড়ং থেকে কেনা মাটির পিচ্চি পাতিলে চাল ডাল বসানো হয়েছে। সত্যিকারের রান্নার মতো টগবগ করে ফুটতে থাকা খিচুড়ির দিকে তাকিয়ে বিশ্বজয়ের হাসি হাসছে আমার দুই ক্ষুদে গর্ডন রামজি।
পাশেই বেতের সোফায় বসা বোন পো’র বন্ধুটি শুনি ফিসফিসিয়ে বলছে,
‘এরা তো অনেক ফুর্তিতে আছে রে, বিষয়টা কী?’
আজ মৌসুমী কাদেরের ‘কাবেরী গায়েনের লেখা এবং আমার কিছু প্রশ্ন’ নামক লেখাটা পড়তে গিয়ে মনে পড়লো সেই ‘সর্বস্বহীন’ সময়ের কথা। ওটা ছিল আমার বিবাহ বিচ্ছেদের প্রথম পর্বের (বহু পর্বেই সারতে হয়েছিল কাজটা) সময়। বিবাহ বিচ্ছেদ কঠিন হবার কথা, আমার জন্যও কিছুই সহজ ছিল না। কিন্তু আমি কি ‘সর্বস্বহীন’ ছিলাম?
আমি তখন সিলেটের একটা স্কুলের নিচের দিকের ক্লাসে সামান্য বেতনে শিক্ষকতা করি, বেতন দিয়ে সংসার চলে না বলে বিকেলবেলা বাসায় বাচ্চা পড়াই। নির্মাণাধীন একটা দালানের রেলিংবিহীন দোতলার ফ্ল্যাটে বাচ্চাদের নিয়ে থাকি, কামলা ডেকে বাঁশ দিয়ে নিজে রেলিং বানিয়ে নিয়েছি। নিরাড়ম্বর সাদামাটা জীবন, কিন্তু নিজের বাচ্চাদের নিরাপত্তার জন্য আমার এই সামান্য বাঁশ-বেতের ব্যবস্থাপনার ক্ষমতা আমার কাছে ছিল কোনো বিলাসবহুল বাড়ির মালিকানা থেকেও অনেক বেশি গৌরবের।
একাকী জীবনে টানাপোড়েন ছিল, ঝুট ঝামেলা ছিল, দিন আনি দিন খাই অবস্থা ছিল। আমাদের অনেক টাকা ছিল না সত্যি, কিন্তু একটা বাঁচবার মতো জীবন ছিল। প্রতিদিন বিকেলে ছাত্র পড়ানো শেষে বাচ্চাদের নিয়ে ঘুরতে যেতাম, ছুটির দিনে বাইরে কোথাও খেতাম আমরা, লম্বা বন্ধে ট্রেনে চড়ে ঢাকায় বই কিনতে যেতাম। মাথার উপরে এক পুরুষ সিংহের হুংকারের ভয় ছিল না দিন রাত। শ্বাস-প্রশ্বাস নেবার মতো সাধারণ বিষয়কেও সুখের মনে হতো। সত্যি কথা বলতে সেই প্রথম আমি এবং আমার বাচ্চারা জীবনের স্বাদ যথার্থভাবে উপভোগ করেছিলাম।
কিন্তু আমাদের এই হৈ হুল্লোড় করা আনন্দের জীবনকে কীভাবে দেখতো চারপাশের মানুষ? একটা মেয়ের একাকী জীবনে আপন মনে সুখী থাকতে পারা কি একটা ভাল ব্যাপার?
বিয়ে ভাঙ্গা একটা মেয়ের মনমরা হয়ে থাকবার কথা, জীবন নিয়ে অভিযোগ করবার কথা, সে কেন সারাক্ষণ আনন্দে মেতে থাকবে? নিশ্চয়ই তার কোনো পুরুষের সাথে সম্পর্ক আছে, পুরুষবিহীন জীবনে কীভাবে আনন্দে থাকে অবলা নারী?
একদিন স্টাফরুমে একজন সহকর্মী বললেন, ‘আপনার চরিত্র নিয়ে অনেকে অনেক কথা বলে।‘ আরেকবার শুনলাম, মায়েরা নাকি বাচ্চাদের স্কুল থেকে নিতে এসে কানাঘুষা করেন, ‘ডিভোর্সি একটা মহিলাকে নিয়েছে বাচ্চা পড়ানোর জন্য, আমাদের বাচ্চারা এর কাছ থেকে কী শিখবে?’
আঠারো বছরে বয়সের বাল্যবিবাহ সুখের হবে, এই আশা বিয়ের দিন লাল-নীল জরি দিয়ে সাজানো টয়োটা করোলায় উঠে বসার পরপরই উবে গিয়েছিল। তারপর বিবাহিত জীবনের প্রতিটি দিনই অন্তত:পক্ষে একবার বিচ্ছেদের স্বপ্ন দেখেছি, তারপরও সেই যোগ্যতা অর্জন করতে কেটেছে আরো আঠারোটি বছর।
অনেকে বলেন, শুরু থেকেই যদি জানতে তাহলে এতোদিন লাগলো কেন? একটা মেয়ের কোনদিকে রেহাই নেই। স্বামীর অত্যাচার সহ্য করে থাকলে বলা হবে, থাকলে কেন? ছাড়লে বলা হবে, ছাড়লে কেন? ছাড়বেই যদি, এতো সময় নিলে কেন? আত্মহত্যা করলে বলা হবে, মরলে কেন?
যা’ই হোক, জরাগ্রস্ত এই সমাজের সমস্ত সংস্কারকে বৃদ্ধাংগুষ্ঠি দেখিয়ে শেষপর্যন্ত যেদিন কাজটি করতে সক্ষম হই, ঐ দিনটি ছিল আমার জীবনের সবচেয়ে আনন্দের এবং গৌরবের দিন। খুব সেজেগুজে ডিভোর্স রেজিস্ট্রি করতে বেরিয়ে যাচ্ছি দেখে একজন বয়োজ্যেষ্ঠ আত্মীয়া ধমক দিয়ে বলেছিলেন, ‘এমন কাজে সেজেগুজে যাচ্ছ কেন? একটু শরম কর। মাথায় কাপড় দিয়ে যাও’।
আমার আনন্দের কারণ তাকে কেন, কাউকেই বুঝিয়ে বলতে পারিনি। আমার কাছে ঐ দিনটিই আমার জন্মদিন, তার আগের দিনগুলো ছিল সমাজের, মা-বাবার, সংস্কারের, আমার নয়। তার আগের দিনগুলোতে আমি ছিলাম নিঃস্ব, কারণ আমার ‘আমি’ বলতেই কিছু ছিল না। নিজেকে ফিরে পাবার ঐশ্বর্যে ভরপুর আমার নতুন জীবন একাকী হতে পারে, কিন্তু ‘সর্বস্বহীন’ হয় কীভাবে?
বাংলাদেশে নারীদের আত্মহত্যার কারণের কোন সমীক্ষা আমি পড়িনি, কিন্তু খবরে প্রতিনিয়তঃ যা শুনি তা থেকে মনে হয় বিচ্ছেদ প্রাপ্ত থেকে বিবাহিত, ধর্ষিত, নির্যাতিত মেয়েদের আত্মহত্যার সংখ্যা অনেক বেশি। আকতার জাহানের আত্মহত্যার কারণ কী ছিল তার বিবাহ বিচ্ছেদ, না’কি ব্যক্তিগত কষ্ট, নিঃসঙ্গতা, পুরুষতান্ত্রিক সমাজের হাতে তার অসহায়ত্ব? এগুলো ভেবে দেখবার বিষয়।
মজার ব্যাপার হলো, নারীর একাকী ভালো থাকা যে সমাজ মেনে নিতে পারে না, সেই সমাজই আকতার জাহান জলি’র আত্মহত্যার মতো ঘটনা নিয়ে আবার মাতম করে। আপনারা আমাদের বাঁচতেও দেবেন না, মরতেও দেবেন না। আমরা যেমনই থাকি, শুধু পুরুষের কণ্ঠলগ্ন হয়ে থাকলেই আপনারা খুশী।
অবশ্য আমার বাঁশের রেলিং দেয়া বাসায় বাচ্চাদেরকে নিয়ে ছোট্ট গোছানো সংসারে একা থাকার দিনগুলোর পর অনেক এগিয়ে গেছে পৃথিবী। কিছুদিন আগে বন্ধুদের সাথে এক ড্রইংরুম আড্ডায় কথা হচ্ছিল একা জীবন কাটানো নারীদেরকে নিয়ে। গালগল্পে যেসব নারীদের কথা উঠে এসেছিল তারা সবাই শিক্ষিত, প্রতিষ্ঠিত, নিজের পরিচয়ে পরিচিত, জীবন নিয়ে পরিতৃপ্ত।
ব্যতিক্রম নেই, তা নয়। একা জীবনের অনেক কষ্ট আছে, অপূর্ণতা আছে, কিন্তু সেই সাথে আছে স্বস্তি এবং শান্তিও। মোট কথা, একজন নারীর জীবনের সার্থকতার সাথে একজন পুরুষ সঙ্গীর চেয়ে আরো অনেক বিষয়ের সম্পৃক্ততা এখন অনেক বেশি। একজন আকতার জাহান ডিভোর্সি ছিলেন এবং আত্মহত্যা করেছেন, তার মানে এই নয় যে তিনি ‘সর্বস্বহীন’ ছিলেন, বা প্রতিটি ডিভোর্সি নারীর জীবন করুণ এবং সর্বস্বহীন।
একটু মন দিয়ে চারদিকে তাকালে এমন অনেক নারীকে দেখতে পাবেন যারা বিবাহ বিচ্ছেদের পর বাচ্চাদের নিয়ে একা জীবন বাঁচার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, এবং তারা ভালোই আছেন। ভালো থাকার জন্য একজন নারীর প্রয়োজন আত্মবিশ্বাস, শিক্ষাগত যোগ্যতা এবং স্বচ্ছলতা। সাথে একজন যোগ্য পুরুষসঙ্গী জুটে গেলে তা উপরি পাওনা, আর না থাকলেও খুব একটা সমস্যা নেই, বরং দুষ্টু গরুর চেয়ে শূন্য গোয়ালই আধুনিক নারীর বেশী কাম্য।
শুধু ডিভোর্সী নারী কেন- সকল নারী সে, ডিভোর্সী হউক, বিবাহিত হোক আর সিঙ্গেলই হোক- সাবলম্বি হওয়াটি জরুরী। যে কোন মানুষ সে পুরুষই হোক আর নারীই হোক যখন সাবলম্বি- তখন সে সমাজে ’ডিসিসন মেকার’-এর মর্যদা লাভ করে। ডিসিসন মেকিং-এ আর্থিক সঙ্গতি প্রধান ফ্যাক্টর। এটি আমরা আমাদের কর্মক্ষেত্র থেকে সমাজের সর্বস্তরে দেখতে পাই- এবং এটি সমাজ-ধর্ম বহু পূর্ব থেকেই স্বীকারও করে নিয়েছে।
পবিত্র কোরআনের আয়াত (৪:৩৪): ’পুরুষ নারীর কর্তা, কারণ আল্লাহ তাহাদের এককে অপরের ওপর শ্রেষ্ঠত্ব দান করিয়াছেন এবং এই জন্য যে পুরুষ তাহাদের ধন-সম্পদ ব্যয় করে।——-।—।’
আরেকটি আয়াত (৪:২৫): ’তোমাদের মধ্যে কাহারও স্বাধীনা ঈমানদার নারী বিবাহের সামর্র্থ না থাকিলে তোমরা তোমাদের অধিকারভুক্ত ঈমানদার দাসী বিবাহ করিবে। আল্লাহ তোমাদের ঈমান সম্মন্ধে পরিজ্ঞাত। তোমরা এক অপরের সমান;——–।—–।’
শেষ অংশটি খেয়াল করুন: ’তোমরা এক অপরের সমান’- অর্থাৎ যখন পুরুষ ও নারীর আর্থিক সামর্থ সমান হলে তখন কেউ কারো কর্তা নন- ’ঊভয়ে সমান’।
আকেটি আয়াতে বলা হয়েছে-(৪ঃ৩২) ঃ যদ্দারা আল্লাহ তোমাদের কাহাকেও কাহারও ওপর শ্রেষ্ঠত্ব দিয়াছেন দান করিয়াছেন তোমরা তাহার লালসা করিও না। পুরুষ যাহা অর্জন করে তাহা তাহার প্রাপ্য এবং নারী যাহা অর্জন করে তাহা তাহার প্রাপ্য অংশ।——-।’
খুব সম্ভবত এই তিনটি আয়াতে নারীকে আর্থিকভাবে স্বাবলম্বি হওয়ার তাগিদই দেওয়া হয়েছে।
সৃষ্টির আদিকাল থেকে নারী-পুরুষের সম্পর্কেও ক্ষেত্রে পুরুষ ঝঞ্জাট মুক্ত। অন্যদিকে নারী এই সম্পকের্র দৃষ্টিগ্রাহ্য ঝঞ্জাটের সাক্ষ্যবহনকারী। ফলে নারীরা এই সম্পর্কের ক্ষেত্রে বরাবরই স্পর্শকাতর। আর নারীর এই স্পর্শকাতরতার সুযোগটি গ্রহন করে পুরুষদের বৃহত্তর একটি অংশ নারী ’অধিনস্ত’ এ ধারণাটি নারীর চিন্তায় এমনভাবে প্রবেশ করিয়েছে যে -তাদের মনে হয়েছে এটিই জগতের নিয়ম। তবে গত ছয়-সাত দশক ধরে বিজ্ঞানের কল্যানে নারীর সে সমস্যা নিয়ন্ত্রনে সক্ষমদা অর্জন করায়- সমাজে নারী পুরুষের পার্থক্যটি এখন শুধুমাত্র ’আর্থিক সঙ্গতির পাথ্যর্ক্যই।’ নারীকে পুরুষের সামান্তরাল গতি বজায় রাখতে হলে তাদেরকে অবশ্যয় স্বাবলম্বি হতে হবে। তারা যে সবস্বহীন নয়- সেটে প্রমাণের দায়িত্ব তাদেরই।
তবে অধিকাংশ নারীই সমাজের এই মৌলিক পরির্তনটি এখনও তেমনভাবে হৃদয়ঙ্গম করতে পারেন নি। আলোচ্য আর্টিকেলটিতে লেখিকা তিনটি ঘটনার উদাহরণ দিয়েছেন। এবং লক্ষনীয় যে, এই তিনটি ঘটনার, ভিলেন কিন্তু নারীই! নারীদের এই মানষিকতার সমাধানটির জন্য অগ্রবর্তী নারীদের দায়ই প্রধান।
এমন কি ’ডিভোর্সী নারীরা সর্বস্বহীন নয়’ আর্টিকেলের এই শিরোনামেও মনে হওয়া স্বাভাবিক, লেখিকা নিজেও সন্দেহে ছিলেন, ’ডিভোর্সী নারীরা সর্বস্বহীন ।
এই প্রসঙ্গে পবিত্র কোরআনের আরেকটি ৩টি আয়াতের অংশ বিশেষ : (৪ঃ১২৮, ১২৯, ১৩০) ঃ ’কোন স্ত্রী যদি তাহার স্বামীর দুর্ব্যবহার কিংবা উপেক্ষার আশংকা করে তবে তাহারা আপোষ-নিস্পত্তি করিতে চাহিলে তাহাদের কোন গুনাহ নাই এবং আপোষ-নিস্পত্তিই শ্রেয়।—-। ——————। ——–। যদি তাহারা পরস্পর পৃথক হইয়া যায়, তবে আল্লাহ তাহার প্রাচূর্য দ্বারা তাহাদের প্রত্যেককে অভাবমুক্ত করিবেন। আল্লাহ প্রাচূর্যময়, প্রজ্ঞাময়।’
নিশ্চয়ই ’ডিভোর্সী নারীরা সর্বস্বহীন’ নয়। কোন নারীই নয়।
আপনার আর্টিেকেলটি নারীদের সচেতনতা বৃদ্ধিতে সহয়ক হবে নিশ্চয়।
ঘুমের মধ্যে স্বপ্ন দেখা নয়, নিজের মত করে স্বপ্ন রচনা করতে হবে এবং আত্নপ্রত্যয়ী হয়ে স্বপ্নে রচিত জীবনকাহিনী বাস্তবে রুপায়িত করতে হবে। আত্নবিশ্বাসীর কাছে হতাশারই কোন স্হান নেই থাকতো আত্নহত্যা !
এক কথায় সাহসী জীবন গড়েছেন জেসমীন চৌধুরী। ধন্যবাদ দিলে কম হয়ে যায়।
শুভ কামনা রইলো লড়াইরত জেসমীন……..দের জন্য।
সর্বোচ্চ বিদ্যাপিঠের শিক্ষক আক্তারজাহানের দুঃসহ যাতনা জানিনা, যৎকিন্চিত উপলব্দি করি তাতে মর্মবেদনা হয়, তিনিও যুদ্ধ করে আরো একটা বিজয়ীনির কাহিনী লিখে অনন্য উদাহরণ হতে পারতেন।
সহমর্মিতা রইলো তার জন্য।
Nice and valuable writing. Take care. May Allah bless you. I salute you.
সুন্দর লিখেছেন। কিন্তু সন্তানহীন ডিভোর্সি নারীর জীবন সর্বস্বহীন হয় নাকি নয় এদিকটি স্পর্শহীন থেকে গেল। সেই উত্তরটিও পাওয়া গেলে শিরোনামের যথার্থতা নিয়ে যেটুকু সংশয় থেকে গেল এটুকু থাকতো না। ভেবে দেখবেন ও লিখবেন আশা করি
Lekhati pore koshto dayok aanondo pelam. Lekhay munshiana aase… Jibon bodher oviggota orjito hoyese. Onek divorcey nari nuton kore sundor vabe beche thakar prerona paben…monobol fire paben.
বিলম্বে পড়া হলেও চমৎকার ও সময়োপযোগি লেখার জন্য ‘জেসমিন’ আপানাকে ধন্যবাদ।
প্রিয় জেসমিন চৌধুরী , এমন এক সময় আপনার লেখাটা পেলাম ঠিক যেদিন নাকি এক স্বাবলম্বী নারীর মুখে আরেক স্বাবলম্বী নারীর স্বামীর অত্যাচারে অতিষ্ট হয়ে আত্মহননের প্রচেষ্টার কথা শুনে আসলাম, যদিও আল্লাহ্র অশেষ কৃপায় এই যাত্রায় সেই নারীর জীবন বেচে গেছে।যিনি আমাকে কাহিনীটা বলছিলেন তার নিজের জীবন খুব সুখকর ছিল না যার কারণে শেষ পর্যন্ত তিনি স্বামীকে তালাক দিয়েছেন ঠিকই কিন্তু নিজের তালাক পরবর্তী জীবনকে বোঝা মনে করছেন। তার মুখ থেকে কথা গুলো শোনার পর আমার সাধ্যমত তাকে বোঝানোর চেষ্টা করলাম যে তিনি তালাক দিয়ে ঠিক কাজটিই করেছেন এবং বর্তমান জীবনকে উনার বঝা না ভেবে বরং সুন্দরভাবে উপভোগ করা উচিৎ । আমার কথা কতটুকু উনার উপকারে আসবে জানিনা তবে কালকে তার সাথে আবার দেখা হলে এই লেখাটি তাকে আমি পড়তে দিব , আশা করি তার পথ চলাতে আমার কথার সাথে সাথে আপনার এই লেখাও কিছুটা সাহস জোগাবে । লেখাটার জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ ।
তার জন্য শুভকামনা রইল।
একা থাকা মানে নিঃসঙ্গতা নয়, একা থাকাটা যোগ্যতার ব্যাপার, সবাই একা থাকতে পারে না।
একদম
একা থাকা একটা যোগ্যতার ব্যাপার, সবাই একা থাকতে পারে না।
Brilliant
ধন্যবাদ।
আমিও স্বপ্ন দেখি, একা বাচার স্বপ্ন। জানিনা আমার এই স্বপ্ন, কনদিন পুরন হবে কিনা। হয়ত অনেক সময় লাগবে, আল্লাহ যেন আমাকে মুক্তি দেন, এখান থেকে। আমিও আমার সন্তান্দের নিয়ে সুখি হতে চাই।
এক টা গোম্রামুখি, হিংসুটে, অহংকারী, অমিশুক মানুষ এর সাথে সংসার চালানো খুব কস্তের।
আমি জানি না আপনি আমার এই উত্তরটি পড়বেন কি’না। একটি স্বপ্ন দেখতে পারাটাই একটা বিশাল ব্যাপার, একদিন নিশ্চয়ই আপনার স্বপ্ন সত্যি হবে। নিজের উপর ভরসা রাখুন, নিজেকে গড়ে তুলুন, সাহস হারাবেন না।
ভালো লেখার জন্য জেসমিন আপাকে ধন্যবাদ। আমার আগের মন্তব্যটা কেন পোস্ট হলো না বুঝতে পারছি না।
নারীর একা থাকা কোনো নতুন ঘটনা নয়। নিম্নবৃত্তের অশিক্ষিত মেয়েরা একরকম একাই থাকে। কেননা তাদের অধিকাংশেরই বিয়ে টিকে না। হয় স্বামী আরেকটা বিয়ে করে নয়তো ছেলেমেয়ে সমেত বৌটাকে রেখে পালিয়ে যায়। তখন অল্প শিক্ষিত আর দরিদ্র মেয়েগুলো একা একাই ছেলেমেয়েদের নিয়ে জীবন সংগ্রাম চালিয়ে যায়। আর গার্মেন্টসের মেয়েরা তো এক্সেত্রে বিপ্লব করেছে। তারা এখন বিয়ে বসে না, বিয়ে করে। বাবা-মা ও সন্তানদের পাশাপাশি তারা স্বামী নামের একটি পুরুষকেও পালন করে থাকে। কিন্তু সমস্যা টা হচ্ছে তথাকথিত শিক্ষিত, স্বাবলম্বী আর প্রতিষ্ঠিত নারীদের নিয়ে। তারা বিবাহ বিচ্ছেদেও ভয় পায়, একা থাকতেও ভয় পায় আবার নতুন করে জীবন শুরু করতেও তাদের ভয়। সাম্প্রতিক কিছু অনাকাঙ্খিত ঘটনার পর আমার এমনটি-ই মনে হয়। তথাকথিত অল্প শিক্ষিত মেয়েটি হেলাফেলায় যে কাজটি অনায়াসে করে ফেলছে আমাদের প্রতিষ্ঠিত মেয়েরা কেন তা পারছে না সেটি ভেবে দেখতে হবে। এ নিয়ে আমার বিস্তারিত লেখার ইচ্ছে আছে। সুন্দর ও সময়োপযুগী লেখার জন্য জেসমিন আপাকে ধন্যবাদ।
ধন্যবাদ।
খুবই সহজ ও সত্যি একটা কাহিনী। প্রতিটি মেয়েরই উচিৎ স্বামীর ঘরে প্রতিদিন অপমানিত জীবনযাপন করার চেয়ে মুক্ত ভাবে ডিভোর্স দিয়ে থাকা। প্রাথমিক কিছু সমস্যা থাকলেও শান্তিতে ঘুমানো অনেক বেশি জরুরি
ধন্যবাদ
tachometer ,we all women salute u , valo thakben.
পৃথিবীটা যেদিন মানুষের (নারী বা পুরুষের না) হবে, সেদিন আর কোন দূঃখ যন্ত্রনা থাকবেনা, সমতার পৃথিবী বড় দরকার আমাদের। প্রভূত সম্পদের চেয়ে সমতা অনেক বেশী জরুরী, না হলে মানুষের সমস্ত অর্জন একদিন মিথ্যা হয়ে যাবে। জেসমিন আপনার লেখাটা চমৎকার হয়েছে, আপনার ভেতরের সাহস এবং শক্তিটা অনেক মজবুত – অনেক ভাল লাগলো।
ধন্যবাদ
ড. কাবেরী গায়েনের লেখাটা আমিও পড়েছি।
আমাদের পেঁচে যাওয়া সমাজ ব্যবস্থায় ড. কাবেরী গায়েন পুরুষতন্ত্রের জয় গান গেয়ে গেছেন। একজন নারী হয়েও!! আমি অবাক হয়েছি।
আপনার সংগ্রামী জীবন ও আপনাকে আমার স্যালুট জানাই। শুভ কামনা।
ধন্যবাদ
আমিতো এখনো লিখিনি মেম।লিখা শুরু করবো ভাবছি।আপনি কিভাবে জানলেন আমার সব না বলা কথা
আমি তো অনেকের গল্প লিখেছি
জনাব জেসমিন চৌধুরীর লেখা পড়ে আমার খুব ভালো লাগলো। তাঁর যে সাহস এবং জীবনকে আলোর পথে নিয়ে যাবার প্রত্যয় সর্বোপরি চেতনার মানবিক বিস্তার, সকল ব্যারিয়ার জয় করে জীবনপ্রেমমগ্ন অবারিত যাত্রায় নিজেকে শক্ত ভিতের ওপর দাঁড়া করানো, প্রতিটি মুহূর্ত বেঁচে থাকার নতুন আয়োজন— এই তো জীবনের মানে, নয় কী ?
আপনার চমৎকার মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।