উইমেন চ্যাপ্টার: এইদেশে মনে হয় এখন সব সম্ভব! দৈনিক সমকাল পত্রিকার খবর অনুযায়ী, আমতলী উপজেলার আমড়াগাছিয়ায় সাইক্লোন শেল্টারের রাস্তায় নারীদের চলাচল নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে স্থানীয় একটি খানকা শরিফ। কোনো নারী ওই রাস্তা দিয়ে যেতে চাইলে তাকে নানাভাবে হেনস্তা ও গালাগাল করা হয়। এ নিয়ে এলাকায় ক্ষোভ দেখা দিয়েছে। দুর্যোগের সময় নারীরা কী করবেন,এমন প্রশ্নও উঠেছে। স্থানীয় জনপ্রতিনিধিসহ অধিকারকর্মীরা দ্রুত রাস্তাটি সবার জন্য উন্মুক্ত করার ব্যবস্থা নিতে প্রশাসনের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
খবরটি সামাজিক মাধ্যমে আসার পর তা নিয়ে সমালোচনা শুরু হয়েছে। ব্লগার আযম খান লিখেছেন, “বাংলাদেশের নারীদের দোজখের ভয় দেখিয়ে ফুঁসলিয়ে প্রথমে বোরখাতে ঢুকিয়েছিল ইসলামিস্ট বুরবাকেরা। কালক্রমে এইটা এখন সোশাল স্ট্যাটাসের বস্তু। তাই অনেকে বড় জেলে না ঢুকে ছোট জেলে ঢুকেছে। হিজাব পরেছে। বড় জেল, ছোট জেলে অভ্যস্ত করানোর পরে এখন ফতোয়া এসেছে রাস্তা দিয়ে হাঁটা যাবে না। কাউকে রাস্তায় হাঁটতে দেখলেও ধর্ম ব্যবসায়ীদের কাম জেগে উঠে। আরে বুরবাকের দল, তোদের চোখে পর্দা দে, পট্টি লাগা”।
জানা গেছে, আমড়াগাছিয়া গ্রামে ২০১৪ সালে ছালেহিয়া খানকা শরিফের কমপ্লেক্সের ভেতর কোস্টাল ক্লাইমেট চেঞ্জ রিজিলিয়েন্স ইনফ্রাস্ট্রাকচার প্রজেক্টের (সিসিআরআইপি) মাধ্যমে এলজিইডির অর্থায়নে তিন কোটি ৮৫ লাখ টাকা ব্যয়ে দ্বিতল একটি সাইক্লোন শেল্টার ভবন নির্মাণ করা হয়। শেল্টারে যাতায়াতের জন্য ভবনটির দক্ষিণ পাশ দিয়ে ১ দশমিক ৭৫ কিলোমিটার বাইপাস রাস্তাও করা হয়। এটি খানকার মূল ফটক দিয়ে আমতলী-পটুয়াখালী মহাসড়কের সঙ্গে মিলিত হয়েছে। সম্প্রতি ওই রাস্তা দিয়ে নারীদের চলাচল নিষিদ্ধ করে সাইনবোর্ড টানিয়েছে খানকা কর্তৃপক্ষ। তাতে লেখা, ‘এই সড়ক দিয়ে মহিলাদের চলাচল সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ’।
কুকুয়া ইউপি চেয়ারম্যান বোরহান উদ্দিন আহম্মেদ মাসুম তালুকদার বলেন, এ ধরনের অভিযোগ পেয়েছি। রাস্তাটি সবার জন্য খুলে দিতে আমি খানকা কর্তৃপক্ষের কাছে আহ্বান জানাই। কুকুয়া ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক ইউপি সদস্য ও ওয়ার্ড দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির সাবেক সভাপতি মো. সাঈদুর রহমান সোহাগ জানান, জনস্বার্থে ভবন এবং সড়ক সবসময় উন্মুক্ত রাখতে সম্মতি দিয়ে জমি দিয়েছিল খানকা কর্তৃপক্ষ। এখন কেন তারা সরকারি টাকায় নির্মিত সড়কে নারীদের চলাচলে বাধা দিচ্ছে এটা বোধগম্য নয়। সূত্র: দৈনিক সমকাল