সোশ্যাল মিডিয়া, গুলতেকিন খান ও বাঙালি-মানস

মাসুদা ভাট্টি: সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম উন্মুক্ত হওয়ার ফলে বাঙালি-মানস বোঝার নতুন সুযোগ তৈরি হয়েছে বলে আমার ধারণা। এর আগে যখন দেশের তরুণ সমাজ ব্লগ লেখালেখি দিয়ে নিজেদের বক্তব্য উপস্থাপন শুরু করেছিল তখন প্রায়শই দেশের নারী-পুরুষ সমতা বিষয়ক আলোচনা থেকে একথা খুব স্পষ্ট করেই বোঝা যেতো যে, দেশের তরুণ সমাজেও নারী সম্পর্কে খুব ভালো ধারণা পোষণকারীদের সংখ্যা খুব বেশি নেই।

Masuda Bhattiআরো একটি জায়গা রয়েছে নারী সম্পর্কে ইন্টারনেট ব্যবহারকারী বাঙালি-মানস বোঝার, সেটা হলো, নারী বিষয়ক কোনো লেখা কিংবা নারী সম্পর্কিত কোনো লেখার নীচে আসা পাঠক প্রতিক্রিয়া থেকে। দু’একটি উদাহরণ দেয়া যাক।

তসলিমা নাসরিন যদি কোনো লেখা লেখেন তাহলে তার নীচে যে সব প্রতিক্রিয়া দেখা যায় তা নিয়ে যতো কম কথা বলা যায় ততোই উত্তম, কারণ, এমন কথা কেউ নিজের নামে খোলা আইডি থেকে করতে পারেন, সেটা ভাবলেও বিবমীষা হয়; অন্ততঃ সুস্থ বিবেকের হওয়ার কথা।

কিন্তু আমরা নিজেদেরকে সুস্থ দাবি করবো সে উপায় কই? একবার গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হলো যে, তসলিমা নাসরিন স্তন ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়েছেন। আর যায় কোথায়? শুরু হলো ভয়ঙ্কর আক্রমণ। যেহেতু তিনি একজন নারী এবং তিনি একজন লেখক, এবং যা বলার তিনি তা প্রকাশ্যেই বলেন, কোনো রকম রাখঢাক না রেখেই, সে কারণেই তার মাথার দাম ধরা যায় এবং তার চেয়েও বড় কথা হলো, তাকে পৃথিবীর কুৎসিততম গালি দেওয়া যায়।

আরো বড় কথা হলো, তার লেখা ও বক্তব্যের কারণেই নাকি তসলিমা নাসরিনের বুকের ওপর গজব নেমে এসেছে – বাক্যটি আমি অনেক ভদ্র ভাষায় উল্লেখ করলেও ওইসব প্রতিক্রিয়ায় কিন্তু কোনো ভদ্রতার ধার ধারা হয়নি।

বাঙালি পুরুষের সংবেদনশীলতা যে কোনো কালেই ছিল-টিল না, তার উদাহরণ দেওয়ার জন্য এই হাজার হাজার প্রতিক্রিয়াগুলোই যদি কোনো গবেষক উল্লেখ করেন, তাতেই চলে যাবে।

সম্প্রতি আরেকটি খবরের নিচে এরকম প্রতিক্রিয়া অনেকেরই নজরে এসে থাকবে। তাহলো গায়ক শাকিলা জাফরের নতুন বিয়ে ও সেই সুবাদে নিজের নামের পরিবর্তন। যেহেতু শাকিলা একজন ভারতীয় হিন্দু পদবিধারী ব্যক্তিকে বিয়ে করেছেন, সেহেতু তাকে গালি দেওয়া যেন ধর্মীয়ভাবেই হালাল হয়ে যায় এবং তাতে নিশ্চয়ই পরকালে বড় কোনো পুরষ্কার পাওয়া যেতে পারে, সে লক্ষ্যেই যেন হাজার হাজার বাঙালি পুরুষ ঝাঁপিয়ে পড়েছিল ওই খবরের নিচে।

একই কথা প্রযোজ্য অভিনেতা অপি করিমের বিয়ের খবরের ক্ষেত্রেও। এমনকি আমার ফেইসবুক বন্ধুদেরও অনেককেই দেখেছি অপি করিমের বিয়ে নিয়ে কেবল উদ্বেগই নয়, তাকে একেবারে “বাজারের মেয়েমানুষ” হিসেবে প্রমাণ করার জন্য বিশাল গল্প ফেঁদেছেন। এইরকম এক বন্ধুকে বন্ধু তালিকা থেকে বিদায় দিতে হলো, কিন্তু ক’জনকে বিদায় দেবেন আপনি? একজন, দু’জন, দু’হাজার জন? সংখ্যায় তো এরা কোটি কোটি। প্রমাণ চান? দাঁড়ান বলছি।

Gultekinকবি গুলতেকিন খান-এর একটি সাক্ষাতকার গত তিনদিন ধরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। একটি অনলাইন পোর্টালে সাক্ষাতকারটি প্রকাশিত হয়েছে তিন পর্বে। সাক্ষাতকারের বিষয় খুব সোজা ও সরল, বিশেষ করে গুলতেকিন খানের আগের জীবন, যে জীবনে তার একজন স্বামী ছিলেন, যে ভদ্রলোক কিনা চারটি প্রাপ্তবয়স্ক সন্তান রেখে গুলতেকিনের সঙ্গে বিবাহ বিচ্ছেদ করে আরেকজন নারীর সঙ্গে ঘর বেঁধেছিলেন। আর এই ব্যক্তি আর কেউ নন, বাংলা ভাষায় লিখে কিংবদন্তিসম জনপ্রিয়তা লাভকারী লেখক হুমায়ূন আহমেদ।

তিন পর্বের এই সাক্ষাতকারটি যদি কেউ পাঠ করে থাকেন তাহলে দেখতে পাবেন যে, গুলতেকিন খান কোনো জায়গাতেই লেখক হুমায়ূন আহমেদকে কোনো প্রকার অপমান তো দূরের কথা, তার বিষয়ে নেতিবাচক কিছুই বলেননি। ভদ্রমহিলা কেবল তার কাছে সকল অর্থেই প্রয়াত (মৃত এবং বিয়ে বিচ্ছেদের সূত্রে) জীবনসঙ্গী সম্পর্কে সেই কথাগুলোই বলেছেন, যেখান থেকে এই কথাগুলোই পাঠক বুঝবেন যে, ভদ্রমহিলা আসলে এই ভদ্রলোকের সঙ্গে একেবারেই সুখী ছিলেন না। সুখে না থাকার নানা কারণ থাকতে পারে, এবং সেই কারণগুলি একেকজনের ক্ষেত্রে একেক রকম, সেটাই স্বাভাবিক।

গুলতেকিন খানের মনে হয়েছে যে, হুমায়ূন আহমেদ তাকে “আন্ডার এস্টিমেইট” করতেন। খুব স্বাভাবিক একটা উপলব্ধি এবং এদেশে এমন কোনো নারী কি আছেন যিনি হলপ করে বলতে পারবেন জীবনের কোনো না কোনো সময়ে তার এই উপলব্ধিটি হয়নি? বাঙালি নারীকে আন্ডার এস্টিমেট তো দূরের কথা, কোনো ভাবেই কি বাঙালি পুরুষ কোনোদিন “এস্টিমেইট” করতে পেরেছে নারীকে? আসলেই নারীটি কী চান বা নারীটির মন কেমন, চেষ্টা করেছেন সেটা বোঝার?

গুলতেকিন খান এই কথাটি বলে এবং সাক্ষাতকার দিয়ে যেন মস্ত বড় কোনো অপরাধ করে ফেলেছেন। এই সাক্ষাতকারের পক্ষে ও বিপক্ষে অনেকগুলো স্ট্যাটাস লক্ষ্য করছি, কিন্তু আমার পড়া বেশিরভাগ স্ট্যাটাসই নেতিবাচক। কী অপরাধ গুলতেকিন খান-এর?

বেশিরভাগ বিশ্লেষকই (?) বলতে চাইছেন যে, হুমায়ূন আহমেদ যেহেতু এখন আর বেঁচে নেই সেহেতু তাকে নিয়ে আর টানাহ্যাঁচড়া কেন? যেন হুমায়ূন আহমেদ বেঁচে থাকলে গুলতেকিন খান যদি এমন কোনো সাক্ষাতকার দিতেন, তাহলে এই বিশ্লেষকদের কোনো অসুবিধেই ছিল না, কিন্তু আহারে লোকটা এখন বেঁচে নেই, সত্য-মিথ্যে যাচাই করার তো কোনো পথ নেই, তাই না?

ব্যাপারটা সত্যিই দুঃখের খুউব! কেউ কেউ বলছেন যে, এতোই যদি ক্ষোভ তাহলে গুলতেকিন খান তখন হুমায়ূন আহমেদকে ছেড়ে যাননি কেন, যখন তিনি গুলতেকিন আহমেদ ছিলেন? অনেকেরই মনে হতে পারে যে, খুব যৌক্তিক ও মোক্ষম প্রশ্ন করা হয়েছে, এইবার তুই কই যাবি- টাইপ। শিক্ষিত বাঙালি মধ্যবিত্ত ঘরের মেট্রিক পাশ করা মেয়েকে যে পরিবার একটি মাস্টার্স করা বিদেশগামী ছাত্রের সঙ্গে বিয়ে দেয় সে পরিবার মেয়েটিকে আসলে স্বত্ত্ব ত্যাগ করেই কন্যা সম্প্রদান করে, মেয়েটিকে কোনোভাবেই ফিরে পেতে চায় না আর। এটা গুলতেকিন খান কেন সব মেয়েই বোঝে।

তাছাড়া বিয়ের শুরুতে হুয়ামূন আহমেদেরও নিশ্চয়ই গুলতেকিনের প্রতি প্রেম থেকে থাকবে, প্রতিদিনের জীবনে একের পর এক বাচ্চা হওয়ার সুবাদে হুমায়ূন-এর সে প্রেমে যে ভাটা পড়ে থাকবে, তাতো ব্যক্তি হুমায়ূনকে যারা চেনেন তাদের সকলেরই জানার কথা। এরপর চারটি সন্তানকে নিয়ে কোনো রকম ক্যারিয়ার না-থাকা, বাঙালি মধ্যবিত্ত ঘরে বড় হওয়া কোনো নারী তার বিখ্যাত হওয়া স্বামীকে ছেড়ে বেরিয়ে আসবেন এবং সেই নারীর পরিবার তাকে “চুয়া-চন্দনে” বরণ করে নেবে, এই নজির এদেশে ক’টি আছে একবার ভাববার অনুরোধ জানাই।

Collage womenকিন্তু এতোদিন পরে এসেও যদি গুলতেকিন খানের মনে হয়ে থাকে যে, সেসব ঘটনাগুলো বলা দরকার কিংবা তাকে যিনি সাক্ষাতকার নিয়েছেন তার প্রশ্নের উত্তর দেওয়া প্রয়োজন, তাতে তার দোষটি ঠিক কোথায়? জানি, এ প্রশ্নের উত্তর কেউ দেবেন না, কারণ উত্তর নেই।

বিখ্যাত লেখক চার্লস ডিকেন্সের জীবনে অদেখা নারী নিয়ে এই সেদিনও একটি সিনেমা হয়েছে, নাম “ইনভিজিবল উওম্যান”, লিও তলস্তয়, রবীন্দ্রনাথ কিংবা সৈয়দ শামসুল হক, সকলেরই কিন্তু আগ্রহ লেখকদের জীবনে নারীর উপস্থিতি নিয়ে, কিন্তু যেমনি কোনো নারী নিজে থেকে তার জীবনে আসা বা থাকা লেখককে নিয়ে দু’তিনটি কথা বলেছেন কী হয়েছে চিত্তির! গেল গেল রব চারদিকে। হুমায়ূন আহমেদ গেলেন। তার লেখালেখি গেল। এবং সর্বোপরি বাঙালি পুরুষেরও যাত গেল। অবাক হচ্ছেন তাই না?

অবাক আরো হবেন, যখন দেখবেন যে, গুলতেকিন খানের এই সাক্ষাতকার নিয়ে কেবল পুরুষরা নন, অনেক নারীও যারপর নাই বিচলিত। তারাও বলছেন, কেন হুমায়ূনকে নিয়ে নতুন করে টানাটানি? যেন হুমায়ূন আহমেদ যেহেতু মারা গেছেন সেহেতু গুলতেকিন খানকেও মারা যেতে হবে, সবচেয়ে ভালো হতো সহমরণে গেলে! বেঁচে আছেন বলেই তো গুলতেকিন খান তার ছেড়ে আসা জীবনের গল্প আমাদের শোনাতে পারছেন এবং ভাগ্যবশতঃ সেই জীবনে একজন পুরুষ আছেন, যার নাম হুমায়ূন আহমেদ, সুতরাং গুলতেকিন খান একজন মহা পাতকী। এ পাপ তিনি খণ্ডাবেন কী করে?

জানি না, এই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের বিশ্লেষকরা তার কী নিদান দেন। প্রথমে তো কেউ কেউ বলেছেন যে, এই সাক্ষাতকার ভূয়া। কিন্তু যখন একটি ভিডিও-ও জুড়ে দেওয়া হলো সাক্ষাতকারে, তখন কেউ কেউ নিমরাজি হয়েছেন। প্রশ্ন হলো, গুলতেকিন খান যদি সাক্ষাতকার নাও দিয়ে থাকেন বা অনলাইন পোর্টালটি যদি কাল্পনিক সাক্ষাতকারও প্রচার করে থাকে, তাহলেও কি যে সব প্রশ্ন গুলতেকিন খানের এই সাক্ষাতকার নিয়ে উচ্চারিত হয়েছে সেগুলো সঙ্গত মনে হওয়ার কোনো কারণ আছে? নেই।

এ প্রশ্ন কিন্তু কেউ তোলেননি যে, হুমায়ূন আহমেদ যখন গুলতেকিন খানের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করেন তখন গণমাধ্যমে একটি বিশাল সাতকাহনময় চিঠি প্রকাশ করেই সম্পর্কটি ছিন্ন করেছিলেন। সেটি কেন করেছিলেন তিনি? তাতে গুলতেকিন খানের মানসম্মানে যে টান পড়তে পারে সে বোধ কারও হয়েছিল কি? তখন গুলতেকিন খানেরও লেখা একটি চিঠি নাকি প্রকাশ করা হয়নি কোনো বিচিত্র কারণে। কিন্তু তাই বলে তিনি এখন কোনো কথা বলতে পারবেন না, সে সিদ্ধান্ত আসলে কে নিল? কিংবা তার মুখটাকে বাংলাদেশ ব্যাংকের ভল্টে জমা রাখার নির্দেশনাই বা কোত্থেকে এলো?

Gultekin 2আজকে যারা গুলতেকিন খানের এই সাক্ষাতকার পাঠে খুব ক্ষিপ্ত তারা কেন মনে করছেন যে, সম্পর্ক ত্যাগ করে এলেই সম্পর্ক শেষ হয়ে যায়, কিংবা মানুষটা মারা গেলেই সম্পর্কের ইতি ঘটে? গুলতেকিন খানই কেবল বোঝেন যে, তিনি আসলে মৃত হুমায়ূনের অনেক নেতিবাচক ক্রিয়াকেই এখনও টেনে বেড়াচ্ছেন বা বেড়াতে হচ্ছে অথবা বলা ভালো যে, তাকে বাধ্য করছে এই সমাজ, এই রাষ্ট্র এবং যারা আজ তাকে সাক্ষাতকারের জন্য সমালোচনা করছেন, তারাও।

আর সবচেয়ে বড় কথা হলো, যে বিস্মৃতির বোঝা গুলতেকিন খান হুমায়ূন আহমেদকে নিয়ে বয়ে বেড়াচ্ছেন, তার কী হবে? না, তা প্রকাশও করা যাবে না।

শুরুতেই বলেছিলাম যে, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম চালু না হলে বোঝা যেতো না যে, বাঙালি মানস আসলে কতোটা ভয়ঙ্কর হতে পারে। এর আগেও যে এই ভয়ঙ্করতার প্রকাশ জানা যায়নি তা নয়, তবে এখন সেটা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের হাতে স্ট্যাম্পটড্ হচ্ছে আর কি।

যাহোক, সেদিন এক পরিচিত গণমাধ্যম কর্মীকে লিখতে দেখলাম যে, দিনভর বিভিন্ন নারীবাদী পোর্টাল যেভাবে পুরুষদের গালাগাল করে, সেরকমটা নাকি সারা পৃথিবীর পুরুষরা মিলেও নারীদের করে না কিংবা অন্যকথায়, নারীরা নাকি এখন সত্যিই অনেক শক্তিশালী। ভদ্রলোকের কথা সত্য, মানে তার মতো পুরুষের চেয়ে তো নারী শক্তিশালী বটেই। ভদ্রলোকের খুব অসুবিধে, কেন নারীরা এতো পুরুষবিদ্বেষী কথা বলে, তাহলে আর শান্তি আসবে কী করে? আহারে, খুব কষ্টের কিন্তু ব্যাপারটা!

ভদ্রলোকের স্ট্যাটাসেই এক নারী মন্তব্য করেছেন, আপনার বাসার নারীটিকে আপনি কষ্ট দেয়া বন্ধ করেন, দেখবেন অন্ততঃ আপনার বাসার নারীটি কোনো পোর্টালে আর পুরুষ-বিদ্বেষী কথা লিখবে না। বুঝতে অসুবিধে হয় না যে, এই ভদ্রমহিলা কী বোঝাতে চেয়েছেন, ঘরে ঘরে যদি নারীদের নির্যাতন আর কষ্ট দেয়া বন্ধ হয়ে যায়, তাহলে আর পোর্টালগুলিতে লেখার কিছুই থাকবে না। সত্যিই তো, গুলতেকিন খানের বলার মতো অনেক কথা আছে বলেই তিনি এখনও বলছেন, এবং ভবিষ্যতেও বলবেন বলে আশা করি।

হুমায়ূন আহমেদ বেঁচে নাই বলেই তার স্মৃতিচারণ করা যাবে না, এমন তো কোনো কথা নেই, সব স্মৃতিই যে সুখকর তাও তো আর নয়? যদি আয়োজন-অনুষ্ঠান করে হুমায়ূন আহমেদ সম্পর্কে প্রশংসাবাক্যের তুবড়ি ছোটানো যায়, তাহলে কেন গুলতেকিন খান একটা সাক্ষাতকারে হুমায়ূন আহমেদকে ঘিরে তার বিস্মৃতির কথা বলতে পারবেন না, বলুনতো?

ঢাকা ২৩ জুলাই, শনিবার ২০১৬

[email protected]

 

শেয়ার করুন:

খুব ভাল লাগল। সব স্মৃতি কারও সুখকর নয়। তাই বলে কি স্মৃতি নয়?
যার যার ব্যক্তিগত মত সে তার মত করে দিবে, মানুষের এত মাথা ব্যাথা কেন বুঝিনা।
অপি করিমের বিষয়ে সবচেয়ে খারাপ লেগেছে কার কয় নম্বর বিয়ে তা নিয়ে বাড়াবাড়ি,আরে বাবা মনে চাইলে নিজেও করে ফেল।
আমার মনে হয় তসলিমা নাসরিনকে যদি আমি প্রশ্ন করতে পারতাম যে, কার উপর অভিমান করে নিজেকে শেষ করলেন? নিশ্চই কোন পুরুষের নামই আসবে ওনার মুখ থেকে।
কারও সমালোচনা না করে আমরা অনুভব করার চেষ্টা করতে পারি নিজের এবং আশেপাশের বাস্তবতা থেকে

মানুষের চিন্তা ভাবনা আমি কোন দিনই বুঝতে পারলাম না। যখন এই সাক্ষাৎকার প্রকাশ হলো তখন আমি ভেবে ছিলাম এবার অন্তত কিছু মানুষের মোহ ভাঙবে।মানুষ বুঝবে একজন নারী কি পরিস্থিতি দিয়ে যায় এমন সংসার জীবনে। কিন্তু বাংলার বুকে যে মানুষ বাস করে তাদের আমি বোধহয় এই জীবনে বোঝা হবে না। বহু ফেসবুক সেলিব্রেটি কে দেখি গুলতেকিন খান কেই উল্টো কাঠগড়ায় দাঁড় করাচ্ছে কেন সে মৃত মানুষ নিয়ে এত দিন পরে কথা বলছে!!! আমার কাছে সব সময়ই গুলতেকিন খান কে হিরো মনে হয়েছে। যে সাহস, যে মনোবল নিয়ে তার সন্তানদের পাসে থেকেছেন,নিজে মাথা উচু করে চলেছেন তা এক কথায় অনবধ্য।

হুমায়ুন বেঁচে নেই তাকে নিয়ে লিখে কি লাভ??

হুমায়ুনের গুণগ্রাহীরা যখন দিনের পর দিন হুমায়ুনের অতিরঞ্জিত প্রশংসা করে আকাশ ছিদ্র করে ফেলে তখন কিন্তু কেউ তার সত্যতা যাচাই করে না, তোলে না উপরের প্রশ্নটাও !!

Copy Protected by Chetan's WP-Copyprotect.